ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

১৯ বছর পর ফাইনালে দেখা হচ্ছে জুভেন্টাস-রিয়ালের

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১৩ মে ২০১৭

১৯ বছর পর ফাইনালে দেখা হচ্ছে জুভেন্টাস-রিয়ালের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে ২-১ গোলে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে উঠে গেছে রিয়াল মাদ্রিদ। কেননা সেমির প্রথম লেগে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর হ্যাটট্রিকে ৩-০ গোলে জিতেছিল জিনেদিন জিদানের দল। দুই লেগ মিলিয়ে তাই রিয়ালের জয় ৪-২ গোলে। এর আগে ফাইনাল নিশ্চিত করে ইতালিয়ান পরাশক্তি জুভেন্টাস। আগামী ৩ জুন কার্ডিফে ফাইনাল মহারণে দেখা হবে রিয়াল ও জুভেন্টাসের। ফলে আবারও ফিরে আসছে ১৯ বছর আগের স্মৃতি। ১৯৯৮ সালে এ দু’দল ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল। আমস্টারডামে সেবার জুভেন্টাসকে ১-০ গোলে হারিয়ে সপ্তম শিরোপা জিতেছিল স্প্যানিশ পরাশক্তিরা। এবার সেই হারের বদলা নেয়ার সুযোগ এসেছে বুফনদের সামনে। ২০১৪ ও ২০১৬ সালের ফাইনালসহ এই নিয়ে সম্প্রতি তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগে এ্যাটলেটিকোকে হারিয়ে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখলো রিয়াল। বুধবার রাতে ভিসেন্টে ক্যালডেরনে ম্যাচের শুরুতেই রিয়াল গোলরক্ষক কেইলর নাভাস খুব কাছে থেকে কোকের শট আটকে দেন। ফার্নান্ডো টেরেসের হেড গোলবারের ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। অন্যদিকে রিয়ালের কাসেমিরোর হেড দারুণ দক্ষতায় রক্ষা করেন ইয়ান ওবলাক। ১২ মিনিটে কোকের কর্নার থেকে সাউল শক্তিশালী হেডে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে মৌসুমের চতুর্থ গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। তিন মিনিট পরে বক্সের ভেতর রাফায়েল ভারানের ফাউল থেকে পেনাল্টি আদায় করেন টোরেস। এর আগে রিয়ালের বিরুদ্ধে দুটি পেনাল্টি মিস করা গ্রিজম্যান এবার আর ভুল করেননি। স্পট কিক থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এই ফ্রেঞ্চম্যান। এরপর দুই দলের মধ্যেই শারীরিক চ্যালেঞ্জ ও শক্তিমত্তা লক্ষ্য করা গেছে যা সামলাতে তুরস্কের রেফারি কানিয়েট কাকিরের বেশ অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়েছে। ৩৭ মিনিটের মধ্যে দুই দলের পাঁচজন খেলোয়াড়কে হলুদ কার্ড দেখাতে বাধ্য হন রেফারি। বিরতির ঠিক আগে রিয়াল তাদের গুরুত্বপূর্ণ এ্যাওয়ে গোলের সন্ধান পান। করিম বেনজামা তিনজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বল বাড়িয়ে দিলে টনি ক্রস পোস্টে শট নেন। ওবলাক আবারও দারুণ দক্ষতায় তা রক্ষা করলেও ফিরতি বল থেকে ইস্কো গোল করেন। বিরতির পর গত তিন ম্যাচে আট গোল করা রোনাল্ডো ওবলাককে পরাস্ত করলেও অফসাইডের কারণে তা বাতিল হয়ে যায়। ম্যাচ শেষে রিয়াল তারকা রোনাল্ডো বলেন, রিয়ালের অভিজ্ঞতাই পার্থক্যটা গড়ে দিয়েছে। সি আর সেভেন বলেন, আমরা জানতাম একটা গোল পেলেই আমরা তাদের শেষ করে দিতে পারি। আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা আছে এবং আমরা সেটা দেখিয়েছি। রোনাল্ডোর বিশ্বাস তার দলের সামর্থ্য আছে ইতিহাস গড়ার। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবকিছুই হতে পারে কিন্তু আমি দলটাকে ভাল অবস্থায় দেখছি। আমরা শক্তিশালী। আমাদের যারা নিয়মিত খেলে বা কম খেলে তারা সবাই খুবই ভাল খেলোয়াড়। রিয়াল ডিফেন্ডার মার্সেলো বলেন, দুই গোল হজম করলেও শেষদিকে আমরাই সেরা ছিলাম। শুরুতে আমরা তাদের গোল করার সুযোগ দিয়েছি যা আমরা চাইনি। কিন্তু আমরা জানতাম, লড়াইটা কঠিন হতে যাচ্ছে। এরপর আমরা নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করি। শুরুতে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে ভয় পেয়েছিলেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এক মুহূর্তের জন্যও না। আমরা রিয়াল ও আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করি। সবসময় প্রতিপক্ষকে সমীহ করি। বিদায় নিলেও দলের খেলোয়াড়দের প্রশংসা করেন এ্যাটলেটিকো কোচ দিয়াগো সিমিওনে। তিনি বলেন, বিস্ময়কর একটা ম্যাচ ছিল। আমাদের দলের অনেক খেলোয়াড়ই গ্রেট পারফর্ম করেছেন। অধিনায়ক গাবি ও ডিফেন্সের অন্যতম স্তম্ভ দিয়াগো গডিনের প্রশংসা করে এ্যাটলেটিকো কোচ কিছুটা আফসোসের সুরে বলেন, এটা লজ্জার যে গাবি ও গডিনের মতো কোন খেলোয়াড় আমরা পাইনি, যারা ক্লাবের জন্য জীবন দিতে পারে। অন্যদিকে ফাইনাল নিশ্চিত হওয়ার পর রিয়াল কোচ মজেছেন স্বদেশী তারকা বেনজামার বন্দনায়। বেনজামার ড্রিবলিং নিয়ে ফরাসী কোচ বলেন, আমি জানি না তখন করিমকে কতজন খেলোয়াড় আক্রমণ করেছিল। আমি এটাও জানি না, সে এতজনকে কিভাবে কাটাল। জিদান বলেন, ফুটবল শুধু এটা বিচার করে না যে কে গোল করল। করিম যেটা করেছে সেটা ও করে।
×