ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চাঁপাইয়ে পাওয়ার জেল গানপাউডার ও জিহাদী বইসহ সাত জেএমবি গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ১৩ মে ২০১৭

চাঁপাইয়ে পাওয়ার জেল গানপাউডার ও জিহাদী বইসহ সাত জেএমবি গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সাড়ে ৫২ কেজি পাওয়ার জেল, সাড়ে ৪ কেজি গান পাউডার ও ২২টি জিহাদী বইসহ জেএমবির ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো, নাচোল উপজেলার গুঠইল গ্রামের তাইফুর রহমানের ছেলে হারুন অর রশিদ (২৫), গুঠইল গ্রামের মোস্তফার ছেলে কামাল উদ্দীন (৩২), বেড়াচকি গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে নাসিম রেজা সাহিন (২০), শ্রীরামপুর গ্রামের কেতাবুল ইসলামের ছেলে ফিরোজ (২২), শিবগঞ্জ উপজেলার শিবনগর কাইঠ্যাপাড়া গ্রামের এসলামের ছেলে বাবু (২২), রাঘবপুর গ্রামের নেশ মোহাম্মদের ছেলে আজিজুল হক (৩৮) ও সদর উপজেলার দেবীনগর ফাটাপাড়া গ্রামের মোঃ গুটুর ছেলে আব্দুল হাকিম (২০)। চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টিএম মুজাহিদুল ইসলাম শুক্রবার বিকেলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার দিবাগত রাতে জেলার নাচোল উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রথমে হারুনুর রশিদকে জেহাদী বইসহ ও পরে অপর তিনজনকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। ওই চারজনের তথ্যের ভিত্তিতে ওই রাতেই রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার মাটিকাটা গ্রামের জঙ্গী আস্তানা ঘিরে ফেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ এবং পরে রাজশাহী পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ওই টিম ফিরে আসে। তাদের তথ্যের ভিত্তিতেই পরদিন বৃহস্পতিবার ভোরে শিবগঞ্জ উপজেলার শিবনগর গ্রামের বাবুর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মাটির নিচে লুকানো একটি ড্রাম থেকে সাড়ে ৪ কেজি গান পাউডার ও ৪২০টি টিউবে সাড়ে ৫২ কেজি এক্সপ্লোসিভ পাওয়ার জেল উদ্ধার করে পুলিশ। পাওয়ার জেলের প্যাকেটের গায়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্লোসিভ প্রাইভেট লিমিটেড লেখা রয়েছে। ওইদিনই রাঘবপুর গ্রাম থেকে আজিজুলকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে শুক্রবার ভোর রাতে সদর উপজেলার ফাটাপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে আব্দুল হাকিমকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি জানান, হাকিমের ভাই খাইরুলের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সে পালিয়ে যায়। খাইরুল জেএমবির অন্যতম গ্রেনেড সরবরাহকারী। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান তিনি। রাজশাহীতে আটক ১ স্টাফ রিপোর্টার রাজশাহী থেকে জানান, মহানগরীর তেরখাদিয়া এলাকায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন বাড়ি ঘেরাও করে ব্লক রেইড চালিয়েছে মহানগর পুলিশ। শুক্রবার দুপুর আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত এ অভিযান চলে। এ সময় একটি বাড়ি থেকে জিহাদী বইসহ একজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে আটক ব্যক্তির নাম ও পরিচয় জানায়নি পুলিশ। পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে নগরীর তেরখাদিয়া উত্তরপাড়া কাঁচাবাজার ও ডাবতলার এলাকায় ঘিরে রেখে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। এ সময় একটি বাড়ি থেকে জিহাদী বইসহ এক শিবিরকর্মীকে আটক করা হয়। নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি আমানুল্লাহ আমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুপুরের পর তেরখাদিয়ার নির্দিষ্ট এলাকা ঘিরে পুলিশ বিভিন্ন বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় একটি বাড়ি থেকে জিহাদী বইসহ এক শিবিরকর্মীকে আটক করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ তার নাম ঠিকানা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে। নাটোরে জঙ্গী বিরোধী অভিযান ব্যর্থ নিজস্ব সংবাদদাতা নাটোর থেকে জানান, শহরের বড় হরিশপুর এলাকায় জঙ্গী আস্তানা সন্দেহে দুটি বাড়ি ঘিরে রেখেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে শহরের হরিশপুর এলাকায় বগুড়া ডিবি পুলিশের একটি দল এবং জেলা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান শুরু করে। স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে শহরের হরিশপুর এলাকায় জেলা পুলিশ লাইন্সসংলগ্ন পশ্চিম পাশের একটি তিনতলা বাড়ি এবং অপর একটি বাড়ি জঙ্গী আস্তানা সন্দেহে ঘিরে ফেলে পুলিশ। তিনতলা ওই বাড়ির মালিক সাবেক যুগ্ম সচিব মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন এবং পাশের একতলা বাড়ির মালিক ডাঃ আবদুস সামাদ। তিনতলা বাড়িটিতে পুলিশের এক কর্মকর্তা, এক নারী প্রকৌশলী এবং পাশের একতলা বাড়িটিতে হাসপাতালের দুইজন মহিলা স্টাফ ও ওষুধ কোম্পানির একজন রিপ্রেজেন্টটেটিভ ভাড়া থাকেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। অভিযানের সময় পুরো এলাকা ঘিরে রাখে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ, সংবাদকর্মী ছাড়াও স্থানীয় উৎসুক জনতা ভিড় করে। নিরাপত্তার অজুহাতে বাড়িটির ৪০০ গজের মধ্যে কাউকে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় রুদ্ধশ্বাস অভিযান শেষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা একে একে বেরিয়ে যান। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে, নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খায়রুল আলম জানান, নিয়মিত তল্লাশির অংশ হিসেবে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সন্দেহজনক কোন কিছু না পাওয়ায় অভিযান সমাপ্ত করা হয়।
×