ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হেরেই গেল মাশরাফির দল

প্রকাশিত: ০৮:৪০, ১৮ মে ২০১৭

হেরেই গেল মাশরাফির দল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়ালটন তিনজাতি ক্রিকেট সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মজবুত ভিতই গড়েছে বাংলাদেশ। সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের হাফসেঞ্চুরির সঙ্গে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ৪১ রানে এ ভিত গড়েছে বাংলাদেশ। ৯ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২৫৭ রান করে। কিন্তু জয়ের জন্য এ রান যে যথেষ্ঠ ছিল না। শেষ পর্যন্ত সেটিই প্রমাণ করল নিউজিল্যান্ড। ৪৭.৩ ওভার খেলে কিউইরা জিতল ৪ উইকেটে। হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হল মাশরাফি বিন মুর্তজাদের। টস জিতে নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশকে আগে ব্যাট করতে পাঠায়। সুযোগটি কাজে লাগিয়ে ৯ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২৫৭ রান করে মাশরাফিবাহিনী। ডাবলিনের ক্লোনটার্ফ ক্রিকেট ক্লাব গ্রাউন্ডে সৌম্য সরকার (৬১), মুশফিকুর রহীম (৫৫) ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (৫১) দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শুরুতে বিপাকে পড়েছিল বাংলাদেশ। ৪৭ রানে তিন উইকেট ও ৭০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসেছিল। সেই বিপাক থেকে দলকে মুক্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি আসাতে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শুরুতে বিপাকে পড়েনি বাংলাদেশ। দুই ওপেনার তামিম ও সৌম্য মিলে দলকে ৭২ রানে নিয়ে যান। এমন সময়ে তামিম (২৩) আউট হয়ে যান। সাব্বির রহমান রুম্মন আবারও ব্যর্থ হন। প্রথম ম্যাচে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরেন। কিউইদের বিপক্ষে মাত্র ১ রান করতে পারেন। ৭ রান স্কোরবোর্ডে যোগ হতেই আউট হয়ে যান সাব্বির। কিছুটা বিপাকে পড়ে দল। এই বিপদ অবশ্য সাময়িকভাবে দূর করে দেন সৌম্য ও মুশফিকুর রহীম। দুইজন মিলে দলকেও এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। দুইজন মিলে দলকে শত রানে নিয়ে যান। ১১৭ রানে যখন দল যায়, এমন সময় গিয়ে আরেকটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এবার সৌম্য আউট হন। দুর্দান্ত খেলছিলেন। প্রথম ম্যাচে কিছু করতে না পারলেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দলকে দারুণ নৈপুণ্য উপহার দেন। ৬৭ বলে ৫ চারে ৬১ রান করেন। সৌম্য আউটের পর ব্যাট হাতে নামেন সাকিব আল হাসান। মনে করা হয়েছিল প্রথম ম্যাচে না পারলেও এবার কিছু করে দেখাবেন। কিন্তু এবারও ব্যর্থ হন সাকিব (৬)। ১৩২ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিপত্তিতে পড়ে যায় বাংলাদেশ। খুব বেশি রান কী স্কোরকার্ডে যোগ করা সম্ভব হবে? সেই প্রশ্নও উঠে যায়। কিন্তু মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ মিলে ধারণা পাল্টে দেন। দুইজন মিলে হাল ধরেন। একদিকে মুশফিক এগিয়ে যেতে থাকেন। আরেকদিকে মাহমুদুল্লাহ উইকেট আঁকড়ে থাকেন। দুইজন মিলে দলকে দুই শ’ রানের কাছাকাছি নিয়ে যান। ১৮১ রান হতেই মুশফিক (৫৫) আউট হয়ে যান। ৩৭ ওভারে ১৮১ রান করে বাংলাদেশ। মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ মিলে স্কোরবোর্ড মজবুত করেন। ৩৮তম ওভারের প্রথম বলে গিয়ে মুশফিক আউট হন। এরপর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ব্যাট হাতে নেমে মাহমুদুল্লাহকে সঙ্গ দিতে থাকেন। দ্রুত রান তুলতে থাকেন মোসাদ্দেক। আরেকদিকে মাহমুদুল্লাহ ধীরে ধীরে এগিয়ে যান। হাফসেঞ্চুরিও করে ফেলেন মাহমুদুল্লাহ। ৫১ রান হতেই দলের ২৪২ রানের সময় আউট হন মাহমুদুল্লাহ। ২৫৩ রানে মোসাদ্দেকও (৪১) সাজঘরে ফেরেন। দুইজন মিলে দলকে শেষ মুহূর্তে ভরসা দেন। তাইতো দলের স্কোর আড়াই শ’ রানে পৌঁছায়। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ৫০ ওভারে ২৫৭ রান করে। মেহেদী হাসান মিরাজ (৬) ও মাশরাফি বিন মর্তুজা (১) শেষে আউট হন। রুবেল হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমান অপরাজিত থাকেন। তাতে নিউজিল্যান্ড কোচ মাইক হেসনের ধারণা হয় স্পিন দিয়েই দলগুলোকে বধ করতে হবে। যেহেতু উইকেটে স্পিন ধরছে। তাই হেসন বলেছিলেনও, ‘আমাদের এমন কিছু বোলার দরকার যারা প্রথম ১০ ওভারে দ্রুত উইকেট তুলে নিতে পারবে। সেক্ষেত্রে জিতান প্যাটেল আমাদের জন্য কাজটি করবে। আমরা আসলে খানিকটা বৃত্তের বাইরে থেকে চিন্তা করছি। দলে এমন কিছু ক্রিকেটার আছে যারা বেশ বিধ্বংসী। উইকেটে সুইং না থাকলেও তারা দ্রুত উইকেট নেয়ার যোগ্যতা রাখে। স্পিন নিয়ে আমরা বেশ আশাবাদী।’ সেই স্পিনেই বাংলাদেশ যেন একটু পিছিয়ে পড়ল। স্পিনার ইস সোধি ২টি ও স্যান্টনার ১টি উইকেট নেন। পেসার হামিশ বেনেট শেষ মুহূর্তে গিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন।
×