ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আবুধাবীতে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী

বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি কর্মী নিয়োগ নিয়ে আলোচনা

প্রকাশিত: ০৭:৫৭, ১৭ মে ২০১৭

বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি কর্মী নিয়োগ নিয়ে আলোচনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবীতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির সঙ্গে দেশটির মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশনমন্ত্রী সাকর গোবাশ সাঈদ গোবাশের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। মঙ্গলবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়ার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে অধিক সংখ্যক কর্মী নেয়া ও কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলসহ সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বৈঠকের শুরুতে উভয় দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক, মুসলিমপ্রধান দেশ, একই ধর্মীয় মূল্যবোধের অনুভূতি ও পারস্পরিক অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা বজায় রাখার জন্য পরস্পর শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বৈঠকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত অভিবাসন ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে একযোগে কাজ করছে। উভয় দেশ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ফোরামসমূহে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে সুষ্ঠু ও নিরাপদ অভিবাসন ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের বিভিন্ন ইস্যুতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে। এতে কর্মীদের স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষা হচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশন মন্ত্রণালয় বিদেশী কর্মীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জারিকৃত সর্বশেষ ডিক্রিসমূহের উদ্যোগকে প্রশংসা করেন। প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে আরও অধিক সংখ্যক দক্ষ কর্মী নেয়ার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশন মন্ত্রীকে অনুরোধ জানান ও বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। বৈঠকে আরব আমিরাতের মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশনমন্ত্রী বলেন, সর্বশেষ জারিকৃত ডিক্রিসমূহ অন্যান্য বিদেশী কর্মীদের মতো বাংলাদেশী কর্মীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। কর্মীরা নিয়োগকর্তা কর্তৃক ভিসা প্রাপ্তির আগে বাধ্যতামূলকভাবে নিয়োগকৃত কর্মীর স্বাক্ষরসহ স্ট্যান্ডার্ড এমপ্লয়মেন্ট কন্ট্রাস্টের আওতায় তাদের সব সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৩ বছর বা তার চেয়ে সময় কর্মরত বাংলাদেশী কর্মীগণ তাদের নিয়োগ কর্তা পরিবর্তন এবং উভয় পক্ষ পারস্পরিক নির্ধারিত নোটিশ পিরিয়ডে নোটিশ প্রদান করে চুক্তিপত্র বাতিল করতে পারবে। কর্মীগণ তাদের সুবিধা ও পছন্দমতো কাজের সুযোগ পাবেন। মন্ত্রী বাংলাদেশী কর্মীদের ক্ষেত্রেও এসব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন। বাংলাদেশী কর্মীদের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা ও সে দেশে আরও কর্মী প্রেরণে বাংলাদেশের সক্ষমতার বিষয়ে তারা অত্যন্ত ইতিবাচক। এ বিষয়ে তাদের সক্রিয় বিবেচনা রয়েছে। অভ্যন্তরীণ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনাক্রমে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য শ্রমবাজার উন্মুক্তকরণ করা হবে। এ বিষয়ে তারা আন্তরিক। দ্রুতই উভয় দেশের মধ্যে জয়েন্ট টেকনিক্যাল কমিটির নির্ধারিত সভা ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা বলেন। নুরুল ইসলাম বিএসসির আমন্ত্রণে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশনমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে তার গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশনমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নে বাংলাদেশী কর্মীদের অবদানের প্রশংসা করেন। বাংলাদেশী কর্মীদের দক্ষতা, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। উল্লেখ্য, ১৯৭৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৩ লাখ অধিক কর্মীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ২৩ হাজারের বেশি নারী কর্মী দেশটিতে কর্মরত রয়েছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের শ্রমবাজার উন্মুক্তকরণের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ইতোমধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে।
×