স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ ডোমার উপজেলার দশ ইউনিয়নের এলজিইডির আওতায় আরএমপি প্রকল্পের (রুরাল এমপ্লয়মেন্ট এ্যান্ড রোডমেইনটেনেস কর্মসূচী-২) একশ’ নারী শ্রমিকের ২০১৬ সালের চার মাসের বেতনের টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। যার টাকার পরিমাণ ১৮ লাখ। এ নিয়ে নারী শ্রমিকরা ডোমার উপজেলা পরিষদের সামনে প্রতিদিন ধর্ণা দিয়ে বিক্ষোভ করছে।
নারী শ্রমিকরা অভিযোগ করে জানান, উপজেলা প্রকৌশলী শাখার কর্মকর্তাদের অনিয়ম দুর্নীতির কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গত সোমবার সকালে জানা যায়, এলজিইডির আওতায় আরএমপি প্রকল্পের ১০টি ইউনিয়নে ১০ জন করে মোট একশ’ নারী শ্রমিক গত তিন বছর হতে ইউনিয়নভিত্তিক কাঁচা সড়ক সংস্কারে মাটির কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। তাদের প্রত্যেককে দেড়শ’ টাকা করে দিন হাজিরা হিসেবে মাসে সাড়ে চার হাজার করে বেতন দেয়া হয়। এর মধ্যে একশ’ টাকা নগদ এবং ৫০ টাকা দলের ব্যাংক এ্যাকাউন্টে জমা রাখা হয়। চার মাস অন্তর তাদের বেতন দেয়া হয়। এর মধ্যে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর টু ডিসেম্বর ও চলতি বছরের জানুয়ারি হতে এপ্রিল পর্যন্ত আট মাসে ৩৬ লাখ টাকা পাওনা এসে দাঁড়ায়। দীর্ঘ আট মাসে বেতন না পেয়ে তারা সোনালী ব্যাংকে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে তাদের এ্যাকাউন্টে চলতি বছরের জানুয়ারি হতে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসের বেতন জমা রয়েছে। বাকি ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর হতে ডিসেম্বর মাসের ১৮ লাখ টাকা ইতোমধ্যে উত্তোলন করা হয়েছে। যা জানার পর নারী শ্রমিকদের মাথায় হাত পড়ে। এ ব্যাপারে গোমনাতী ইউনিয়নের নারী শ্রমিকের গ্রুপ সভাপতি মতিনা বেগম জানান, সার্ভেয়ার আবদুস সামাদ, সুপারভাইজার সুশীল কুমার রায় ও নাজিমুল ইসলাম লিমন চেকের পাতায় আমাদের পূর্বেই স্বাক্ষর নিয়ে রেখেছে এবং ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে চার মাস পর পর আমাদের মাঝে ভাগবাটোয়ারা করে দেন। এ নিয়ে তারা বিক্ষোভ করলে ৭ মে তাদের চলতি বছরের চার মাসের বেতনের টাকা প্রদান করে। তবে ২০১৬ চার মাসের বেতন তাদের এখনও প্রদান করা হয়নি। এখন স্যাররা বলছে, অবশিষ্ট টাকা পরে দেয়া হবে। কিন্তু কবে দেয়া হবে সেটি বলছে না। আমরা ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারি ২০১৬ সালের চার মাসের বেতন উত্তোলন করা হয়েছে কিন্তু আমরা টাকা পাইনি। তাদের অভিযোগ আমাদের নামের টাকা ব্যাংক থেকে সংশ্লিষ্টরা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছে। এর সঙ্গে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার জড়িত। ডোমার সদর ইউনিয়নের গ্রুপ সভাপতি যশোদাবালা জানান, সার্ভেয়ার আবদুস সামাদ, সুপারভাইজার সুশীল কুমার রায় ও নাজিমুল ইসলাম লিমন প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করার জন্য আমাদের কাছে ২ হাজার টাকা করে দাবি করে। এ ছাড়া আমাদের বেতন দেয়ার সময় স্ট্যাম্প বাবদ ৫০ টাকা করে কেটে নেয়। ঈদ, পূজার সরকারী ছুটি থাকলেও সেখান থেকে হাজিরার টাকা কেটে নিয়ে তারা সেটি আত্মসাত করে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী ওবায়দুর রহমান বলেন, ২০১৬ সালের চার মাসের বেতনের কাগজপত্র চেয়েছি বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: