ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার বিরোধী মতের লোকজনকে দমন করছে নিষ্ঠুরভাবে

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৪ মে ২০১৭

সরকার বিরোধী মতের লোকজনকে দমন করছে নিষ্ঠুরভাবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্তমান সরকার দেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস, ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব ও বিরোধীমতের লোকজনকে নিষ্ঠুরভাবে দমন করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। শনিবার বিকেলে রাজধানীর ইস্কাটন লেডিস ক্লাবে বিএনপি আয়োজিত ‘বাংলাদেশে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা ও আমাদের ভবিষ্যত’ শীর্ষক সেমিনারের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। খালেদা জিয়া বলেন, শিক্ষার সকল উদ্দেশ্য আজ ভূলুণ্ঠিত। সুশাসন, আইনের শাসন আজ নেই বললেই চলে। প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ক্ষমতাসীন সরকার সকল বিরোধী মতকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য উন্মুত্ত হয়ে উঠেছে। এ অবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমেই আমরা দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব, প্রতিষ্ঠা করব মানুষের অধিকার। আমরা জানি এ লড়াই কঠিন লড়াই। কিন্তু যে জাতি লড়াই করে স্বাধীন হয়েছে তাদের কাছে এ লড়াই কোন কঠিন লড়াই নয়। বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, একজন মানুষের পরিপূর্ণ জীবন লাভের পূর্বশর্ত হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষা থাকলেই মানুষ সকল দুর্যোগ, দুর্ভোগের মোকাবেলা করতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে দুর্ভিক্ষ, মহামারী ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে লেখাপড়া জানা মানুষের চেয়ে লেখাপড়া না জানা মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন, শিক্ষা মানুষকে শুধু হাতেকলমে পড়তে, লিখতে ও অংক করতেই শেখায় না। খালেদা জিয়া বলেন, শিক্ষা মানুষের জীবনকে আলোকিত করে, শিক্ষা মানুষকে মর্যাদা দেয়। এই মর্যাদার জন্যই মানুষ জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের সংগ্রামে লিপ্ত হয়। মর্যাদাবিহীন মানুষ সব সময় সমাজে উপেক্ষিত থাকে। আমাদের সমাজে এই উপেক্ষার হার অনেক বেশি। এ কারণেই সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি জীবনভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রয়োজন, যা দেশের মানুষকে আন্তর্জাতিক পরিম-লে অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সক্ষম করে তুলবে। এ কথা আজ স্বীকার করতে হবে যে, পাসের হার বাড়িয়ে আত্মতুষ্টির কারণে আমাদের শিক্ষার মানের ক্রমাবনতি ঘটেছে। এই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে না পারলে আগামী দিনে আমাদের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে, আমরা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ব। সেমিনারের আয়োজনের সঙ্গে জড়িতদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমান শিক্ষা ও শিক্ষাব্যবস্থার সংকট সম্পর্কে বিভিন্ন মহলে যে আলোচনা হচ্ছে সে সম্পর্কে আলোচনার জন্য আপনারা যে সেমিনারের আয়োজন করেছেন সেজন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। একই সঙ্গে যারা বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এই সেমিনারে যোগদানের জন্য এসেছেন তাদেরও ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পূর্বে এদেশের ছাত্রসমাজ শিক্ষাকে সময়োপযোগী ও কল্যাণমুখী করার জন্য অনেক আন্দোলন করেছেন, অনেক রক্ত দিয়েছেন। কিন্তু এখনও শিক্ষা সমস্যার সমাধান হয়নি। সীমিত পরিসরে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করা কষ্টকর ব্যাপার। বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, আমি নিজে শিক্ষাবিদ নই, কিন্তু বিভিন্ন মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে দেখেছি আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন প্রয়োজন। এমন পরিবর্তন প্রয়োজন যা দেশের মানুষের আশা-আকাক্সক্ষাকে প্রতিফলিত করবে, শিক্ষার সুফল সকল মানুষের জীবনে পৌঁছাবে। শিক্ষা হবে আন্তর্জাতিক পরিম-লে উন্নত জাতি হিসেবে আমাদের পরিচিতি ও মাধ্যম। শুধু সীমিত লোকের অর্থ বা বিত্ত দিয়ে আমরা এই পরিচিতি অর্জন করতে পারব না। শিক্ষা মানুষকে গণতন্ত্রের প্রতি, ভিন্নমতের প্রতি, ভিন্নমত প্রকাশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শিক্ষা দেয়। খালেদা জিয়া বলেন, দুঃখজনক হলেও, বর্তমান সরকার শিক্ষার মৌলিক লক্ষ্যকে পদদলিত করছে। দেশে একাধিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। প্রত্যেকটি ব্যবস্থার লক্ষ্য ভিন্ন ভিন্ন। এই ভিন্নতার সঙ্গে সমাজে বিরাজমান যে শ্রেণী ও অর্থনৈতিক বৈষম্য আছে তা সম্পর্কিত। উদাহরণ হিসেবে আমরা বলতে পারি, সমাজ যেখানে মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য নিজেই অর্থের সংস্থান করে, সমাজের সুবিধাভোগীরা সেখানে ভিন্ন ধরনের শিক্ষার জন্য অর্থ ব্যয় করে। