ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নিউজিল্যান্ডের ৪ উইকেটে জয়

বাংলাদেশ লড়াই করে হারল

প্রকাশিত: ০৭:২৮, ১৮ মে ২০১৭

বাংলাদেশ লড়াই করে হারল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ না এবারও বৃত্তপূরণ হলো না। বিদেশের মাটিতে টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই জয় নেই। আয়ারল্যান্ডে চলমান ত্রিদেশীয় সিরিজে বুধবার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ৯ উইকেটে ২৫৭ রানের পুঁজি নিয়েও টাইগাররা স্বপ্ন দেখছিল। কারণ নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বড় অনুপ্রেরণা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার ফেরা, বল হাতে শুরুতেই দুর্দান্ত কাটার-মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। কিন্তু হলো না। হলো না ব্যাটিংয়ে মধ্যম মানের সংগ্রহ আর মুস্তাফিজ (২/৩৩) ছাড়া বাকিদের সাদামাটা বোলিংয়ের কারণে। বাংলাদেশ হারল ৪ উইকেটে। ৪৭.৩ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে গেল নিউজিল্যান্ড। কিউইদের হয়ে চমৎকার ব্যাটিং উপহার দেন টম লাথাম (৬৪ বলে ৫৪), জিমি নিশাম (৪৮ বলে ৫২) ও নেইল ব্রুম (৬৫ বলে ৪৮)। এর আগে বিরূপ কন্ডিশনে তামিম ইকবাল ও সৌম সরকারের ওপেনিং জুটির শুরুটা ছিল সাবধানী। প্রথম ৫ ওভারে আসে মাত্র ২৩ রান। সেট হওয়ার পর অবশ্য রানের গতি বাড়াতে থাকেন এই দুজন। ১১তম ওভারে ৫০ পার করে বাংলাদেশ। স্কোরটা যখন আরও বেশি হৃষ্টপুষ্ট হচ্ছিল ঠিক তখনই ধৈর্য হারিয়ে বসেন তামিম। দলীয় ৭২ রানে নিশামের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে কলিন মুনরোর তালুবন্দী হন তিনি। ৪২ বলে ৩ চারের সাহায্যে ২৩ রান করেন তারকা ওপেনার। অপরপ্রান্তে অবশ্য কিউই বোলারদের হতাশ করে এগিযে যান সৌম্য। ৫৩ বলে ৪ চারে অর্ধশতক পূর্ণ করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। তার আগে তামিমের বিদায়ের পরপরই মাত্র ১ রান করে স্পিনার মিচেল স্যান্টনারের বলে ক্লিন বোল্ড হয়ে ফিরে আসেন সাব্বির রহমান। এরপর সৌম্য ও মুশফিকের ব্যাটে সেই চাপটা কাটিয়ে ওঠতে থাকে বাংলাদেশ। তবে দলীয় ১১৭ রানে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন সৌম্য। ৬৭ বলে ৫ চারের সাহায্যে ৬১ রান করে ইশ সোধির বলে টম ল্যাথামের ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন সৌম্য। কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। বিপদটা আরও বাড়িয়ে তোলেন সাকিব আল হাসান। সোধির দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হওয়ার আগে মাত্র ৬ রান করেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার। ১৩২ রানে ৪ উইকেট হারানো টাইগারদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বটা তুলে নেন মুশফিক। সঙ্গী এবার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এই জুটিতে ক্যারিয়ারের ২৪তম হাফ সেঞ্চুরিটা তুলে নেন মুশি। অন্যদিকে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এদিনও তার ফর্মটা ধরে রাখেন। হাফ সেঞ্চুরির পর আর বেশিদূর এগোতে পারেননি মুশি। নিশামের বলে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়ে ফিরে আসেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৬৬ বলে করেন ৫৫ রান। মুশফিকের বিদায়ের পর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে নিয়ে স্কোরের চাকা সচল রাখেন মাহমুদুল্লাহ। ক্রিজে নেমে শুরু থেকেই দারুণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ব্যাটিং করেন মোসাদ্দেক। মাহমুদউল্লাহ দেখেশুনে খেললেও তরুণ ব্যাটসম্যান নিজের সুনাম ধরে রেখেই খেলতে থাকেন। এই জুটিতে আসে মূল্যবান ৬১ রান। মাহমুদউল্লাহ ৬ চারের সাহায্যে ব্যক্তিগত ৫৬ বলে ৫১ রান করে ফিরে যান। মোসাদ্দেক ৪১ বলে ৪১। এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে অধিনায়ক মাশরাফি ফেরায় এদিন বাদ পড়েন তাসকিন আহমেদ। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে নর্দাম্পটনে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়টি ছিল বিদেশের মাটিতে কোন টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয়। এরপর গত ১৮ বছরে টেস্ট খেলা প্রায় সব দেশের বিপক্ষেই বিদেশে জিতেছে টাইগাররা। একে একে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে হয় নিরপেক্ষ ভেন্যু, নয়তো প্রতিপক্ষের মাঠে। বিদেশে স্বাদটা পাওয়া হয়নি কেবল এই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। কিউদের বিপক্ষে এখনো পর্যন্ত ৮ জয়ের সব কটিই নিজেদের মাটিতে। স্কোর ॥ বাংলাদেশ ইনিংস ২৫৭/৯ (৫০ ওভার; তামিম ২৩, সৌম্য ৬১, সাব্বির ১, মুশফিক ৫৫, সাকিব ৬, মাহমুদউল্লাহ ৫১, মোসাদ্দেক ৪১, মিরাজ ৬, মাশরাফি ১, রুবেল ০*, মুস্তাফিজ ০*; রান্স ০/৬৬, বেনেট ৩/৩১, স্যান্টনার ১/৩৭, নিশাম ২/৬৮, সোধি ২/৪০, মুনরো ০/১৪) নিউজিল্যান্ড ইনিংস ২৫৮/৬ (৪৭.৩ ওভার; লাথাম ৫৪, রনকি ২৭, ওয়ার্কার ১৭, রস টেইলর ২৫, ব্রুম ৪৮, নিশাম ৫২, মুনরো ১৬*; মুস্তাফিজ ২/৩৩, রুবেল ২/৫৩, মাশরাফি ১/৫৮, সাকিব ০/৫০, মিরাজ ০/৪৫) ফল ॥ নিউজিল্যান্ড ৪ উইকেটে জয়ী ম্যাচসেরা ॥ জিমি নিশাম (নিউজিল্যান্ড)
×