ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পরিবারের ৬ সদস্য দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৭ মে ২০১৭

পরিবারের ৬ সদস্য দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর, ১৬ মে ॥ মিঠাপুকুর উপজেলার ভাংনি ইউনিয়নের ভাংনি আদর্শপাড়া গ্রামে একই পরিবারের তিন ভাই এক বোন ও ভাইয়ের ছেলেসহ ৬ জন দুরারোগ্য থ্যালাসামিয়াসহ অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত। ইতোমধ্যে এক ভাই মারা গেছে আর এক ভাই মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। অর্থের অভাবে তাদের চিকিৎসা এখন পুরোপুরি বন্ধ। ওই পরিবারের প্রধান, বেসরকারী স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বাবা তার সন্তানদের চিকিৎসা করতে গিয়ে শেষ সম্বল ৪ বিঘা জমি বিক্রি করে দিয়ে তাদের চিকিৎসা করিয়েছেন। এখন বাস্তুভিটা ছাড়া আর কোন অবলম্বন নেই। সহায়-সম্বলহীন পরিবারটি বাঁচতে চায়। তাদের চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তারা প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আকুল আবেদন জানিয়েছে। সরেজমিনে জানা যায়, একই পরিবারের সকলেই দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক মোলায়মান আলী একটি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। তার দুর্ভাগ্য স্কুলটি সরকারীকরণ না হওয়ায় তাকে বিনা বেতনে অবসরে যেতে হয়েছে। তারপরও তার ১০ বিঘার মতো জমি ছিল জমি চাষাবাদ করে মোটামুটি সুখেই চলছিল পরিবারটি। ১০ বছর আগে তার স্ত্রী সখিনা বেগম মারা যায়। এরপর বেশ কিছুদিন ধরে তার ৫ ছেলে ও এক মেয়ে দুরারোগ্য থ্যালাসামিয়া রোগে আক্রান্ত হয়। একজনের পর একজন এ রোগে আক্রান্ত হতে থাকে। এরই মধ্যে ১৫ বছর বয়সী ছেলে সাইফুল অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনেক চিকিৎসা করিয়েও তাকে বাঁচানো যায়নি। এখন তার দুই ছেলে রবিউল ইসলাম (৩০), শাহিন (২৫) একমাত্র মেয়ে তাসনিমা বেগম, বড় ছেলে শহিদুল ইসলামের ২ ছেলে আহাদুজ্জামান (১৩) ও আবু নাইম (৫) এরা সকলেই থ্যালাসামিয়া রোগে আক্রান্ত। এদের প্রত্যেককে ২ মাস পর পর কখনও বা এক মাস পর রক্ত দিতে হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন করতে হয়। গড়ে তাদের চিকিৎসার জন্য মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার প্রয়োজন। আগে জমিজমা যা ছিল সব বিক্রি করে তাদের চিকিৎসা করিয়েছেন। এখন শেষ সম্বল বাস্তুভিটা ছাড়া আর কিছুই নেই। ফলে অর্থের অভাবে সকলের চিকিৎসা প্রায় বন্ধ হয়েছে। এ বিষয়ে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ সিরাজুল ইসলাম জানান একটি পরিবারের সকলেই দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বিরল। তবে উন্নত চিকিৎসা করালে তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে।
×