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে প্রচলিত সব ধরনের শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করতে হবে। কারণ, সকল শিক্ষার মধ্যেই ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবন সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা আছে। খালেদা জিয়া বলেন, দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে বিএনপির নিজস্ব চিন্তা ভাবনা আছে। যেভাবে দেশের জনসংখ্যা বাড়ছে তার সঙ্গে তাল মেলাতে না পারলে ভবিষ্যতে আমাদের চরম প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হবে। এ কারণেই জিয়াউর রহমান তার ১৯-দফা কর্মসূচীতে দেশকে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করার কথা বলেছিলেন। একই সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করতে না পারলে দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারবে না। তিনি আরও বলেছিলেন, জনসমষ্টি আর জনশক্তি এক কথা নয়। জনশক্তিকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এবং সংগঠনের মাধ্যমে জনশক্তিতে পরিণত করলে এটা একটা পাওয়ার, এটা একটা ইকোনমিক প্রোডাক্ট এবং এর মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা আপনারা আয় উপার্জন করতে পারেন। জিয়ার এই চিন্তাকে মাথায় রেখে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে চেয়েছিল। বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, আমরা শিক্ষা কমিশনও গঠন করেছিলাম। কিন্তু রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে অনেক কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি। জনইচ্ছার প্রতিফলনে আগামী দিনে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি শিক্ষাব্যবস্থাকে কেমন করে জনকল্যাণমুখী করবে তা আপনারা ইতোমধ্যে ভিশন ২০৩০ থেকে জেনেছেন। ক্ষমতায় গেলে প্রথম পাঁচ বছরেই আমরা এসব বাস্তবায়িত করতে পারব না। শিক্ষা খাতে জিডিপির শতকরা পাঁচভাগ ব্যয় করে দেশকে নিরক্ষরতার অভিশাপ ও অন্যান্য শিক্ষা সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়া হবে। আমরা এমন ব্যবস্থা গড়ে তুলব যাতে শিক্ষা শুধু ডিগ্রী অর্জনের হাতিয়ার হবে না, হবে জীবনে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার হাতিয়ার। সব পর্যায়ে শিক্ষা অর্জনের সুযোগ লাভের ক্ষেত্রে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, জেন্ডার ও অর্থনৈতিক বাধাসমূহ দূর করা হবে। খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের মানবস¤পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে জনগোষ্ঠীর চিন্তার জগতে পরিবর্তন আনতে হবে। শুধু ডিগ্রী প্রাপ্তির মোহ থেকে দেশের তরুণদের মুক্ত করতে হবে। সামর্থ্য, মেধা ও কর্মসংস্থানের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষা ও শিক্ষকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। পেশাগত ও কারিগরি শিক্ষা, প্রকৌশল বিদ্যা, চিকিৎসা বিদ্যা, বিজ্ঞান শিক্ষা ও বিজ্ঞানের বিভিন্ন মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণা, শত শত ধরনের ট্রেড ও পেশার জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচী মানবসম্পদকে বিকশিত করতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ট্রেড ও পেশার চাহিদা পূরণের জন্য গুণগতভাবে উন্নত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার প্রয়োজন হবে। একই সঙ্গে সকল পর্যায়ে শিক্ষকতার মানও উন্নত করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ ও অধ্যাপকদের সহযোগিতাও গ্রহণ করতে হবে। খালেদা জিয়া বলেন, মানবসম্পদ উন্নয়নে সরকারী ও বেসরকারী খাতকে দক্ষতার সঙ্গে কাজে লাগাতে হবে। প্রযুক্তি ও কারিগরি ইনস্টিটিউটগুলোর ইন্সট্রাক্টর ও ট্রেইনারদের বিশেষ আর্থিক সুবিধা ও অন্যবিধ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের সামাজিক দায়িত্ববোধ কর্মসূচীর সিংহভাগ মানবসম্পদ উন্নয়নে ব্যয় করতে উৎসাহিত করতে হবে। শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থানের নিশ্চিত ব্যবস্থা আমরা