ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে

সাইবার হামলা থেকে বাংলাদেশও নিরাপদ নয়

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৬ মে ২০১৭

সাইবার হামলা থেকে বাংলাদেশও নিরাপদ নয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কোন ভয়ঙ্কর বোমার বিস্ফোরণ ঘটেনি। ঘটেছে বোমার চেয়ে আরও ভয়ঙ্কর ‘সাইবার’ বিস্ফোরণ। যার আঘাতে গোটা বিশ্ব হচ্ছে তছনছ। ভেঙ্গে পড়েছে আর্থিক ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। একটা বিস্ফোরণের ঘটনায় বিশ্বের ১৫০ টি দেশ আক্রমণের শিকার। আরও অনেক দেশ আক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে। বাংলাদেশও এখান থেকে নিরাপদ নয়। তবে বাংলাদেশ আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, দেশে গত ৫ দিনে একটি কমপিউটারও আক্রমণের শিকার হয়নি। আমরা আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে আগে থেকেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছি। ফলে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ নিরাপদে আছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে যেসব খবর বের হচ্ছে, তা বিটিআরসির পক্ষ থেকে মনিটর করা হয়েছে। কোথায় কোন আক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। তবে ঝুঁকিমুক্ত নয়। সোমবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত একটি বেসরকারী টেলিভিশন স্টেশনের ১২ টি পিসি আক্রমণের শিকার হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে সাইবার আক্রমণ ঘটলেও এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ আক্রমণের শিকার হয়নি। তবে বাংলাদেশ সাইবার হামলায় আক্রান্ত হওয়ার চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছে সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৫০ টি দেশ সাইবার হামলার শিকার হয়েছে। হামলাকারীরা বিশ্বজুড়ে ম্যালওয়্যার নামের একটি সফটওয়্যার ছেড়ে দিয়েছে। হ্যাকারদের আক্রমণের মূল টার্গেট অর্থ ও স্বাস্থ্য খাত। এ দুটি খাতে আক্রমণ করে বিশ্বের ১৫০ টি দেশ প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। ম্যালওয়্যারে অজান্তেই যদি কেউ ‘ক্লিক’ করে তাহলে ওই কমপিউটার আক্রমণের শিকার হবে। তবে বিটিআরসি জানিয়েছে, জাতীয় ডাটাসেন্টারসহ সরকারী সব ওয়েবসাইট নিরাপদ রয়েছে। হামলার হাত থেকে রক্ষা পেতে যথেষ্ট সতর্ক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আক্রমণকারী ম্যালওয়্যারটি এখন অনেক দেশই শনাক্ত করতে পেরেছে। ফলে প্রতিরোধ ব্যবস্থাও গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশে সাইবার ইমারজেন্সি রেসপন্স টিম (সার্ট) কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে সাইবার আক্রমণের বিষয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বিশ্বের ১৫০ টা দেশ এই আক্রমণের শিকার হলেও বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত নিরাপদ রয়েছে। আমরা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি। কারণ এখন ম্যালওয়্যারটি অনেকটাই চিহ্নিত হয়েছে। সব জায়গায় সতর্ক করা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে এত বড় আক্রমণ আগে কখনও হয়নি। এবারই প্রথম এমন আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। বেশিরভাগ উন্নত দেশ আক্রমণের শিকার হয়েছে। আমরা এখনও নিরাপদ অবস্থানে রয়েছি। তবে ঝুঁকি তো একটা থেকেই যায়। এর পরও প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিটিআরসির চেয়ারম্যান বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ‘ক্রাইম রিসার্চ এ্যান্ড এনালাইসিস ফাউন্ডেশনের’ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট তানভীর জোহা এই দাবির বিরোধিতা করেছেন। জোহা দাবি করেছেন, বাংলাদেশে ৩০ কম্পিউটার হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে। শুক্রবার একযোগে ১ লাখ ২৫ হাজারের বেশি কম্পিউটার সিস্টেম সাইবার হামলার শিকার হয়েছে। হ্যাকারদের ছড়ানো স্প্যাম লিঙ্ক ওপেনের সঙ্গে সঙ্গেই কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ হারায় ব্যবহারকারীরা। বাংলাদেশে যেসব ব্যবসায়ীর কম্পিউটার সাইবার হামলার শিকার হয়েছে। তারা তার কাছে ই-মেইল করে সহায়তা চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে, দেশের বেশ কয়েকটি পিসিতে ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্ত পিসির কোন ফাইলে ঢোকা যাচ্ছে না। সেখানে ঢুকতে অর্থ দাবি করা হচ্ছে। এশিয়ান টিভির ১২টি কম্পিউটারে এ ধরনের ম্যালওয়্যার আক্রমণ হয়েছে বলে খবর মিলেছে। এ বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও বিডিনগ বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান সুমন আহমেদ সাবির বলেন, বাংলাদেশে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত কম্পিউটারে র‌্যানসমওয়্যার আক্রমণ করেছে।
×