ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ফেডারেশন কাপ শুরু আজ

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১৩ মে ২০১৭

ফেডারেশন কাপ শুরু আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মৌসুম-সূচক ফুটবল আসর ‘ফেডারেশন কাপ’ সময়মতো শুরু আদৌ হবে কি না এ নিয়ে সংশয় ছিল যথেষ্টই। তার কারণ নিজেদের পাওনা বুঝে পেতে ১২ ক্লবের মধ্যে সাতটি ক্লাব বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে) লিখিত আল্টিমেটাম দিয়েছিল। বাফুফে সেটা আমলে নিয়ে ক্লাবগুলোর পাওনা পরিশোধ করার আশ^াস দেয়াতে অবশেষে যথাসময়েই মাঠে (ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে) গড়াতে যাচ্ছে আসরটি। আজ বিকেল ৫টায় টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের মুখোমুখি হচ্ছে পেশাদার লীগের নবাগত দল সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড। এরপর সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেড মোকাবেলা করবে টিম বিজেএমসির। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ক্লাবগুলোর (ক্লাবগুলো হচ্ছে : মোহামেডান, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, আরামবাগ, মুক্তিযোদ্ধা, ব্রাদার্স ও সাইফ) দাবি-দাওয়ার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার এক জরুরী সভায় বসে বাফুফের প্রফেশনাল লীগ কমিটি। সেখানেই সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ক্লাবগুরোর দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের। উল্লেখ্য, গত লীগসহ আগের সব বকেয়া পরিশোধ করা, আসন্ন লীগে পার্টিসিপেশন মানি কত টাকা থাকবে তা পরিষ্কার করা, চ্যাম্পিয়ন রানার্সআপ দল প্রাইজমানি কত টাকা পবে তা জানানোসহ আরও কিছু দাবিনামা বাফুফেতে চিঠির মাধ্যমে গত বুধবার পেশ করে ক্লাবগুলো। ক্লাবগুলোর আল্টিমেটাম দেয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বাফুফে যদি সব পাওনা পরিশোধ না করে তাহলে এই সাত ক্লাব কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে বলে জানা যায়, যদিও তারা ফেডারেশন কাপ বর্জন করবেÑ এখনও এমন কিছু জানায়নি। এদিকে প্রাইজমানি বাড়লো ফেডারেশন কাপে। বৃহস্পতিবার বাফুফের প্রফেশনাল লীগ কমিটি জরুরী সভায় বসে ফেডারেশন কাপের প্রাইজমানি ও পার্টিসিপেশন মানি বাড়িয়ে দেয়। আগে বাফুফে ঘোষণা দিয়েছিল ফেডারেশন কাপে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক দল পাবে ১ লাখ টাকা করে। বৃহস্পতিবারের সভায় তা দ্বিগুণ করে ২ লাখ টাকা করা হয়। চ্যাম্পিয়ন প্রাইজমানি ৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৬ লাখ ও রানার্সআপ দলের প্রাইজমানি ৩ থেকে বেড়ে হয় ৪ লাখ টাকা। জানা গেছেÑ সামনে যেহেতু রমজান সাত ক্লাব ১৩ মে থেকেই ফেডারেশন কাপ খেলতে রাজি হয়। সভায় লীগ সংক্রান্ত দাবিগুলোর বিষয়টি লীগের আগেই সমাধানের সিদ্ধান্ত হয়। এ আসরের ৪ গ্রুপের মধ্যে বর্তমান শিরোপাধারী ঢাকা আবাহনী পড়েছে কিঞ্চিৎ কঠিন গ্রুপে। গ্রুপ ‘এ’তে তাদের প্রতিপক্ষ সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। নতুন মৌসুমে ঢাকা আবাহনীর ৫ ফুটবলার যোগ দিয়েছেন সাইফে (শাকিল আহমেদ, হেমন্ত ভিনেসেন্ট বিশ^াস, জুয়েল রানা, তপু বর্মণ এবং আরিফুল ইসলাম)। এই ৫ ফুটবলারকেই দলের জন্য ‘তরূপের তাস’ বলে ভাবছে সাইফ। গত মৌসুমে আবাহনীর একাধিক শিরোপা জয়ে (লীগ এবং ফেডারেশন কাপ) এদের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। সাইফের কোচ সম্ভবত এদের আজ প্রথম একাদশে খেলাতে পারেন। একদিকে এটা যেমন সাইফের আজ নিজেদের প্রমাণ করার ম্যাচ, তেমনি আবাহনীও যে এই ৫ ফুটবলার ছাড়া জিততে পারেÑ সেটা প্রমাণ করার ম্যাচ। সবমিলিয়ে তাই এই ম্যাচকে নিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের মাঝে সঞ্চার হয়েছে কৌতূহলের। গত ৩ মে এই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই এএফসি কাপে ভারতের জেএসডব্লিউ ব্যাঙ্গালুরুকে হারায় (২-০) আবাহনী। দলের ক্রোয়েশিয়ান কোচ দ্রাগো মামিচ মনে করছেন এই জয়ই তাদের অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে, ‘ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে জয়টা ছেলেদের উজ্জীবিত করেছে। দলের সবাই ইতিবাচক ও পরিশ্রমী। আশা করছি ভাল কিছুই অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।’ এদিকে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের ব্রিটিশ কোচ কিম গ্রান্ট বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া। সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি শুধু ঢাকা আবাহনীই নয়, বড় সব দলের সঙ্গে লড়াই করে ভাল কিছুই উপহার দেবে সাইফ স্পোর্টিং।’ গ্রুপ ‘এ’তে আছে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র এবং সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড; ‘বি’ গ্রুপে শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেড, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেড এবং ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব; গ্রুপ ‘সি’তে চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড, আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ এবং মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব; ‘ডি’ গ্রুপে রয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেড, রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি এবং টিম বিজেএমসি। এটা হবে ফেডারেশন কাপের ২৯তম আসর। ২৮তম ফেডারেশন কাপের (২০১৬) চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ঢাকা আবাহনী। রানার্সআপ হয়েছিল আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। অংশগ্রহণকারী দলগুলো নিজ নিজ গ্রুপে রাউন্ড রবিন লীগ পদ্ধতিতে খেলবে। প্রত্যেক গ্রুপ থেকে সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জনকারী দুটি দল করে আটটি উন্নীত হবে কোয়ার্টার ফাইনালে। এরপর সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল। ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ৪ জুন। টুর্নামেন্ট চলাকালে এএফসি কাপে খেলতে যাবে ঢাকা আবাহনী। তবে ঢাকা আবাহনী দেশের বাইরে গেলেও টুর্নামেন্ট চলমান থাকবে। টিকেটের ব্যবস্থা থাকবে দর্শকদের জন্য। সাধারণ গ্যালারি ২০ টাকা এবং ভিআইপি গ্যালারি ৫০ টাকা। অংশগ্রহণ বাবদ ১ লাখ টাকা করে পাবে ক্লাবগুলো। চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ৫ লাখ টাকা এবং রানার্সআপ দল পাবে ৩ লাখ টাকা। এছাড়া ওয়ালটনের পক্ষ থেকে সেরা খেলোয়াড় এবং সর্বোচ্চ গোলদাতাকে বড় এবং ভালমানের রেফ্রিজারেটর দেয়া হবে। টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষক ওয়ালটন। পাওয়ারড বাই প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড। টুর্নামেন্টের কো-স্পন্সর হচ্ছে : ট্রান্সকম ফুড লিঃ, প্রগতি ইনস্যুরেন্স, ইস্টার্ন ব্যাংক লিঃ, প্রাইম ডিস্ট্রিবিউশন গ্রুপ, ট্রেজার সিকিউরিটিজ লিঃ এবং আই এস পি পার্টনার আমরা নেটওয়ার্ক।
×