ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপির ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল ভিশন-২০৩০ ঘোষণার আগে ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১৪ মে ২০১৭

বিএনপির ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল ভিশন-২০৩০ ঘোষণার আগে ॥ নাসিম

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করার আগে অতীতের ভুলের জন্য জনগণের কাছে বিএনপির ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল বলে মনে করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় ১৪ দল। বিএনপি তথাকথিত এ ভিশন ঘোষণার মাধ্যমে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করে আগামী নির্বাচনে জয়লাভ করতে চায় দাবি করে জোটের নেতারা বলেছেন, অতীতকে ভুলে গিয়ে বিএনপির এ নতুন ছলনায় দেশের জনগণ ভুলবে না। শনিবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠক শেষে ব্রিফিংকালে জোটটির কেন্দ্রীয় মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করার আগে অতীতের ভুলের জন্য জনগণের কাছে বিএনপির ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল। তারা যে নতুন ভিশনের কথা বলেছেন সেটি হচ্ছেÑ নতুন করে জনগণকে বিভ্রান্ত করে ভোট চাওয়ার একটি বাহানা মাত্র। কিন্তু তাদের অতীতকে ভুলে গিয়ে এ ছলনায় জনগণ ভুলবে না। তিনি আরও বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এগিয়ে নেয়ার জন্য বিএনপি শুধু বঙ্গবন্ধুর খুনীদের আশ্রয় দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, মন্ত্রীও বানিয়েছিলেন। তারা দেশে জঙ্গীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছিল। এ কারণেই তাদের উচিত ছিল জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বিএনপি তথাকথিত ভিশন-২০৩০ ঘোষণার মাধ্যমে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করে আগামী নির্বাচনে জয়লাভ করতে চায়। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনার বিষয়ে বিএনপির ভিশন-২০৩০ এ বেগম খালদো জিয়া যা বলেছেন তা মোটেই বাস্তবসম্মত নয়। তিনি বলেন, উনি (খালেদা জিয়া) ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রপতিকে অবমাননা করেছেন। বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় রেললাইনের ওপর সাবেক রাষ্ট্রপতি ডাঃ এ কি ইউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর দৌড়ানোর বিষয়টি দেশের মানুষ এখনও ভুলে যায়নি। সুতরাং তাদের মুখে এ কথা মানে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভিশনে খালেদা জিয়া একবারও যুদ্ধাপরাধীদের কথা বলেনি। তিনি একবারও বলেননি ঘাতকদের বিচার না করে, বরং সমর্থন করে ভুল করেছি, আপনারা করেছেন সে কারণে আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধীদের নিয়ে বিএনপি ‘ইনক্লুসিভ’ রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চান উল্লেখ করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, যুদ্ধাপরাধী, বঙ্গবন্ধুর খুনী ও একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলাকারীদের নিয়ে ‘ইনক্লুসিভ’ রাজনীতি দেশের মানুষ কখনও মেনে নেবে না। খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা না বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কিভাবে বাস্তবায়িত করবেন জানতে চেয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধীদের নিয়ে ‘ ইনক্লুসিভ ’ দেশ তিনি কিভাবে গড়তে চান? মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু স্বপ্নই দেখাননি, স্বপ্নের বাস্তবায়নও করেছেন। তাই দেশের মানুষ আগামী দিনে তাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের কাছে দেয়া সকল ওয়াদা পূরণ করেছেন। তিনি যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার করে দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর করেছেন এবং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করেছেন। তাই দেশের মানুষ তাকেই আগামী দিনেও ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার ঘোষিত ভিশন নিয়ে অনেক কথা বলা যায়। বলেছিও। তবে এক কথায় আমি বলব, এটা ভ্রান্তিবিলাস ছাড়া কিছু নয়। পরিপূর্ণ ভ্রান্তিবিলাস এবং জনগণকে বিভ্রান্তি করার জন্য একটি ভিশন। এ ভিশনের আরেক অর্থ হলোÑ পঞ্চদশ ও ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করা। যদি এটি বাতিল হয়ে যায় তবে দেশ আবারও পূর্ব অবস্থায় ফিরে যাবে। রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে জাসদ (একাংশ) সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, জাসদ (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য এজাজ আহমেদ মুক্তা, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ১৪ দলে যোগ দিতে চায় ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ॥ ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দাদী এবং মহাসচিব আল্লামা জয়নুল আবেদিন জুবায়েরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটে যোগ দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ফ্রন্টের নেতারা।
×