ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

৯৯ দেশ আক্রান্ত

দেশে দেশে সাইবার হামলা ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার শনাক্ত

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৪ মে ২০১৭

দেশে দেশে সাইবার হামলা ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার শনাক্ত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৯৯ দেশ সাইবার হামলার শিকার হয়েছে। হামলাকারীরা বিশ্বজুড়ে ম্যালওয়্যার নামের একটি সফটওয়্যার ছেড়ে দিয়েছে। অজান্তেই যদি কেউ এখানে ‘ক্লিক’ করে তাহলে ওই কম্পিউটার আক্রমণের শিকার হবে। তবে বিটিআরসি জানিয়েছে, জাতীয় ডাটা সেন্টারসহ সরকারী সব ওয়েবসাইট নিরাপদ রয়েছে। হামলার হাত থেকে রক্ষা পেতে যথেষ্ট সতর্ক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আক্রমণকারী ম্যালওয়্যারটি এখন অনেক দেশই শনাক্ত করতে পেরেছে। ফলে প্রতিরোধ ব্যবস্থাও গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশে সাইবার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (সার্ট) কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে সাইবার আক্রমণের বিষয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বিশ্বের ৯৯টি দেশ এ আক্রমণের শিকার হলেও বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত নিরাপদ রয়েছে। আমরা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হব। কারণ এখন ম্যালওয়্যারটি অনেকটাই চিহ্নিত হয়েছে। সব জায়গায় সতর্ক করা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে এতবড় আক্রমণ আগে কখনও হয়নি। এবারই প্রথম এমন আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। বেশিরভাগ উন্নত দেশ আক্রমণের শিকার হয়েছে। আমরা এখনও নিরাপদ অবস্থানে রয়েছি। তবে ঝুঁকি তো একটা থেকেই যায়। এরপরও প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিটিআরসি জানিয়েছে, সাইবার হামলার ওপর নজর রাখা হচ্ছে। সাইবার আক্রমণে যে ম্যালওয়্যার ব্যবহার করেছে হ্যাকাররা তা উইন্ডোজের নিরাপত্তা ত্রুটি কাজে লাগিয়ে করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সরকারী সব সেবার ক্ষেত্রে উইন্ডোজের পরিবর্তে লিনাক্স ব্যবহার করা হয়ে থাকে। দেশে সাইবার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (সার্ট) কাজ করে যাচ্ছে। সার্ট জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ নিরাপদ রয়েছে। বেসরকারী কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কম্পিউটার আক্রমণের শিকার হয়েছে কি-না তা সার্ট বলতে পারেনি। সাইবার আক্রমণের শিকার হলে দুই-তিন দিনের মধ্যে জানা যাবে। তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার বলেন, বিশ্বজুড়ে সাইবার হামলার ঘটনাটি যে কত বড় ভয়ঙ্কর, এটা ভাবাই যায় না। হামলাকারীরা ম্যালওয়্যারটি দুনিয়াজুড়ে ছড়িয়ে দিয়েছে। কেউ যদি ম্যালওয়্যারটিতে ক্লিক করে তাহলে তার কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেবে হামলাকারীরা। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, স্পেন, ইতালি ও তাইওয়ানের মতো দেশ আক্রমণের শিকার হয়েছে। তাহলে বুঝতে হবে আক্রমণটি কত বড়। দেশের জাতীয় ওয়েব পোর্টালে ২৫ হাজার ওয়েবসাইট রয়েছে। একবার যদি এখানে হামলা ঘটে তাহলে ২৫ হাজার ওয়েবসাইট বিকল হয়ে যাবে। তথ্য চলে যাবে হামলাকারীদের হাতে। ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পার হয়ে গেছে, এরপরও বিটিআরসি জরুরীভিত্তিতে কোন বৈঠক ডাকেনি। বিশ্বজুড়ে এমন দুর্যোগ এর আগে কখনও হয়নি। এ অবস্থায় বিটিআরসির জরুরী বৈঠক ডেকে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা উচিত। এটা না করলে আক্রমণের চরম ঝুঁকি থেকে যাবে। তখন কম্পিউটার ব্যবস্থায় মহাবিপর্যয় দেখা দেবে। তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা মনে করছেন, বাংলাদেশ ঠিক আক্রমণের শিকার কি-না তা এখনও জানা যায়নি। তবে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে ছড়ানো হামলায় বিশ্বের উন্নত দেশগুলোই বেশি আক্রান্ত হয়েছে। যে ম্যালওয়্যারটি ছাড়া হয়েছে তা আসলে র‌্যানসমওয়্যারের মধ্যে পড়ে। যেখানে নেটওয়ার্ক পাবে সেখানেই এটা ছড়াতে পারে। বেশিরভাগ সময় যারা অনলাইনে থাকবেন তাদের কম্পিউটার আক্রমণের শিকার হওয়ার ঝুঁকি বেশি। র‌্যানসমওয়্যার হচ্ছে পরিচিত ম্যালওয়্যার বা ক্ষতিকর সফটওয়্যার প্রোগ্রাম। কম্পিউটার, মোবাইল ও ট্যাবের মতো যন্ত্রের মধ্যে র‌্যানসমওয়্যার সফটওয়্যার ঢুকিয়ে দিতে পারলে যন্ত্রটির নিয়ন্ত্রণ হামলাকারীদের হাতে চলে যায়। ব্যক্তিগত পর্যায়ে খুব প্রয়োজনীয় তথ্য না থাকলে পিসি ফরম্যাট দিলেই কাজ হবে। র‌্যানসমওয়্যারসহ যে কোন ফিশিং আক্রমণ সাধারণত অনলাইনে অজান্তেই হতে পারে। যেখান থেকে ম্যালওয়্যারটি ছাড়া হয়েছে সেখানকার কোন ফাইলে ক্লিক করা থেকে সাবধান থাকতে হবে। ম্যালওয়্যারটিতে ক্লিক করলেই সাইবার আক্রমণের শিকার হয়ে যাবে। জানা গেছে, শুক্রবার বিশ্বজুড়ে একযোগে বড় ধরনের সাইবার হামলার ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন দেশের কম্পিউটার ব্যবস্থায় হানা দেয় হ্যাকাররা। হ্যাকিংয়ের শিকার দেশগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, স্পেন, ইতালি ও তাইওয়ানসহ ৯৯টি উন্নত প্রযুক্তির রাষ্ট্র। মাইক্রোসফট বলেছে, জধহংড়স: ডরহ ৩২. ডধহহধঈৎুঢ়ঃ নামের ম্যালওয়্যারটি শনাক্ত করা হয়েছে। এখন ম্যালওয়্যারটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ চলছে।
×