ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিরোপার সুবাস পাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ১৬ মে ২০১৭

শিরোপার সুবাস পাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ২০১২ সালের পর স্প্যানিশ লা লিগার শিরোপা পুনরুদ্ধারের পথে রিয়াল মাদ্রিদ। এ লক্ষ্যে বড় বাধা পেরিয়েছে জিনেদিন জিদানের দল। রবিবার রাতে শক্ত প্রতিপক্ষ সেভিয়াকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে রিয়াল। সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের হয়ে জোড়া গোল করেন সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। একটি করে গোল করেন নাচো ও টনি ক্রুস। একই রাতে আরেক ম্যাচে একই ব্যবধানে জয় পেয়েছে বার্সিলোনা। ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমারের হ্যাটট্রিক করেন স্বাগতিক লাস পালমাসের বিপক্ষে। অপর গোলটি করেন লুইস সুয়ারেজ। এখনও পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে বার্সা। ৩৭ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৮৭। সমান পয়েন্ট রিয়ালেরও। গোল গড়ে দ্বিতীয় স্থানে তারা। তবে রিয়ালের বাকি আছে আরও দুটি ম্যাচ। সেখানে বার্সার একটি। বুধবারই বার্সাকে টপকে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে জিদানের দল। ওইদিন সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে লড়বে তারা। এরপর রবিবার শেষ ম্যাচে নামবে সবাই। শিরোপার পথে থাকা রিয়াল দারুণ একটা রেকর্ডও গড়েছে। টানা ৬২ ম্যাচে গোল করার অনন্য রেকর্ড এখন তাদের দখলে। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লীগে টানা গোলের রেকর্ডটি এতদিন ছিল বেয়ার্ন মিউনিখের। জাপ হেইঙ্কেসের ট্রেবল জয়ী বেয়ার্ন পেপ গার্ডিওলার অধীনেও গোলবন্যা বইয়ে টানা ৬১ ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠিয়েছে। সেই রেকর্ডটা পরশু টপকে গেছে জিনেদিন জিদানের দল। ঘরের মাঠে শুরু থেকেই সেভিয়ার উপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে রিয়াল। দুটি গোলের সুবর্ণ সুযোগও হাত ছাড়া হয়। অবশেষে ১০ মিনিটে কাক্সিক্ষত গোল পায় তারা। গোলটা অবশ্য অদ্ভুতুড়ে। সেভিয়া ডি-বক্সের বাইরে ফাউলের শিকার হন মার্কো এ্যাসেনসিও। সেভিয়া ডিফেন্ডারদের নজর যখন ওই দিকে, ঠিক তখন হাজির হন নাচো। সবাইকে চমকে দিয়ে আচমকা ফ্রিকিক নেন এই ডিফেন্ডার। বাঁকানো সে শট সবাইকে হতভম্ব করে জালে। সেভিয়া ডিফেন্ডাররা রেফারির কাছে আরজি জানাতে থাকেন। কিন্তু তা শুনবেন কেন রেফারি। কারণ রেফারি যে শট নেয়ার অনুমতি দিয়েই রেখেছিলেন। কিন্তু কে ভেবেছিল, রোনাল্ডো, রড্রিগুয়েজদের ফাঁকে শট নেবেন নাচো। কিছুক্ষণ পর স্টিফান জোভেটিকের শট পোস্টে লেগে ফেরত আসলে সেভিয়ার সমতায় ফেরা হয়নি। কিন্তু ২৩ মিনিটে রড্রিগুয়েজের সহায়তায় দ্বিতীয় গোল করেন রোনাল্ডো। এটি রিয়ালের হয়ে সি আর সেভেনের ৪০১ নম্বর গোল। দ্বিতীয়ার্ধেও তিনি মিনিটের মধ্যে ভিটোলোর সহায়তায় জোভেটিচই সেভিয়ার পক্ষে এক গোল করেন। ৭৮ মিনিটে টনি ক্রুসের কাট ব্যাক থেকে রোনাল্ডো নিজের দ্বিতীয় গোল করলে রিয়ালের জয় নিশ্চিত হয়। ম্যাচ শেষের ছয় মিনিট আগে ক্রুস নিজেই গোল করলে বড় ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মাদ্রিদ। ম্যাচ শেষে রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান বলেন, এটা দীর্ঘ পথ। আমরা জানি স্পেনে লীগ শিরোপা জেতা মোটেই সহজ নয়। প্রতিদিনই আমরা শিরোপা কাছে গিয়েছি। আমরা জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছিলাম। এখন হাতে আর মাত্র দুটি ম্যাচ আছে। শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যেতে চাই। প্রিয় শিষ্য রোনাল্ডোর প্রশংসা করে রিয়াল বস বলেন, সে ভিন্ন প্রকৃতির খেলোয়াড়। টনি ক্রুসের পাসটি খুব ভাল, ওখানে একটি ফাঁকা জায়গা ছিল এবং সে বল জালে জড়িয়ে দেয়। ফল নির্ধারক মুহূর্তগুলোতে সবসময় সে অবদান রাখে। পালমাসের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করে খেলে বার্সিলোনা। নেইমার তার হ্যাটট্রিক করা গোলগুলো করেন ম্যাচের ২৫, ৬৭ ও ৭১ মিনিটে। সুয়ারেজ গোলটি করেন ২৭ মিনিটে। বিগাস পালমাসের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন ম্যাচের ৬৩ মিনিটে। এখন লীগের শেষ ম্যাচে বার্সিলোনার প্রতিপক্ষ এইবার। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা ধরে রাখতে নূক্যাম্পে এই ম্যাচ জিততে চায় কাতালানররা। এ প্রসঙ্গে সুয়ারেজ বলেন, এটা এখন নির্ভর করছে তারা (রিয়াল) সেল্টা ও মালাগার বিপক্ষে কি করে। আর আমরা কোন ম্যাচ হারতে পারি না এবং আমরা সঠিক পথেই আছি। আশা ছাড়ছেন না বার্সা কোচ লুইস এনরিকেও। তিনি বলেন, তাদের (রিয়ালের) খুবই কঠিন দুটি ম্যাচ আছে। যাদের কাছে এই মৌসুমে আমরা হেরেছি। যেহেতু আমরা তাদের মাঠে হেরেছি, এর মানে ওখানে যে কেউ হারতে পারে। আমি নির্দিষ্ট করে বলতে চাই যে, সেল্টার মাঠে আমরা অনেকবার হেরেছি।
×