ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

একনেকে ২ হাজার ৭২৪ কোটি টাকার ৮ প্রকল্প অনুমোদন

এক কোটি নারীর ‘তথ্য আপা’ প্রকল্প

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১৭ মে ২০১৭

এক কোটি নারীর ‘তথ্য আপা’ প্রকল্প

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গ্রামীণ সুবিধাবঞ্চিত এক কোটি নারীর ক্ষমতায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে গ্রামীণ নারীর তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার এবং তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক সেবাপ্রদানের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন করা হবে। এ জন্য দেশজুড়ে ৪৯০ উপজেলায় একটি করে তথ্য কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এতে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ৫৪৫ কোটি টাকা। এ সংক্রান্ত প্রকল্প ‘তথ্য আপা : ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন (২য় পর্যায়)’ অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় মোট আটটি উন্নয়ন প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রকল্প সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। মন্ত্রী বলেন, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে ১ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে পাওয়া যাবে ৭৯৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। তিনি বলেন, একনেক সভায় নতুন এবং সংশোধিত মিলে মোট আট প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে কোন বৈদেশিক সহায়তা নেয়া হবে না। তিনি বলেন, ‘তথ্য আপা : ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন (দ্বিতীয় পর্যায়)’ প্রকল্পের আওতায় দেশের ৪৯০ উপজেলায় ৪৯০ তথ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এর মাধ্যমে গ্রামীণ নারীদের তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা হবে। এতে গ্রামীণ নারীদের ক্ষমতায়নে সহায়ক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি (বিটিসিএল) এর কাজ শেষ করবে বলে তিনি জানান। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৫৪৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এর পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শেষ হবে। সভায় ‘কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ডাল, তেল ও মসলা বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ (৩য় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পটিও অনুমোদন পেয়েছে। এ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ১৬৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা। দেশের ৬৪ জেলার সকল উপজেলা প্রকল্পের আওতাভুক্ত। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জুলাই ২০১৭ হতে জুন ২০২২ পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। মন্ত্রী জানান, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে ডাল, তেল এবং মসলা জাতীয় ফসলের মানসম্মত বীজের সরবরাহ ও ব্যবহার বৃদ্ধি করা হবে। এছাড়া উন্নত বীজ ব্যবস্থাপনা ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ডাল, তেল ও মসলা ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি; ডাল, তেল ও মসলার দেশীয় ঘাটতি পূরণ তথা আমদানি হ্রাস করা; মানসম্মত বীজ ব্যবস্থাপনা এবং মৌ চাষের মাধ্যমে গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং গ্রামীণ দরিদ্র নারীদের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করা হবে। প্রকল্পের মাধ্যমে ইউনিয়ন ভিত্তিক, বীজ এসএমই গঠনের মাধ্যমে মানসম্মত বীজ এবং সেই সঙ্গে উৎপাদন প্রযুক্তি সময় মতো কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছানো; বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির সরাসরি সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে মানসম্মত বীজ উৎপাদন নিশ্চিত করা; বীজ উৎপাদন, ব্যবহারকারী, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি, বীজ উৎপাদনকারী সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট কৃষি সম্প্রসারণ কর্মীর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা; এবং কৃষি সম্প্রসারণ কাজে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দক্ষতার উন্নয়ন করা হবে। একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পসমূহ হলো- ‘কনভার্সন অব ১৫০ মেগাওয়াট : সিলেট গ্যাস টারবাইন পাওয়ার প্ল্যান্ট টু ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট’ শীর্ষক প্রকল্প। এটি প্রথম সংশোধিত প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৯৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। দেশের পার্বত্য অঞ্চলের শ্রমিকদের কল্যাণ সুবিধা ও দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও জোরদারকরণে ঘাগড়ায় একটি বহুবিধ সুবিধাসহ শ্রম কল্যাণ কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প, এতে ব্যয় হবে ৬৫ কোটি টাকা। গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (চট্টগ্রাম জোন) প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৩৬ কোটি টাকা। নেত্রকোনা বিশিউড়া-ঈশ্বরগঞ্জ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় হবে ২৬১ কোটি টাকা। নাঙ্গলবন্দ-কাইকারটেক-নবীগঞ্জ জেলা মহাসড়কের লাঙ্গলবন্দ হতে মিনারবাড়ি পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইস্টিটিটিউটের (বারটান) অবকাঠামো নির্মাণ শক্তিশালীকরণ প্রকল্প, এতে ব্যয় হবে ৩৩২ কোটি ১২ লাখ টাকা।
×