ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

‘শেখ হাসিনা এসেছিলেন বলেই দেশে আজ গণতন্ত্র’

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৮ মে ২০১৭

‘শেখ হাসিনা এসেছিলেন বলেই দেশে আজ গণতন্ত্র’

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হচ্ছেন আলোর দিশারি। তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন বলেই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর তিনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসেন বলেই দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, একাত্তরের ঘাতকদের বিচার ও দ- কার্যকর হয়েছে। বাংলাদেশ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এখনও ষড়যন্ত্র চলছে। তবে নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে আওয়ামী লীগকে কেউ পরাজিত করতে অতীতেও পারেনি, আগামীতেও পারবে না।’ বুধবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। দলটির সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেনÑ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিম-লীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সভাপতিম-লীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক, দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, শিক্ষাবিদ মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদ, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আক্তার পপি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান ও দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশকে আরও এগিয়ে নিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা দেশে না আসলে যুদ্ধাপরাধীর বিচার হতো না। শেখ হাসিনা ফিরেছেন বলেই ছিটমহল সমস্যার সমাধান হয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু হচ্ছে। ফোরলেন, কর্ণফুলী ট্যানেল নির্মাণ হচ্ছে। তিনি সুপরিকল্পনা নিয়ে রাজনীতি করেন বলেই আজকে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। তিনি বলেন, আগামী ২০২১ সালের আগেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। বিএনপির ভিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, জাতির সামনে রূপকল্প তুলে ধরার আগে অতীত কৃতকর্মের জন্য বিএনপি নেত্রীর ক্ষমা চাওয়া উচিত চিল। তাদের ভিশনে এমন কিছু আছে যা নিজেরাই বিশ্বাস করেন না। আওয়ামী লীগের কাছ থেকে নকল করে নিয়েছেন ভিশন। তাদের ভিশন মানুষ হত্যা করার ভিশন। কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা হচ্ছেন উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রতীক। আলোর পথের যাত্রী। তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন বলে দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। সব ষড়যন্ত্রকে তুচ্ছ করে তিনি দেশকে সবদিক থেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, এগিয়ে নিয়ে যাবেন। কোন অপশক্তিই তা রুখতে পারবে না। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের ‘লিগ্যাসি’ উপাধি দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুর পলিটিক্যাল লিগ্যাসির মৃত্যু নেই। আর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা উন্নয়ন অগ্রযাত্রার লিগ্যাসি, যা বেঁচে থাকবে চিরদিন। বাংলাদেশে জঙ্গীবাদ নির্মূলে মুক্তিযুদ্ধের সকল শক্তিকে এক প্লাটফর্মে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ দেশ থেকে জঙ্গী এখনও নির্মূল হয়নি। এই সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে মোকাবেলা করতে হলে খ- খ-ভাবে প্রতিবাদ করলে চলবে না। মুক্তিযুদ্ধের সকল শক্তিকে এক মঞ্চে দাঁড়াতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এখনও ষড়যন্ত্র চলছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনাকে এখনও গ্রেনেড তারা করে। তবে ১৯৭৫ সাল, ২০০৪ সাল আর ২০১৭ সাল এক নয়। মনে রাখবেন শেখ হাসিনার কিছু হলে সারা বাংলায় আগুন জ্বলবে। আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হলে কেউ পরাজিত করতে পারবে না। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি আসবে। তাদের নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছুই নেই। বিরোধীদের নিয়ে বিচলিত হওয়ার কোন কারণ নেই। আগামী নির্বাচনে জনগণের ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে। আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের হাল ধরার জন্য শেখ হাসিনার অতীব প্রয়োজন ছিল জানিয়ে বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু পরিবারের ওপর নির্মম হত্যাকা-ের পর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছিল, তা কাটিয়ে ওঠার মতো ছিল না। ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের হাল ধরেছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার হাত ধরে আওয়ামী লীগ এগিয়ে যাচ্ছে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে আমি দেশবাসীকে অনুরোধ করছি শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়ান। তিনি দেশকে সোনার বাংলা গড়ে তুলবেন আশা করি। সভাপতির বক্তব্যে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র চলছে। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে কেউ পরাজিত করতে পারে না। নেতাকমীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সামান্য স্বার্থ নিয়ে পার্টির মধ্যে বিশৃঙ্খলা-বিদ্রোহ সৃষ্টি করবেন না। আওয়ামী লীগ জনগণের সংগঠন। মানুষের কল্যাণে আগামীতে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে হবে। এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন। মনে রাখবেন ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে কেউ পরাজিত করতে পারে না। বিএনপির সহায়ক সরকার প্রসঙ্গে শেখ সেলিম বলেন, কোন অনির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অধীনেই নির্বাচন হবে। আর শেখ হাসিনা দেশে ফিরে ছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীর বিচার করা হচ্ছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সবাইকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
×