ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৩:৩৩, ১৬ মে ২০১৭

ঢাকার দিনরাত

কথায় কথায় আমরা বলে থাকি- বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহর ঢাকা। এবার জাতিসংঘের বসতিসংক্রান্ত উপাত্তের বিচারেই জানা গেল যে সত্যি সত্যি ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহর। ঢাকায় জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪৪ হাজার ৫০০। এরপরই ভারতের মুম্বাইয়ের অবস্থান। তৃতীয় অবস্থানে কলম্বিয়ার শহর মেডেলিন এবং চতুর্থ অবস্থানে ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলা। বিভিন্ন দেশের জাতীয় আদমশুমারি প্রতিবেদন থেকে তথ্য নিয়ে জাতিসংঘের আবাসন-সংক্রান্ত প্রবেদন তৈরি করা হয়। এই হিসাবে শহর বলতে মূল প্রশাসনিক শহর ছাড়াও শহরতলিকেও গণ্য করা হয়েছে। তবে জাতিসংঘের জনসংখ্যাতাত্ত্বিক ইয়ারবুকে শহর বলতে শুধু মূল প্রশাসনিক এলাকা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। ওই নথি অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল শহর ম্যানিলা। এরপরই প্যারিস। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বর্তমানে ১ কোটি ৬৪ লাখ মানুষ বাস করছে। তথ্যটি বাংলাদেশের জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের (নিপোর্ট)। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এবং নিপোর্টের সাম্প্রতিক এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর এলাকায় প্রতিদিন ১ হাজার ৪১৮ জন মানুষ বাড়ছে। বছরে যুক্ত হচ্ছে গড়ে ৫ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ মানুষ। আমরা যা কল্পনাও করতে পারি না, আজ সেটাই বাস্তব! মা দিবসে সন্তানরা রবিবারে ছিল মা দিবস। এদিন মায়ের প্রতি সম্মান জানান অনেকে ঘটা করে, তাতে কিছু আদিখ্যেতা থাকে বৈকি। তবু ঢাকাবাসী মধ্যবিত্ত শ্রেণীর বহু মানুষ অন্তত এই দিনে বাধ্য হয়ে হলেও দুদ- মায়ের কথা ভাবেন। আমাদের এক কবিবন্ধু অবশ্য সাফসাফ জানিয়ে দিলেনÑ আলাদা করে মা দিবসের প্রয়োজন নেই। বললেন, সামাজিক ও গণমাধ্যমে মাকে নিয়ে আহা উহু করার মধ্যে আত্মগরিমার বোধ যতটা প্রকট, প্রকৃত মাতৃভক্তি ততটা নয়। মায়েদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসার প্রকাশ যদি ঘটাতেই হয় তার শ্রেষ্ঠ উপায় হতে পারে মানুষ হিসেবে নারীর প্রতি যথোচিত সম্মান, শ্রদ্ধা ও মমত্ববোধ। কিন্তু দিন দিন মাতৃভক্তির আওয়াজ যত বাড়ছে, নারীর প্রতি আমাদের সম্মান ও শ্রদ্ধার পারদ যে ততই নিম্নগামী হচ্ছে সোনা ব্যবসায়ীদের সোনার পুত্ররাই তার একমাত্র উদাহরণ নয়। সোনার পুত্র বলতে কবি কাদের দিকে ইঙ্গিত করছেন, পাঠকরা বুঝবেন আশা করি। জি, বনানীর ধর্ষকদের কথাই বলা হচ্ছে। সে প্রসঙ্গে যাবার আগে মা দিবস নিয়ে যৎকিঞ্চিত। পত্রপত্রিকা আর টেলিভিশন চ্যানেল মা দিবসের বিশেষ আয়োজন করে থাকে। এটা এখন রীতিতেই পরিণত। এইকালে ফেসবুকের চাইতে বড় মিডিয়া আর কোনটি? সেখানে পুত্র-কন্যারা মাদের নিয়ে পোস্ট দেন। তাতে আবেগ উছলে ওঠে, আবার গভীর অনুভূতি পাঠককে আবেগেও ভাসিয়ে নিতে পারে। তবে নৈব্যক্তিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দিবসটি নিয়ে আমাদের সক্রিয়তা সম্পর্কে আলোকপাত তেমন থাকে না। তাই ব্যতিক্রম কিছু চোখে পড়লে পাঠকের সঙ্গে সেটি ভাগ করে নিতে ইচ্ছে করে। একজনের পোস্ট তুলে দিচ্ছি: ‘ফেসবুকে দেখবেন, বিবাহিত মেয়েরা দুজন নারীকে মা বলে কোলাজ ছবি আপ দিচ্ছে। একজন গর্ভধারিণী মা, আরেকজন শাশুড়ি মা। অথচ বিবাহিত ছেলেরা কিন্তু তাদের শাশুড়ির সঙ্গে তেমন ছবি দেয় না। তারা কেবল নিজের মায়ের সঙ্গেই ছবি দিয়ে খুশি থাকে। মেয়েরা শ্বশুরবাড়ি যতটা আপন করে নিতে পারে, ছেলেরা ততটা পারে না।’ গর্জে উঠল শাহবাগ আশির দশকের শেষ দিকে হলিউডে দি এ্যাকিউসড্ নামে একটি চলচ্চিত্র হয়েছিল যেটিতে জুডি ফস্টার গ্যাং রেপের শিকার এক নারীর ভূমিকায় অভিনয় করে একাডেমি এ্যাওয়ার্ড জিতেছিলেন। পানশালায় প্রবেশকারী এক নারীর দিকে চোখ পড়তেই এক মদ্যপ উত্তেজিত হয়ে ওঠে, তার সঙ্গীও জুটে যায়। সবাই মিলে নারীটিকে ধরাশায়ী করে ফেলে। সিনেমাটির সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ওইসব যৌন অপরাধীর বিচার প্রক্রিয়া। কান খাড়া করে প্রতিটি সংলাপ না শুনে উপায় থাকে না। পুরুষ মানুষ ইতর প্রাণী নয়, তাই সে নারীর ওপর বল প্রয়োগ করে তার জৈবিক প্রয়োজন মেটাতে পারে না। যৌনাকাক্সক্ষা জেগে ওঠা শুধু দৈহিক নয়, এক গভীর মনোস্তত্ত্বের বিষয় বৈকি। প্রকাশ্যে সেটির প্রকাশভঙ্গি সব সময়েই অরুচিকর। প্রাপ্তবয়স্ক নারীকে ধর্ষণকারী ব্যক্তির শাস্তি সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে দেশের এক জনপ্রিয় লেখক তার উপন্যাসের চরিত্রের মুখ দিয়ে বলিয়েছিলেন যে, ধর্ষণের ফলে নারীর যে শারীরিক ক্ষতি হয় সেটির জন্য ধর্ষণকারীর যাবজ্জীবন কারাদ- বা মৃত্যুদ- অত্যন্ত বাড়াবাড়ি! আমি নিশ্চিত এ ধরনের বক্তব্য কখনোই কোন নারী লেখকের কাছ থেকে পাওয়া যাবে না। ধর্ষণ যে নারীর ওপর জঘন্যতম আক্রমণ ও অসম্মান সেটি অনেক পুরুষই বুঝে উঠতে পারেন না। তবে সম্প্রতি অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘পিঙ্ক’ সিনেমা ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। সেখানে ধর্ষণের শিকার নারীর পক্ষে দাঁড়ান বর্ষীয়ান আইনজীবী। মহানগরীর অভিজাত এলাকা বনানীতে দুই তরুণী ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর এর ব্যাপক প্রতিবাদ হচ্ছে। শাহবাগ এখন প্রতিবাদ প্রতিরোধের প্রতীক। বনানীর ধনীর দুলাল ধর্ষকদের গ্রেফতার বিলম্বিত হচ্ছে দেখে ঢাকার প্রতিবাদী মানুষ শাহবাগে সমবেত হলেন। তারা ধর্ষকদের গ্রেফতারের জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। ওই আন্দোলনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিলেট থেকে গ্রেফতার হলো দুই কুলাঙ্গার। কয়েক দিনের মধ্যেই এক ধর্ষকের পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে শুল্ক গোয়েন্দারা অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দিল দুটি শাখা। শিশু ধর্ষণ থামানো যাচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই তরুণী ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর ওই ঘটনা নিয়ে দেশব্যাপী যখন ধিক্কার ধ্বনিত হচ্ছে, একই সঙ্গে ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠছে; ঠিক কাছাকাছি সময়ে রাজধানীতের বেশ কিছু শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। দেশে কি হঠাৎ শিশু ধর্ষণ বেড়ে গেল! দশটি জাতীয় পত্রিকার তথ্য পর্যালোচনা করে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম বলেছে, ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে শিশু ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে ১৬১ দশমিক ৮১ শতাংশ। গণধর্ষণ বেড়েছে ৩৫০ শতাংশ। ধর্ষণের পর হত্যার সংখ্যা বেড়েছে ৪৩ শতাংশ। ধর্ষণের চেষ্টা বেড়েছে ৩৮০ শতাংশ। উত্ত্যক্তকরণ বেড়েছে ৭৭১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। দুই বছরের তুলনামূলক পর্যালোচনায় শুধু ধর্ষণের পর আত্মহত্যা কমার প্রবণতা পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পর আত্মহত্যা কমেছে ৮৩ শতাংশ। শিশুদের সুরক্ষায় পরিচালিত ‘চাইল্ড হেল্পলাইন’ উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজের মানবিক গুণাবলী জাগিয়ে তুলে সমাজকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। মানুষের ভেতরের পশুত্ব যেন কখনও জেগে না ওঠে, তার জন্য সচেতনতা সৃষ্টির কথাও বলেছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বান বর্তমান সময়ের জন্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। মাঝেমধ্যে হতাশা এসে ভর করে- কোথায় চলেছে আমাদের সমাজ। যৌন নির্যাতনসহ শিশু নির্যাতনের ঘটনা উদ্বেগজনকহারে বাড়ছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিলম্বিত বিচার। শিশু নির্যাতনের ঘটনায় দ্রত বিচার ট্রাইব্যুনাল করার দাবি দীর্ঘদিনের। দেশের যে কোন প্রান্তে কোন শিশু কোন ধরনের সহিংসতা, নির্যাতনের শিকার হলে বিনা মূল্যে হেল্পলাইনে ফোন করে জানাতে পারবে। দেশে শিশু নির্যাতন যে হারে বেড়েছে, তাতে হেল্পলাইন কিছুটা কাজে আসবে নিশ্চয়। তবে সবার আগে প্রয়োজন শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ। মনে হচ্ছে শিশুর ওপর বর্বর নির্যাতন প্রতিরোধ এবং নির্যাতনকারীকে শাস্তি দেয়ার জন্য বিশেষ তৎপরতা ও আইনের সংশোধন জরুরী হয়ে পড়েছে। শিশুধর্ষণ নিয়ে চিন্তা উদ্রেককারী গভীর লেখা তেমন পাই না। সাম্প্রতিক শিশু ধর্ষণের প্রেক্ষাপটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত কবি লুৎফুল হোসেনের লেখাটি মনে দাগ কেটেছে। তিনি লিখলেন : ‘আট বছরের আয়েশা কি করে প্রলুব্ধ করেছিল ধর্ষককে! আজ প্রতি মাসে যখন গোটা পঞ্চাশেক শিশু ধর্ষণের শিকার হয় এদেশেÑ তখন সেই শিশুটি কি রাত করে বাইরে যাওয়ার জন্য, স্বল্পবসনা হওয়ার জন্য, মদ বা নেশা সেবনের জন্য, ধর্ষণের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধর্ষিত হয়? তার ওপর যখন পরিসংখ্যান বলে যে প্রায় নব্বুই শতাংশ ক্ষেত্রে চেনা বা কাছের কারো দ্বারাই শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে! তখনও কি এই শ্রেণী বলতে থাকবে বাচ্চাটা চকোলেট নিতে রাজি হওয়াতেই ধর্ষণের আশকারা পেয়েছে ধর্ষক। তাই দোষ যেন ধর্ষকের নয়। ইচ্ছা হয় বলি, যেসব কুৎসিত ব্যক্তি ধর্ষিতার দিকে আঙুল তুলতে চান, তারা যেন চেনা বিশ্বাসের বলয়ে একবার এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হোন। তারপর আর একবার ব্যক্ত করেন আপনার কথাগুলো। আপনার সেদিনের কথাগুলোই নেবো, আজকেরটুকুন বিভ্রমের পাত্রে পুরেই রেখে দেবো। ওটাকেই নেবো, আজকের কথাগুলো সব প্রলাপের খামে ধরে রাখব। নির্লজ্জের মতো এমন আকাক্সক্ষার প্রকাশই আসলে ঘটাতে ইচ্ছে করে।...’