ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তানের বিকল্প ভাবছে বিসিবি

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ১৫ মে ২০১৭

পাকিস্তানের বিকল্প ভাবছে বিসিবি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শেষ পর্যন্ত জুলাই-আগস্টে টেস্ট, ওয়ানডে, টি২০ সিরিজ খেলতে পাকিস্তান আসলে ভাল। আর না আসলে তাদের বিকল্প দেখা হচ্ছে। পাকিস্তান না আসলে যে ফাঁকা জায়গা থাকবে সেই স্থানে অন্য কোন দলের বিপক্ষে মাশরাফি, মুশফিকদের সিরিজ খেলানোর কথা ভাবছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনই এমনটি জানিয়েছেন। বিসিবি পরিচালক ও সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের আমন্ত্রণে শনিবার বিকেলে মানিকগঞ্জে শেখ রাসেল স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিসিবি প্রধান পাপন। সেখানেই তিনি এমন কথা বলেন। জানান, ‘ওই সময়ে অন্য কোন দলকে আনা যায় কিনা সেটা নিয়ে আমরা ভাবছি।’ অবশ্য টানা ক্রিকেট খেলতে থাকা ক্রিকেটাররা ফাঁকা সময় পেয়ে সেই সময়ে খেলতে চাইবেন কিনা, তাও একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চলার সময়ে এ নিয়ে ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন পাপন। তখনই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। পাপন জানান, ‘আসলে আমি আগেই বলেছি ওরা (পাকিস্তান) আসবে না। তারপরও যেহেতু সফর বাতিলের খবরটি আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি, তাই আমরা সূচী পাঠিয়ে দিয়েছি। তবে অফিসিয়ালি না করবে বলেই আমাদের ধারণা।’ সঙ্গে বিসিবি সভাপতি যোগ করেন, ‘ক্রিকেটাররা খুব ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। একদম টাইট সময় যাচ্ছে। তাই টিমের সাথে আগে কথা বলতে হবে। আমি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দেখতে যাব। এ মাসের শেষে। তখন গিয়ে টিমের সাথেও বসতে হবে। আসলে ওরাও অনেকে বলছে খেলা অনেক বেশি হচ্ছে। আমাকে অনেকেই জানিয়েছে খেলা খুব বেশি পড়ে যাচ্ছে। তারা ব্রেক পাচ্ছে না। বিশ্রাম হচ্ছে না। বিশ্রাম দরকার। তাই ওদের সাথে কথা বলেই ঠিক করব বিকল্প সিরিজ আয়োজন করব কি করব না।’ শেখ রাসেল স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণ করেন পাপন। পাপনের সঙ্গে বোর্ডের অন্যতম প্রভাবশালী পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিক, আরেক পরিচালক আব্দুল আওয়াল চৌধুরী ভুলু এবং বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজনও ছিলেন। পুরস্কার বিতরণী শেষে পাপন আরও জানান, ‘চাম্পিয়ন্স ট্রফি দেখতে গিয়ে কোচ ও খেলোয়াড়দের সাথে বসব। কথা বলব। টিমের সাথেও কথা বলতে হবে। ক্রিকেটারদের সাথে বসে ওদের সাথে কথা বলে তারপর বিকল্প সিরিজ আয়োজনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করব।’ শুধু খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলেই নয়, বিসিবিকে র‌্যাঙ্কিংয়ের বিষয়টিও দেখতে হবে। আইসিসির ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে এখন বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তমে আছে। রেটিং পয়েন্ট আছে ৯১। বাংলাদেশের ওপরে থাকা শ্রীলঙ্কার রেটিং পয়েন্ট ৯৩। বাংলাদেশের নিচে থাকা দুই দল পাকিস্তান (রেটিং পয়েন্ট ৮৮) ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ (রেটিং পয়েন্ট ৭৯)। বোঝাই যাচ্ছে, পাকিস্তান এ মুহূর্তে বাংলাদেশের সামনের ম্যাচগুলোর দিকেই নজর রাখবে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে রেটিং পয়েন্ট পার্থক্য মাত্র ৩। সিরিজ খেলবে না আগে ভাগেই পাকিস্তান বলে রাখল। যদি আয়ারল্যান্ডে চলমান তিনজাতি সিরিজ ও আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ খুব বেশি খারাপ করে তাহলে পাকিস্তান থেকে নিচে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। তখন পাকিস্তান আর বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ খেলবে না। আর যদি বাংলাদেশ একই অবস্থান বজায় রাখে তাহলে তখন সিরিজ খেলতে উঠে পড়ে লাগবে। ঠিক যেমনটি ২০১৫ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত করার ব্যাপারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে করেছিল পাকিস্তান। এবার বাংলাদেশের সঙ্গেও হয়ত সেইরকম হিসেবই করছে। এ বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সুযোগ আছে। এরমধ্যে র‌্যাঙ্কিংয়ের সেরা আটদল সরাসরি ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলবে। এ সময় পর্যন্ত বাংলাদেশের সামনে আয়ারল্যান্ডে তিনজাতি সিরিজ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আর পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজই আছে। আর পাকিস্তানের আছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ। যদি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ, আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত বাকি সব ম্যাচে হারে, তাহলে বাংলাদেশ ১ রেটিং পয়েন্ট পাবে, হারাবে ৫ রেটিং পয়েন্ট। তখন বাংলাদেশের মোট রেটিং পয়েন্ট দাঁড়াবে ৮৭। আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যদি পাকিস্তান কোনভাবে একটি ম্যাচে জিতে, তাহলে ২ পয়েন্ট পাবে। হারাবে ২ পয়েন্ট। তাদের ৮৮ রেটিং পয়েন্টই থাকবে। তখন পাকিস্তান কোনভাবেই বাংলাদেশের বিপক্ষে আর সিরিজ খেলবে না। কিন্তু যদি তিনটি ম্যাচেই হারে পাকিস্তান, তখন ৮৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে যাবে। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে উঠে পড়ে লাগবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রচুর খেলা রয়েছে। যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভাল খেলে তখন সেরা আটে থাকার সম্ভাবনাও থাকছে। পাকিস্তানের বিকল্প সিরিজ ভাবনা করলেই মনে হচ্ছে উত্তম কাজটি করবে বিসিবি। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ বাদ দিয়ে দেয়াও এ মুহূর্তে উত্তম কাজই হবে। তাতে পাকিস্তানও গ্যাড়াকলে পড়ে যাবে।
×