করতে চাই। বিশেষ করে বিদেশে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত নারী ও পুরুষ বিশেষ করে যুবকদের স্ব-স্ব ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের জন্য সরকারী ও বেসরকারী খাতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, আমাদের জনসংখ্যার বয়সভিত্তিক কাঠামো যেভাবে বদলে যাচ্ছে তা মোকাবেলায় মূল কৌশল হবে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি করা এবং আকর্ষণীয় চাকরির বাজার সৃষ্টি করা। শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রয়োজনীয় সেতুবন্ধন রচনা করা। অগ্রসর জ্ঞান, প্রযুক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি ও শিক্ষার মাধ্যমে মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা। মানবসম্পদ উন্নয়নে ব্যবহারিক জ্ঞান, তাত্ত্বিক জ্ঞান, প্রায়োগিক ও তাত্ত্বিক গবেষণাসহ সব ধরনের জ্ঞানচর্চার মধ্যে ভারসাম্য অর্জন করতে পারলে পরিবর্তন সাধন করা যাবে। ‘পরিবর্তনের জন্য শিক্ষা’ এই সেøাগান ধারণ করে দিনব্যাপী এ সেমিনারে বেশ ক’টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। প্রথম অধিবেশনে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোঃ সিরাজুল ইসলাম ও শাহ শামীম আহমেদ। দ্বিতীয় অধিবেশনে শিক্ষার বিভিন্ন ধারার ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ সিদ্দিকুর রহমান খান ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী। তৃতীয় অধিবেশনে উচ্চশিক্ষা বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি আফম ইউসুফ হায়দার। চতুর্থ অধিবেশনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকবাল। আর সমাপনী অধিবেশনে ‘শিক্ষার দর্শন’ বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাহবুবউল্লাহ। প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম। এ অধিবেশনে প্রধান অতিথি থাকার কথা ছিল সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্প ধারার সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর। অসুস্থতার কারণে তিনি সেমিনারে না আসায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদকে প্রধান অতিথি করা হয়। এ অধিবেশনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বক্তব্য রাখেন। সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। আর এ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ অধিবেশনে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আখতার হোসেন খান ও বিএনপির সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক হেলেন জেরিন। প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ বলেন, জাতীয় আয়ের (জিডিপি) অন্তত ৫ ভাগ শিক্ষ খাতে ব্যয় করতে না পারলে একটি শিক্ষিত ও সমৃদ্ধ জাতি গঠন করা সম্বব হবে না। স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও আমরা তা পারিনি। তবে আগামীতে আমাদের তা করে দেখাতে হবে। নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবে বিএনপি- মওদুদ নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের জন্য বিএনপি পরবর্তীতে আলাদা একটি রূপরেখা দেবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘নাগরিক ফোরাম’ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। সরকারকে উদ্দেশ করে মওদুদ বলেন, আমরা সুস্থ গণতন্ত্রের জন্য সহায়ক সরকারের কথা বলি, আপনারা এই সরকারকে সহায়ক বলেন, তত্ত্বাবধায়ক বলেন আর নির্দলীয় সরকারই বলেন, যেটাই বলেন না কেন, আমরা এমন একটি সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই যে সরকারের নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক স্বার্থ থাকবে না। এ জন্য আমরা আলাদা রূপরেখা দেব। মনে করবেন না, আমরা বসে আছি। আমরা রূপরেখা দেব এবং বলব কিভাবে এ সহায়ক সরকার গঠন করা যাবে। আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার বলেন আর যাই বলেন রূপরেখা বিএনপিকে দিতে হবে। লড়াইয়েও থাকতে হবে আবার সমঝোতার কথা বলতে হবে। এখন কি আপনারা আন্দোলন করবেন নাকি সমঝোতা করবেন সেটাও আপনাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদি সহায়ক সরকারের কথা বলেন- তাহলে সাংবিধানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীকে বাদ দিতে পারবেন না। তাই আন্দোলন এবং সমঝোতা দুটো নিয়েই ভাবতে হবে। আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহিল মাসুদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কবীর মুরাদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল প্রমুখ।
×