ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে বিত্তশালী বাড়লেও কর দেয়ার মনোভাব তৈরি হয়নি

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ১৮ মে ২০১৭

দেশে বিত্তশালী বাড়লেও কর দেয়ার মনোভাব তৈরি হয়নি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশে বিত্তশালী বেড়েছে অনেক। কিন্তু তাদের মধ্যে কর দেয়ার মনোভাব এখনও তৈরি হয়নি। অন্যদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বৈধ আয় যারা করেন তাদের ওপর বেশি ফোকাস করে। অবৈধ আয়ধারীদের কাছে এনবিআর কম যায়। করদাতাদের মনে করতে হবে কর দিলে নিজেদেরই সম্মান বাড়ে। বুধবার এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে রাজস্ব সংলাপে দেশের শীর্ষ সাহিত্যিক ও অভিনয় শিল্পীদের বক্তব্যে এসব উঠে আসে। এনবিআরের আমন্ত্রণে দেশের লেখক-সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিসেবীরা অংশ নেন। প্রথমবারের মতো এমন আয়োজনে অনেকেই এনবিআরকে ধন্যবাদ জানান। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। রাজস্ব সংলাপে অংশ নেয়া অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, মূসক নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আমার কথা হলো, সরকার নতুন একটি পদক্ষেপ নেয়ার আগে সংসদে এ বিষয়ে কোন আলোচনা করেছিল কিনা। ভ্যাটের হার কত শতাংশ হবে তা সংসদে উত্থাপিত হয়েছে কিনা। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এ বিষয়টি জরুরী। তিনি বলেন, আমি যা দিচ্ছি তা কিভাবে ব্যয় হচ্ছে সেটা বড় বিষয়। করের বোঝা না বাড়িয়ে আওতা বাড়ানো দরকার। ৮ লাখ ৪০ হাজার নিবন্ধিত ব্যবসায়ীর মধ্যে ভ্যাট নিবন্ধন রয়েছে মাত্র ৩২ হাজার ব্যবসায়ীর। অর্থমন্ত্রীর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী ভ্যাট নিয়ে ‘চাপাচাপি’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। গণতান্ত্রিক দেশে অগণতান্ত্রিক কথাবার্তা বন্ধ করতে হবে। বাজেট বড় হলেই হয় না, বিষয় হচ্ছে বাজেট জনবান্ধব কিনা। রাস্তায় ঘুমানো মানুষের জন্য বাজেটে কিছু আছে কিনা? কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক বলেন, যারা বৈধ আয় করেন তাদের ওপর রাজস্ব বোর্ড বেশি ফোকাস করে থাকে। আর যারা অবৈধ আয় করে তাদের কাছে এনবিআর কম যায়। এদিকে এনবিআরের নজর দেয়া দরকার। করদাতাদের মনে করতে হবে কর দিলে আমাদেরই সম্মান বাড়ে। লেখকদেরও সেরা করদাতার পুরস্কারে অন্তর্ভুক্তের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, অভিনয় কিংবা সঙ্গীতশিল্পীর মতো লেখকদের জন্য সেরা করদাতা পুরস্কারের ক্যাটাগারি থাকা উচিত। পাঠ্যপুস্তকে করের বিষয় অন্তর্ভুক্তের বিষয়ে তিনি বলেন, পাঠ্যপুস্তকে কর বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা যায় কিনা এ বিষয়ে ভাবা উচিত। এটা সত্য যে, ধনীরাই সবচেয়ে বেশি কর ফাঁকি দেয়। এতে সন্দেহ নেই। তবে সরকারী অর্থ অপচয় করা যাবে না। এ সময়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে চেষ্টা চলছে। শিক্ষার্থীদের কর বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে ইতোমধ্যে কর শিক্ষণ ফোরাম গঠন করেছি। কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশে বিত্তশালী বেড়েছে অনেক। কিন্তু তাদের মধ্যে কর দেয়ার মনোভাব এখনও তৈরি হয়নি। আশার কথা হচ্ছে, এনবিআর আগের চেয়ে অনেক সক্রিয়। এনবিআর সম্পর্কে মানুষের ইতিবাচক ধারণা হচ্ছে। অনেক ভীতি কমেছে। এটা ধরে রাখতে হবে। তিনি বলেন, সোনা আমদানির বিষয়ে আইন হওয়া দরকার। এজন্য সবার সঙ্গে বসা উচিত। অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, করের আওতা বৃদ্ধি করতে ও রাজস্বের পরিমাণ বাড়াতে মাইন্ড সেটআপ পরিবর্তন করা দরকার।
×