ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নড়াইলে ধানকাটার শ্রমিক এখন সোনার হরিণ

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১৭ মে ২০১৭

নড়াইলে ধানকাটার শ্রমিক এখন সোনার হরিণ

রিফাত-বিন-ত্বহা, নড়াইল থেকে ॥ প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে নড়াইলে চলছে ধানকাটা উৎসব। তবে শ্রমিক সঙ্কট ও উচ্চমূল্যের কারণে কৃষকরা পড়েছে বিপাকে। ধানকাটার পাশাপাশি পাট নিড়ানির প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। তাই ‘শ্রমিক বা জন’ এখন ‘সোনার হরিণ’। একই সময়ে বেশির ভাগ ধান পেকে যাওয়ায় ও দুর্যোগের আশঙ্কায় বেড়ে গেছে ধান কাটা শ্রমিকের চাহিদা। একদিনের জন্য জনপ্রতি ৮শ’ টাকা শ্রমমূল্যের পাশাপাশি ওই শ্রমিককে তিনবেলা খাবার ও ধূমপায়ীদের বিড়ি দিতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে জনপ্রতি আরও ১৫০ টাকা খরচ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। ‘শ্রমিক সঙ্কট’ এখন কৃষকদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে, ধানের মণ ৮শ’ থেকে সাড়ে ৯শ’টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। কৃষক নেতা খন্দকার শওকত বলেন, সপ্তাহখানেকের প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে পুরোদমে ধানকাটা শুরু হলেও শ্রমিক সঙ্কট ও উচ্চমূল্যের কারণে কৃষকরা বিপাকে পড়েছে। ‘শ্রমিক সঙ্কট’ ধানকাটার অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে পাট নিড়ানিরও প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। তিনি জানান, গত বছর ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকায় শ্রমবিক্রি হলেও এবার দাম বেড়ে গেছে। সহজে পাওয়াও যাচ্ছে না। লোহাগড়ার এড়েন্দা হাটে শ্রমবিক্রি করতে আসা কালিয়া উপজেলার বাগুডাঙ্গা গ্রামের আসলাম সিকদার জানান, শ্রমবিক্রির জন্য এসেছেন। সাড়ে ৭শ’ টাকা দর হয়েছে। তবে, ৮শ’ টাকার কমে যাবেন না তিনি। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা গ্রামের শরিফুল ইসলাম জানান, তারা তিনজন পাট নিড়ানির জন্য শ্রমবিক্রি করতে এসেছেন। ভাল দাম না পেলে তারা কাজে যাবেন না। নড়াইল সদরসহ কালিয়া ও লোহাগড়া উপজেলার অন্যান্য হাটবাজারেও উচ্চ মূল্যে ধানকাটা শ্রমিক বেচাকেনা চলছে। কোথাও কোথাও শ্রমিক না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন কৃষকরা। শ্রমিক না পেয়ে প্রয়োজনের তাগিদে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ধানকাটা ও মাড়াইয়ের কাজে যোগ দিয়েছে। এ কারণে বর্তমানে গ্রামাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে। বিশেষ করে ছাত্রদের উপস্থিতি কম লক্ষ্য করা গেছে।
×