ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আদালতের কর্মচারী বলে কথা!

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১৫ মে ২০১৭

আদালতের কর্মচারী বলে কথা!

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ জজকোর্টের কর্মচারী বাবা ও ছেলের কারণে ভিটামাটি হারিয়ে এখন শেবাচিম হাসপাতালে মৃত্যু শয্যায় রয়েছেন সদর উপজেলার কর্নকাঠী গ্রামের বিধবা মোসাম্মদ বেগম। ইতোমধ্যে জজকোর্টের প্রভাব বিস্তার করে বাবা-ছেলে বৃদ্ধার একমাত্র সম্বল বাড়ি এবং বিধবার স্বামী ও মেয়ের কবর দখল করে অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছে। সূত্রমতে, সব হারানোর শোক সহ্য করতে না পেরে বৃদ্ধ মোসাম্মদ বেগম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে জ্ঞানহীন অবস্থায় শেবাচিম হাসপাতালে মৃত্যু শয্যায় রয়েছেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করে, কর্নকাঠী এলাকায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভাইস চ্যান্সেলর ট্রাস্ট ভবন সংলগ্ন ২১ শতক জমিতে আশির দশকে বিধবা বেগমকে বসবাসের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্য বাড়ি করে দেয়। ওই সময় মানবিক কারণে বিধবার পৈত্রিক উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া জমির সঙ্গে সর্বসম্মতিক্রমে স্থানীয় আহম্মেদ আলী খান ও আফসের আলী খানের জমির এওয়াজ বণ্টন (অদল-বদল) করা হয়। সে অনুযায়ী আহম্মেদ আলী খান ও আফসের আলী খানের উত্তরাধিকারীরা ওই বিধবার পৈত্রিক জমি ভোগদখল করে আসছে। সূত্রে আরও জানা গেছে, কর্নকাঠী এলাকায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ হওয়ার পর ওই এলাকার জমির দাম কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এ কারণে আফসের আলী খানের ছেলে ভোলা জজকোর্টের কর্মচারী খোরশেদ খানের নজর পড়ে বিধবার জমির ওপর। এ নিয়ে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত শালিস বৈঠকে খোরশেদ খান স্বীকার করেন ওই জমির পরিবর্তে বিধবার বাবা মৃত বারেক খানের অন্য জমি থেকে প্রাপ্য অংশ তারা ভোগদখল করছেন। স্থানীয় মালেকা বেগম জানান, বিধবা বেগমের জমির মূল্য বেশি হওয়ায় অতিসম্প্রতি জোরপূর্বক খোরশেদ খান ও তার পুত্র সোহাগ খান বিধবা বেগমের বাড়ির কয়েক লাখ টাকার গাছ কেটে লুটপাট করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রভাবশালীরা ২/৩দিন পূর্বে বিধবাকে তার বসতঘর থেকে বের করে দিয়ে ঘর ভেঙ্গে তার মৃত স্বামী ও মেয়ের কবর বালু দিয়ে ভরাট করেছে। ইতোমধ্যে ওই জমি অন্যত্র বিক্রি করা হয়েছে বলেও এলাকায় প্রচার করা হয়। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য সেন্টু মিয়া। অভিযুক্ত খোরশেদ খান অদল-বদলের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ওই সময়ে বিষয়টি ছিল মৌখিক, তাই বেগমের পৈত্রিক সম্পত্তি আমি ছেলে দিয়ে আমার বাবার সম্পত্তি দখল করে অন্যত্র বিক্রি করেছি। জমির অপর অংশিদার মৃত আহম্মেদ আলী খানের নাতি সাউথ ওয়েব রিয়েল স্টেটের পরিচালক সফিকুল ইসলাম বলেন, অসহায় বিধবা বেগমকে দেয়া সম্পত্তিতে আমাদের কোন দাবি নেই। তবে আমাদের অপর ওয়ারিশরা আদালতের কর্মচারী হওয়ায় তারা প্রভাব দেখিয়ে বিধবার জমি দখল করে নিয়েছে বলে শুনেছি।
×