ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আবাসন খাতে নিবন্ধন ব্যয় ৭ শতাংশ চায় রিহ্যাব

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ১৪ মে ২০১৭

আবাসন খাতে নিবন্ধন ব্যয় ৭ শতাংশ চায় রিহ্যাব

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ফ্ল্যাট, প্লট কিনলে অর্থের উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন না করার দাবি জানিয়েছে রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহাব)। রিহাব বলেছে, অর্থ পাচার ঠেকাতে কোন শর্ত ছাড়া আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া প্রয়োজন। এজন্য আয়কর অধ্যাদেশের ১৯বি ধারা সংশোধন করে যুগোপযোগী করা জরুরী। কালো টাকা ব্যবহারে অন্তত আগামী ১০ বছর প্রশ্ন না করার দাবি জানিয়েছেন এ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে এসব দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, নির্মাণশিল্পের কাঁচামাল এমএস রডের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হলে এ শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে খরচ বাড়বে। এ ভ্যাটহার দেড় শতাংশ করার প্রস্তাব দেয় রিহাব। এছাড়া আবাসন খাতের নিবন্ধন ব্যয় ১৪ শতাংশ। এটি ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার সুপারিশ করেছে রিহাব। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেনÑ রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, রিহ্যাবের পরিচালক জহির আহমেদ এবং রিহ্যাবের কো-চেয়ারম্যান কামাল মাহমুদ। রিহাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, অপ্রদর্শিত আয়ে ফ্ল্যাট, জমি কিনলে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা অর্থের উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারে। আমরা চাই, ঢালাওভাবে প্রশ্ন না করে যাদের সন্দেহ হবে, তাদেরই যেন প্রশ্ন করা হয়। বর্তমানে আবাসন খাতে যথাযথ অর্থপ্রবাহ না থাকা ও নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় এ খাতের ক্রেতারা কোন বিনিয়োগে যাচ্ছে না। ফলে নতুন করে আবাসন খাত আরও সঙ্কটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ২০০৮-০৯ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের আওতায় আবাসন খাতে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ ব্যবস্থার প্রচলন ছিল, যা এ খাতে ক্রেতাদের জন্য অনেক ফলপ্রসূ ভূমিকা রেখেছিল। অনেকে নিজের কিছু মূলধন নিয়ে প্রায় ভাড়ার টাকায় ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ এ ঋণ সুবিধা বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে এ খাত সঙ্কটের মধ্যে পড়ে। লিয়াকত আরও বলেন, সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ৩০ বছরের কিস্তিতে ঋণ দিলে ক্রেতাসাধারণ ভাড়ার সমান কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করতে পারবে। এক্ষেত্রে সরকার বাংলাদেশ বিল্ডিং ফিন্যান্স কর্পোরেশনকে তহবিল প্রদানের মাধ্যমে আবাসন খাতে ঋণ বৃদ্ধি করতে পারে। এ অবস্থায় আবাসন খাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ৩০ বছর মেয়াদে দীর্ঘমেয়াদী রি-ফাইন্যান্সিং চালুকরণ জরুরী, যাতে মাসিক কিস্তি বাসা ভাড়ার সমান হয়। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আরও বলেন, সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থার প্রচলন একদিকে যেমন এ শিল্পকে এগিয়ে নেবে ও বাজারে অর্থের লেনদেন বাড়বে, অন্যদিকে সরকারও তার রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবে। যেসব ফ্ল্যাট প্রথম বিক্রির পর পাঁচ বছরের মধ্যে পুনরায় বিক্রি হবে, কেবল সেক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশনে ১ শতাংশ হারে বিক্রির জন্য সেকেন্ডারি মার্কেট চালু করা আবশ্যক। পাঁচ বছরের বেশি সময়ের ক্ষেত্রে ২ শতাংশ করা দরকার। ফলে নামমাত্র রেজিস্ট্রেশন ব্যয় নির্ধারণ করে সেকেন্ডারি বাজার ব্যবসা প্রচলন করা জরুরী। লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, প্রতিটি নির্মাণসামগ্রীর প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি ভ্যাট সরকার পাচ্ছে ফ্যাক্টরি ও পাইকারি বিক্রেতা থেকে। ভবন নির্মাণকালে অধিকাংশ ডেভেলপার সরাসরি নগদ অর্থে নির্মাণসামগ্রী ও সেবা ক্রয় করে থাকে। ফলে ভ্যাট ও উৎসে কর সংগ্রহের দায়িত্ব পালন সম্ভবপর হয় না। এছাড়া অনেক নির্মাণ আইটেমের সরবরাহকারী প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে না; তাই এসব ভেন্ডারের কাছ থেকে কাগজপত্র সংগ্রহ করা যায় না। ফলে ডেভেলপাররা মারাত্মককভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ অবস্থায় সাপ্লাইয়ার ভ্যাট ও উৎসে কর সংগ্রহের দায়িত্ব থেকে ডেভেলপারকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
×