ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সদস্য সংগ্রহের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে পরগাছামুক্ত করতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:২১, ২০ মে ২০১৭

সদস্য সংগ্রহের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে পরগাছামুক্ত করতে হবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পুরোদমে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু জানিয়ে বলেছেন, সমালোচকরাই আমার বড় বন্ধু। আর যারা বন্দনা বা চাটুকারী-মোসাহেবী করে তারাই হচ্ছে আমার বড় শত্রু। কারণ, চাটুকার মোসাহেবদের চেয়ে বড় শত্রু আর কেউ নেই। বিএনপিই সমঝোতার দুয়ার বন্ধ করে দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সর্বশেষ খালেদা জিয়ার বাড়ির দরজা বন্ধ করার মাধ্যমে মির্জা ফখরুল সাহেবরাই সমঝোতার দুয়ার বন্ধ করে দিয়েছেন। সমঝোতা আমরা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বিএনপি সে পথ বন্ধ করে দিয়েছে। তাই বিএনপিকে বলব- সামনে নির্বাচন হবে আসুন। কিন্তু আপনাদের আমরা টেনে আনব না। এটা আপনাদের অধিকার। যদি মনে করেন, এদেশে রাজনীতি করবেন তবে নির্বাচনে অংশ নিন। শুক্রবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত সংবাদচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে যুবলীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। বিএনপির ভিশনের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন তারা ভিশন বানাতে পারে, কিন্তু লেটেস্ট টেকনোলজি মানে না, ডিজিটাল মানে না। ইভিএম হচ্ছে লেটেস্ট টেকনোলজি। ডিজিটাল পদ্ধতি। আমার প্রশ্ন- ভিশন থেকে কি ডিজিটাল আলাদা? তারা ইভিএম মানে না কিন্তু ভিশন মানে। এটাও তো এক স্ববিরোধিতা। তিনি বলেন, এদেশে অনেকে ক্ষমতায় আসেন ক্ষমতাকে ভালবেসে। অনেকে ধন-সম্পদের স্ফীতির জন্য ক্ষমতায় থাকেন। ক্ষমতাকে ধরে রাখেন। কিন্তু শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমতা হচ্ছে মানুষের জন্য, মানুষকে ভালবাসার জন্য। আওয়ামী লীগের সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানে যুবলীগের সহযোগিতা কামনা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, আগামীকাল (শনিবার) আমাদের নেত্রী সদস্য সংগ্রহের উদ্বোধন করবেন। এই সদস্য সংগ্রহ অভিযানে যাতে নিজেদের দল ভারি করার জন্য আগাছা-পরগাছা দলে ঢুকতে না পারে, এ ব্যাপারেও সকলের সহযোগিতা চাইছি। আমরা এই সদস্য সংগ্রহ অভিযানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে পরগাছা মুক্ত করতে চাই। ক্ষমতাসীন দলে অনেক সময় প্যারাসাইট ঢুকে পড়ে। এবার আমাদের সদস্য নবায়ন করতে গিয়ে ও নতুন সদস্য দিতে গিয়ে অনেক অনুপ্রবেশকারীকে ঠেকানোর একটা লক্ষ্য আছে। আমরা সেটা ইনশাল্লাহ বাস্তবায়ন করব। বিএনপির ৫৯৬ সদস্যবিশিষ্ট ঢাউস কমিটি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির এই বিশাল কমিটির আজ পর্যন্ত মিটিং হয়নি। এত জনের একটা কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মিটিং কোথায় হবে? এটা তো প্রশ্ন? অবশ্য তাদের মিটিং করার কোন গরজও নেই। কারণ, তারা এসব নিয়ে ভাবে না। আসলে যারা (বিএনপি) নিজেদের দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র চর্চা করে না তারা দেশে গণতন্ত্র কিভাবে প্রতিষ্ঠা করবে? তাদের গঠনতন্ত্রে কিন্তু ৫৯৬ জন নেই। যা বিএনপির নিজেদেরই গঠনতন্ত্রের স্ববিরোধী। কর্মসূচী দিয়ে কিছু মন্ত্রীর অনুপস্থিতির সমালোচনা করে ওয়ায়দুল কাদের বলেন, আমাদের দেশের মন্ত্রীরা তো আসার সঙ্গে সঙ্গে চলে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। প্রোগ্রাম দেন, কিন্তু তা শেষ হওয়ার আগেই রাষ্ট্রীয় কাজের ব্যস্ততা দেখিয়ে চলে যাব, এটি কেমন কথা? যারা বেশি রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত তাদের প্রোগ্রাম নেয়ার তো দরকার নেই। প্রোগ্রাম দিলে সেখানে আসতে হবে, নিয়ম অনুযায়ী প্রোগাম শেষ করতে হবে। যেসব এমপি-মন্ত্রী দলীয় অনুষ্ঠানে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসেন না, আগামীতে সেসব নেতাকে অনুষ্ঠানে দাওয়াত না দিতে যুবলীগকে পরামর্শও দেন তিনি। যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদ হারুনুর রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী, ফারুক হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন প্রমুখ। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন ইকবাল মাহমুদ বাবলু। তথ্য ও গবেষণা বিভাগ এবং দফতর বিভাগের সভা কাল ॥ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিভাগের এক সভা আগামীকাল রবিবার বিকেল ৩টায় ধানম-ির দলীয় সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সারাদেশ থেকে আগত প্রতিটি জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদকগণ উপস্থিত থাকবেন। একই দিন সকাল ১০টায় প্রিয়াংকা কমিউনিটি সেন্টারে (ধানম-ি ৩/এ, ঢাকা) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর বিভাগের এক সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সারাদেশ থেকে আগত প্রতিটি জেলা আওয়ামী লীগের দফতর ও উপদফতর সম্পাদকগণ উপস্থিত থাকবেন। দুটি সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
×