ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১৮ মে ২০১৭

আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস আজ বৃহস্পতিবার। ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব মিউজিয়ামসের (আইসিওএম) আহ্বানে ১৯৭৭ সাল থেকে পৃথিবীব্যাপী পালিত হচ্ছে এ দিবসটি। আন্তর্জাতিকভাবে এ দিবসটি পালনের বেশিদিন না হলেও জাদুঘরের ইতিহাস অনেক প্রাচীন। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও নানা আঙ্গিকে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। এবার এ দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘জাদুঘর ও ইতিহাস-বিবাদ : না-বলা কথা বলে জাদুঘর’। দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নিজস্ব মিলনায়তনে বিশেষ আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বুধবার বিকেলে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্ত হতে পেরে ইতিহাসের একটি জায়গায় স্থান করে নিলাম, এটা আমার জন্য গর্বের এবং বড় এক পাওয়া। এবার আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবসের প্রতিপাদ্য ‘জাদুঘর ও ইতিহাস-বিবাদ : না-বলা কথা বলে জাদুঘর’ সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রথমেই ইতিহাস কি এবং কেন এটা জানা জরুরী। আমার মতে ইতিহাস হচ্ছে অতীতের প্রেক্ষাপটে বর্তমানকে অনুধাবন। সঠিক উপজীব্যের কারণে ইতিহাস অপরিবর্তিত থেকে গেছে। ইতিহাসের ভ্রিগু ভগবান সত্য। তথ্যের হেরফের হলে ইতিহাসের হেরফের হয়। ইতিহাসের তথ্য যাচাই-বাছাই করেই তাকে স্থায়ী রূপ দেয়া সম্ভব। এটা রবীন্দ্রনাথের ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্য সুন্দর’ গানের মতোই। জাদুঘর সম্পর্কে বলা যায়, জাদুঘরের যা কিছুই সংগ্রহ তার সব কিছুই ইতিহাসের তথ্য-উপাত্ত। জাদুঘর ইতিহাসের অতন্ত্র প্রহরী। জাদুঘর ইতিহাস তৈরি করে না, ইতিহাসের যোগানদার মাত্র। ইতিহাস-ইতিহাসই। রাজনীতির কারণে সরকার বদল হলে, ইতিহাসেরও বদল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিবাদের কারণে ইতিহাসের যে সত্য আড়াল হয়, জাদুঘর তা রক্ষণ করে। ইতিহাসের না বলা তথ্যগুলো জাদুঘর নীরবে বলতে পারে। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ট্রাস্টি রবিউল হুসাইন। তিনি বলেন, আজ এক ঐতিহাসিক ক্ষণ। ১৯৯৬ সালে সেগুনবাগিচায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের যে যাত্রা শুরু হয়, নতুন ভবন মিলনায়তনে এসে তার প্রথম অনুষ্ঠান আজ। ঐতিহাসিক ক্ষণের সঙ্গে যুক্ত হতে পারার আলাদা একটা শিহরণ আছে। আজ সে শিহরণই অনুভব করছি আমার যারা এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হতে পেরেছি। সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এ জাদুঘর এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। আগামী প্রজন্ম যেন স্বাধীনতা যুদ্ধকে না ভোলে। এখনকার মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে কূপম-ূকতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ। আমরা নতুন প্রজন্মকে সচেতন ভাবে গড়ে তুলব। তারা যেন বিপথগামী না হয়। তার যেন সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। আলোচনার পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এ পর্বের শুরুতে ‘স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের যেভাবে শুরু হলো’ শিরোনামের নিরীক্ষাধর্মী আবৃত্তি প্রযোজনা পরিবেশন করে মিথস্ক্রিয়া আবৃত্তি পরিসর। প্রযোজনাটির গ্রন্থনা, নির্দেশনা ও আবহসঙ্গীতে ছিলেন অনিন্দ্য মাহাদি। এরপর সম্মেলক সঙ্গীত পরিবেশন করে সাংস্কৃতিক সংগঠন বধ্যভূমির সন্তানদলের শিল্পীরা। তাদের পরিবেশনায় ছিল পরপর চারটি গান। এগুলো হচ্ছে-ধনধান্য পুষ্প ভরা, পলাশ ঢাকা কোকিল ডাকা, ত্রিশ লক্ষ জীবন দিয়া ও আমরা করব জয়’। কাজী নজরুলের বইয়ের মেলা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী কাজী নজরুল ইসলামের বই ও তাঁকে নিয়ে রচিত বই দিয়ে সাজানো কক্ষ। বইয়ের পাশাপাশি রয়েছে তাঁকে নিয়ে প্রকাশিত জার্নাল, লিটলম্যাগ ও সিডি। দেয়ালে ঝুলছে কবির নানা সময়ের গুরুত্বপূর্ণ আলোকচিত্র। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গ্রন্থ নিয়ে রাজধানীতে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে দশ দিনব্যাপী বই মেলা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী। নজরুল ইনস্টিটিউট ও গণগ্রন্থাগার অধিদফতরের যৌথ আয়োজনে এই বইয়ের মেলা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৮তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এই আয়োজন। রাজধানীর কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরীর সেমিনার কক্ষে বিকেলে এ মেলা ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়। ফিতা কেটে বইয়ের মেলা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন নজরুল ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। উদীচীর হাফ আখড়াই মঞ্চস্থ মঞ্চস্থ হলো উদীচীর নাটক ‘হাফ আখড়াই’। বুধবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার হলে উদীচীর ৫৬তম এই প্রযোজনাটি মঞ্চায়ন হয়। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. ৬ রতন সিদ্দিকীর রচনা ও আজাদ আবুল কালামের পরিচালনায় নাটকটিতে অভিনয় করেছেন উদীচী কেন্দ্রীয় নাটক বিভাগের শিল্পীরা। শেখ নজরুলের বই ও গানের সিডির প্রকাশনা অনুষ্ঠান লেখক, কবি, গীতিকার শেখ নজরুলের তিনটি বই ও গানের তিনটি সিডির প্রকাশনানুষ্ঠান হয় এলজিইডি মিলনায়তনে বুধবার। এই আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। গানের এ্যালবামগুলো হলো চিকচিকে রোদ্দুর, ফুলের গন্ধে নাইয়ো ও পতাকা আমার মায়ের আচল। সংস্কৃতিমন্ত্রী এ্যালবামগুলোর মোড়ক উন্মোচন করেন। এ্যালবাম তিনটিতে দেশাত্মবোধক, আধুনিক ও ঐতিহ্যনির্ভর ৩০টি গান স্থান পেয়েছে। গানগুলো লিখেছেন শেখ নজরুল এবং সুরারোপ করেছেন শোয়েব শিবলী। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এ সময়ের প্রতিশ্রুতিশীল একঝাক শিল্পী। তারা হলেন নিশিতা বড়ুয়া, রাজীব, বিন্দিয়া খান, পলাশ লোহ, মুনিয়া মুন, অভি আকাশ, জিকো, লিসা, মলয়, জালাল, আতা পাশা প্রমুখ।
×