ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাগেরহাটে কর্মসংস্থান কর্মসূচী

খাতায় ১৩১ শ্রমিক, বাস্তবে ১২

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ১৫ মে ২০১৭

খাতায় ১৩১ শ্রমিক, বাস্তবে ১২

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ মার্চ থেকে মে বা জুন মাস পর্যন্ত গ্রামাঞ্চলে তেমন কোন কাজ থাকে না। এ সময় অতিদরিদ্র পরিবারগুলোর কষ্টে দিন কাটে। এমনটি ভেবে বর্তমান সরকার বছরের প্রথমদিকে ৫-৬ মাস ধরে চালু করেছেন অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী। এই কাজের আওতায় শ্রমিকরা নিজ এলাকায় ৬ ঘণ্টা কাজ করে ১৭৫ টাকা বেতন পাবেন। প্রতিটি পর্বের কাজ চলবে ৪০ দিন। প্রতিটি ইউনিয়নে এ কাজের জন্য প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। যারা এই প্রকল্পে কাজ করবে তাদের নিবন্ধনও হয়ে আছে আগেভাগেই। মোরেলগঞ্জে এই কর্মসূচীর ২য় পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে গত ৬ মে। কিন্তু কোন কোন প্রকল্পের কাজ আদৌ শুরু হয়নি। শুরু হওয়া অধিকাংশ প্রকল্পে নেই নিবন্ধিত ও নির্ধারিত সংখ্যক শ্রমিক। এই কর্মসূচীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্তই থাকছে অনিয়ম, দুর্নীতি। কাজ চলছে কাগজ কলমে। বাস্তবচিত্র দুঃখজনক। রবিবার বহরবুনিয়া ইউনিয়নের দুটি প্রজেক্টে পাওয়া গেছে ব্যাপক অসংগতি। ৩নং ওয়ার্ডের ফুলহাতা বাজারের কাছে চলছে একটি রাস্তা সংস্কারের কাজ। এখানে প্রতিদিন ১৩১ শ্রমিক কাজ করার কথা। কিন্তু কাজে আছেন মাত্র ১২ জন। এই প্রকল্পটি দেখাশোনার দায়িত্ব সংরক্ষিত নারী আসনের ইউপি সদস্য মাকসুদা বেগমের। তার স্বামী হারুন অর রশিদের নাম রয়েছে এখানে শ্রমিকের তালিকায়। প্রকল্পটিতে তিনিই তদারকি করছেন। তবে এখানে কত শ্রমিক কাজ করার কথা তা লেবার সর্দার দেলোয়ার হোসেন মোল্লার জানা নেই। কর্মরত শ্রমিক শহিদুল হাওলাদার, হাসিব, ইমরান, লিয়াকত, ইলিয়াস, সোহেল, হাসান, রিপন ও আবেদ বলেন, ‘আমরা আমরা ১০০ ফুট মাটি কেটে দেব ১০ হাজার টাকায় এই চুক্তিতে কাজ করছি’। লেবার সর্দার বলেন, ‘শ্রমিক পাওয়া যায় না। তাই নগদ টাকার চুক্তিতে কাজ করানো হচ্ছে’। ১৩১ জন শ্রমিকের স্থলে মাত্র ১০ জন শ্রমিক দিয়ে কোন চুক্তিতে কাজ করানো হচ্ছেÑ জানতে চাইলে ইউপি সদস্য মাকসুদা বেগম ছবি বলেন, ‘কোন লোক কাজ করতে চায় না। তাই কাজের স্বার্থেই এভাবে চালানো হচ্ছে’। এই ইউনিয়নের অপর একটি প্রকল্প রয়েছে ৪নং ওয়ার্ডে। কাগজপত্রে এখানে শ্রমিক রয়েছে ৪২ জন। প্রকল্প এলাকায় গেলে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এখানে কোন কাজই শুরু হয়নি’। এ সম্পর্কে প্রজেক্ট চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মোঃ মাসুদ হোসেন মোবাইল ফোনে জানান, আমি ও চেয়ারম্যান জরুরী কাজে ঢাকায় আছি। ফিরে এসে কাজ শুরু করব। এ সম্পর্কে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, এত অসংগতি, অনিয়ম কোথাও থাকার কথা নয়। তবে আগামী দিন থেকে ওই ইউনিয়নের সকল প্রজেক্টের কাজ বিশেষভাবে নজরদারি করা হবে এবং তদন্তসাপেক্ষে উল্লেখিত অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচীর উপজেলা সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওবায়দু রহমান বলেন, বহরবুনিয়া ইউনিয়নের বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। কোন প্রকার অনিয়ম প্রশ্রয় দেয়া হবে না।
×