ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গম ও ধানে ব্লাস্ট প্রতিরোধে এগিয়ে আসুন ॥ বিজ্ঞানীদের কৃষিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ১৩ মে ২০১৭

গম ও ধানে ব্লাস্ট প্রতিরোধে এগিয়ে আসুন ॥ বিজ্ঞানীদের কৃষিমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের বিভিন্ন জেলায় গম ও ধানে ব্লাস্ট রোগের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞানীদের এ রোগ প্রতিরোধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। একই সঙ্গে তিন দশকের বেশি সময় ধরে গমে ব্লাস্ট রোগ বিস্তারলাভ করলেও কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় ইন্টারন্যাশনাল মেইজ এ্যান্ড হুইট ইমপ্রুভমেন্ট সেন্টারের (সিমিট) কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি। ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধে আউশ ফসল চাষের গুরুত্ব জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এক সময় আউশের প্রতিযোগী ছিল পাট। এখন অনেক এলাকায় পানিস্বল্পতায় পাট চাষ কমছে, সেখানে আউশে যেতে পারি। আউশে এখন ভ্যারাইটাল ইমপ্রুভমেন্টের জন্য চেষ্টা করছি। সেক্ষেত্রে আমরা সফল হতে পারব। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) সম্মেলনকক্ষে ‘ধান ও গমে ব্লাস্ট রোগ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে গবেষক, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা ব্লাস্ট প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে মতামত তুলে ধরেন। কৃষিমন্ত্রী বলেন, ২০১৫-১৬ সালে যখন গমে ব্লাস্ট দেখা দেয় তখন আমি মেক্সিকোয় গেলাম। সেখানে সিমিটের হেডকোয়ার্টার। সেখানে বিভিন্ন সেশনে যখন ব্লাস্ট নিয়ে কথটা উঠল তখন আমি বলেছি, ৩১ বছর একটি রোগ এ্যাটাক করেছে- আপনারা এখানে কিভাবে বসে আছেন? সারা পৃথিবীর সব বাঘা বিজ্ঞানী আছেন এখানেÑ কেন আপনারা এটাকে ইগনোর করলেন? আমি এমনিতেই এখানে বলতে আসিনি- সিমিটকে এক লাখ ডলার চাঁদা দিয়ে কথা বলার অধিকার অর্জন করে এসেছি। এখানে ভিক্ষাও চাইতে আসিনি, মাগনাও আসিনি। তিনি বলেন, আমাদের বিজ্ঞানীবৃন্দে; তাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। কিছু গাফিলতিও আছে অস্বীকার করব না। তার পরেও তারা যেটুকু কাজ করেন, তা যে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন থেকে... তারা যে আহামরি সিমিট দেখে অন্তত আমার তা মনে হয়নি। ৩১ বছর একটি ডিজিজকে তারা এ্যাড্রেস করল না! তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশেও এ ডিজিজ আছে। তারা স্বীকার করে না। তাদের এনাফ ল্যান্ড, তারা হয়ত ওই এরিয়া বাদ দিয়ে অন্যখানে যায়। তারা স্বীকার করে না দুটি কারণে- প্রথমত তাদের অনেক জায়গা আছে; দ্বিতীয়ত তারা যেহেতু আন্তর্জাতিক বাজারে গমের বিক্রেতা, স্বীকার করলে বাজার পড়ে যেতে পারে। তাই তারা চেপে যায় কথা বলে না। এটাই বাস্তবতা। মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমাদের গম যেমন দরকার তেমনি ভুট্টা ও ধানও দরকার। তাই ক্রপ রোটেশন নিয়ে ভাবতে হবে। একই জমিতে রাইস-রাইস-রাইসে থাকব না, রাইস-মেইজ-হুইটে আসব- এক্সটেনশনে বা রিসার্চার যারা আছেন তাদের এটি মাথায় নিয়ে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, বলা হচ্ছে কুয়াশার জন্য গমে ব্লাস্ট হচ্ছে। কিন্তু আমরা জানি দীর্ঘদিন থেকেই গমে কুয়াশা পড়লে দড়ি দিয়ে টেনে দেয়া হতো যাতে ময়েশ্চার রক্ষা হয়। এ ধরনের গবেষণার প্রবণতাও পরিহার করতে হবে। ওই কর্মশালায় কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উর্ধতন কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×