ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বুধবার ত্রিদেশীয় সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবেন মাশরাফিরা

সামনে কিউই পরীক্ষা বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ১৬ মে ২০১৭

সামনে কিউই পরীক্ষা বাংলাদেশের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত বছর নবেম্বর-ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ড সফরটি ছিল বিভীষিকাময়। কিউইদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলতে নামার আগে দুর্দান্ত সময় কেটেছে বাংলাদেশ দলের টানা দুই বছর। একের পর এক জয় দেখেছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের কাছে গিয়ে ধাক্কা খেতে হয়। ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়ে দেশে ফিরে আসে বাংলাদেশ দল। সেই সঙ্গে ইনজুরিতে জর্জরিতও হয়েছিল দল। এবার আয়ারল্যান্ডের মাটিতে সেই কিউইদের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। বুধবার ত্রিদেশীয় সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে কিউইদের বিপক্ষে আবার নামছেন মাশরাফিরা। ডাবলিনের ক্লনটার্ফ ক্রিকেট ক্লাব গ্রাউন্ডে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। এবার আয়ারল্যান্ড সফরে নানাবিধ সমস্যার মোকাবেলা করতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। মাঠের নৈপুণ্য প্রদর্শনের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ-সুবিধায় আছে মারাত্মক ঘাটতি। এমনকি আন্তর্জাতিক ম্যাচ চলার সময়ও সেই সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়েছে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে খেলোয়াড়দের ড্রেসিংরুমে কোন ধরনের টিভি ছিল না। যার কারণে রিপ্লে দেখতে পারেননি বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। আবার অনুশীলনের মাঠও উপযুক্ত ছিল না ব্যাটিংয়ের জন্য। এ কারণে একটি ইনডোরে ওই ম্যাচের আগে অনুশীলন করতে হয়েছে। খাবারের তালিকায়ও শুধু ভাত-মুরগি ছাড়া অন্যকিছু দেখা যায়নি। সবমিলিয়ে চরম সমস্যার মধ্যে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পড়তে হয়েছে। এমনকি এই সমস্যাটা নিউজিল্যান্ড দলের জন্যও। এর মধ্যে থেকেই এবার কিউইদের বিপক্ষে কঠিন পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হবে। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে তারা বাংলাদেশের চেয়ে তিন ধাপ ওপরে। আর সম্প্রতিই বাংলাদেশের বিপক্ষে শতভাগ সাফল্য পেয়ে উজ্জীবিত থাকবে তারা। উভয় দলেরই এটি দ্বিতীয় ম্যাচ। নিউজিল্যান্ড প্রথম ম্যাচে দারুণ এক জয় তুলে নিয়েছে। যদিও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে (আইপিএল) ব্যস্ত থাকার কারণে অনেকেই ত্রিদেশীয় এ সিরিজে খেলছেন না। এমনকি নিয়মিত অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও নেই। দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন টম লাথাম। তবে সেই দলটি স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বেশ ভালই নৈপুণ্য দেখিয়েছে। বিশেষ করে তরুণ উদীয়মান ব্যাটসম্যান নেইল ব্রুম দারুণ ব্যাট করেছেন। তিনি বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজেও বোলারদের ভুগিয়ে ছিলেন। অভিজ্ঞ রস টেইলর, অধিনায়ক লাথাম ছাড়াও আছেন আরেক অভিজ্ঞ লুক রনকি। এছাড়া দুই অলরাউন্ডার জেমস নিশাম ও কলিন মুনরোকে নিয়ে এখনও বেশ শক্তিধর দল কিউইরা। ডাবলিনের ম্যালাহাইডে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছেন। একেত ড্রেসিং রুমে ছিল না টিভি, যে কারণে কেউ আউট হলে রিপ্লে দেখতে পারেননি পরবর্তী ব্যাটসম্যানরা। বলগুলো কিভাবে ব্যাটে আসছে, উইকেটের কেমন আচরণ সেটা নিয়ে একেবারে অন্ধকারে থাকতে হয়েছে। ফলশ্রুতিতে স্বাগতিক আইরিশদের বিপক্ষে বিপর্যয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ দল আগে ব্যাটিংয়ে নেমে। তবে শেষ পর্যন্ত ওপেনার তামিম ইকবালের অর্ধশতক ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দারুণ ব্যাটিংয়ে ভাল একটি সংগ্রহের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বৃষ্টি হামলে পড়ায় আর খেলা হয়নি। ব্যাটসম্যানরা পরীক্ষা দিয়ে বুঝে গেছেন কিভাবে ব্যাট চালাতে হবে। কিন্তু বোলারদের সুযোগ হয়নি। যদিও কিউইদের বিপক্ষে আজ ভেন্যু আলাদা- ক্লনটার্ফ ক্লাব গ্রাউন্ড। এবার কিউইদের বিপক্ষে ফিরছেন মাশরাফি। সেøা ওভার রেটের কারণে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়ে গেছে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দর্শকের ভূমিকায় থাকা বাংলাদেশ অধিনায়কের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রতিশোধের মিশন। ত্রিদেশীয় এ সিরিজে দুইবার মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ। কিউই সফরে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার শোধ তোলার ভাল সুযোগ এটাই। কারণ পূর্ণশক্তির দল নিয়ে আসেনি কিউইরা। তবে ত্রিদেশীয় সিরিজটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ দলের জন্য আরও একটি কারণে। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের দিক থেকে বিবেচনা করলে মহাগুরুত্বপূর্ণ। এই মুহূর্তে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের ৭ নম্বরে থাকলেও সেটা টিকিয়ে রাখার জন্য বেশ চ্যালেঞ্জের মুখেই আছেন মাশরাফিরা। ৮ নম্বরে থাকা পাকিস্তান ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে ৮৮ রেটিং নিয়ে। বাংলাদেশের রেটিং এই মুহূর্তে ৯১। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ যে র‌্যাঙ্কিং ঘোষণা করবে আইসিসি সেখানে সেরা আটের মধ্যে থাকতে না পারলে ২০১৯ বিশ্বকাপ সরাসরি খেলার সুযোগ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে বাংলাদেশ। অবশ্য ৯ নম্বরে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ বেশ পিছিয়ে ৭৯ রেটিং নিয়ে। চার নম্বরে থাকা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিততে পারলে সুযোগ থাকবে রেটিং বাড়ানোর। এমনকি ৯৩ রেটিং নিয়ে ৬ নম্বরে থাকা শ্রীলঙ্কাকে হটিয়ে জায়গাটা দখলের দারুণ একটা সুযোগ। তাই ত্রিদেশীয় এ সিরিজটি দারুণ গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ দলের জন্য। আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দুটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
×