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী, বর্তমানে কানাডা প্রবাসী লেখক নাহার মনিকা ইংল্যান্ডের নারীবাদী সংগঠনের তৎপরতার দিকে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে গিয়ে বললেন : ‘সম্ভবত সেই সময় পার হয়ে গেছে যখন ধর্ষণকে নারী নিজেই নিজের লজ্জা, কলঙ্ক মনে করত। প্রতিকার বা বিচার পাওয়ার প্রশ্নও ছিল না। আজকের দিনেও ধর্ষক বদলে যায়নি বরং ক্ষেত্রবিশেষে তাদের বিকৃতি বেড়েছে, কিন্তু আমাদের নারী থানায় গিয়ে বিচার চাইতে পারে, প্রতিবাদে আমরা রাস্তায় নামতে পারি। ধর্ষিত হওয়াকে নিজের কলংক ভাবার দিন বদলে গেছে। বিশ্বের যেসব দেশে ধর্ষণের সুষ্ঠু বিচার নারী পায়, সেসব দেশেও অবস্থা একদিনে বদলায়নি। অনেক আন্দোলন, প্রতিবাদের কাঠখড় পুড়িয়ে রাষ্ট্রকে আইন প্রণয়ন আর প্রয়োগের পর্যায়ে আনতে হয়েছে। ধর্ষণ নিয়ে সাধারণ মানুষের ধারণা, বিশ্বাস পরিবর্তনের জন্য উন্নত দেশেও নিয়মিত গবেষণা, ক্যম্পেইন চলে। খোদ ইংল্যান্ডেও নারীবাদী সংগঠনকে নিয়মিত আপডেট করতে হয় তাদের রেইপ ক্রাইসিস ওয়েবসাইট। ধর্ষণ সংক্রান্ত মিথ আর বাস্তবতার পার্থক্য সুন্দর করে ব্যাখ্যা করে মানুষকে বোঝায় তারা। চমৎকার এই ব্যাখ্যাগুলো সহজ আর বোধগম্য।’ বলাবাহুল্য আমাদের মানবাধিকার সংগঠন এবং নারী আন্দোলনকারীদের কাছ থেকেও আমরা এ ধরনের উদ্যোগ আশা করি। রোববার বেলা বারোটায় সোনারগাঁও হোটেলের ঠিক পেছনটায়, মানে দক্ষিণ দিকে হাতিরঝিল অংশে দেখলাম ঝিলের পাড় ঘেঁষে বিপুল জনসমাগম। সাধারণত নৌকা বাইচে এমন উৎসুক দর্শকদের দেখা যায়। খেয়াল করে দেখলাম সিভিল ডিফেন্সের গাড়ি। কিছুক্ষণ পর ঝিলের পুকুর থেকে ভেসে উঠলেন এক ডুবুরি। জানা গেল সকালে এক অপ্রকৃতিস্থ (পাগল) ব্যক্তি নোংরা গাঢ় কালো জলে সাঁতরে ঝিলের মাঝখানটায় গিয়ে চিৎকার করে ডুব দেয়ার ঘোষণা দেন। দু-তিনবার ডুবে ভেসেও উঠেছেন, শেষ দফা আর ওঠেননি। এলাকাবাসী খবর দেয়ায় ডুবুরি এসে অনুসন্ধানে নেমেছেন। মরদেহ খুঁজে পাওয়ার কাজটি মনে হচ্ছে সহজ হবে না। এক এলাকাবাসী জানালেন, প্রতি বছরই কেউ না কেউ এখানে ডুবে মরছেন। শুধু গান নয় রবীন্দ্রনাথের জন্মবার্ষিকী ছিল গত সপ্তাহে। কবিগুরুর জন্মদিন পঁচিশে বৈশাখ শুধু নয়, পঁচিশে বৈশাখের আগে ও পরে ঢাকায় প্রচুর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বেশির ভাগ অনুষ্ঠানেই যে রবীন্দ্রসঙ্গীতই প্রধান হয়ে ওঠেÑ সে কথা বলাই বাহুল্য। হাতে গোণা কয়েকটিতে কবির কবিতা থেকে আবৃত্তি রাখা হয়। এসব অনেকটা দায়সারা কিংবা রুটিন আয়োজনের মধ্যেই পড়ে। রবীন্দ্রনাথের মতো মনীষীর প্রতি সত্যিকারের শ্রদ্ধা জানাতে গেলে সুপরিকল্পনা ও মেধার সংযুক্তি দরকার। ছায়ানটের মতো স্বল্প ক’টি প্রতিষ্ঠান সেই কাজই নিষ্ঠার সঙ্গে করে চলেছে। আগামীতে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো যদি এ দিকটা ভেবে দেখেন তাহলে কবিস্মরণ নিশ্চয়ই অর্থপূর্ণ হয়ে উঠবে। কবির কবিতা আবৃত্তি শুধু নয়, সহজ করে সেটির বক্তব্য এবং আজকে তার প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরা জরুরি। সবচেয়ে বেশি জরুরি কবির মননশীল প্রবন্ধ থেকে পাঠ ও তা নিয়ে সহজবোধ্য হৃদয়গ্রাহী আলোচনা। অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মানবিকতাবোধ ঊর্ধ্বে তুলে ধরার জন্য এমন চর্চা আবশ্যক। শিল্পকলা একাডেমীর একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত রবীন্দ্র একাডেমীর আয়োজনটি সুপরিকল্পিত মনে হলো। তাতে একটি লিখিত পা-ুলিপি ছিল, কবির জীবন ও কর্মের কিছুটা আলোকপাত ঘটানোর ফাঁকে প্রাসঙ্গিক আবৃত্তি ও সংগীত পরিবেশিত হয়। ১৪ মে ২০১৭ [email protected]
×