ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রমজান সামনে রেখে অস্থির ভোগ্যপণ্যের বাজার

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ১৩ মে ২০১৭

রমজান সামনে রেখে অস্থির ভোগ্যপণ্যের বাজার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রমজান মাস সামনে রেখে চড়া ভোগ্যপণ্যের বাজার। স্বস্তি নেই সবজির বাজারেও। বেড়েছে ছোলা, চিনি, রসুনের দাম। চাল, ভোজ্যতেল, আটা ও ডালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাছ ও মাংস আগের মতো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে সবজির দাম। দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগিরও। পণ্যমূল্য সহনীয় রাখতে আগামী সোমবার থেকে সারাদেশে সরকার নিয়ন্ত্রিত সংস্থা টিসিবি ন্যায্যমূল্যে ভোগ্যপণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। আগামী ঈদ-উল ফিতর পর্যন্ত সংস্থাটির ট্রাকসেল কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে। শুক্রবার রাজধানীর কাপ্তান বাজার, ফকিরাপুল বাজার এবং যাত্রাবাড়ী বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দর দামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। কাপ্তান বাজারের মুদি পণ্যের বিক্রেতা গনি জানান, ছোলা ও চিনির দাম আরেক দফা বেড়েছে। রমজান সামনে রেখে পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে, ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ এবং চিনি ৭০-৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এছাড়া শব-ই-বরাত ইস্যুতে বেড়েছে বুটের ডালের দাম। দাম বেড়ে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫৫-১৬৫, রসুন ২২০-২৪০ এবং ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৮-৩০ টাকায়। প্রতিকেজি সরু চাল ৫০-৫৬, চাল মাঝারি ৪৬-৫০ এবং মোটা চাল ৪২-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিন ৮২-৮৪ পাঁচ লিটারের বোতল ৪৯০-৫২০, মশুর ডাল ৭৫-১৩৫ এবং প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০-৩২ টাকায়। এছাড়া প্রতিকেজি গরুর মাংস ৫০০-৫৫০ এবং খাসির মাংস ৬৫০-৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রোজায় আরও দাম বাড়ার আশঙ্কা করছেন ভোক্তারা। শুক্রবারের বাজারে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম প্রতিকেজিতে ৫-১০ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে। শসা, ঝিঙ্গা, ঢেঁড়শ, টমোটো, বেগুন, করলা, ধুন্দুল, চিচিঙ্গার কেজিপ্রতি বেড়েছে ৫ টাকা। শসা ৪০ টাকা, জিঙ্গা ৬০ টাকা, টমোটো ৪০, ঢেঁড়শ ৬০ টাকা, বেগুন ৫০-৫৫ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ১০০ টাকা, আলু ১৫ থেকে ২০ টাকা, পটোল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ৩০ টাকা, গাজর ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, মিষ্টিকুমড়া প্রতিটি ২০ টাকা, লাউ ৪০-৬০ টাকা, জালি কুমড়া ২৫ টাকা, লেবু হালিতে ৫ টাকা বেড়ে ২০ টাকা, কাঁচকলা ২০-৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রমজান মাস শুরুর আগে দাম বাড়ার তালিকায় যুক্ত হয়েছে মাছের বাজারও। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এ দাম আরও বাড়তে পারে বলে মন্তব্য করেছেন মাছ ব্যবসায়ীরা। বাজারে প্রতি জোড়া মাঝারি ইলিশ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, বড় ইলিশ ১৪০০ থেকে ১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কোরাল মাছ কেজিপ্রতি ৬০০ টাকা, বড় চিংড়ি ৬৫০ টাকা, ছোট চিংড়ি ৬০০ টাকা, গুঁড়া চিংড়ি ৪০০ টাকা, বড় তেলাপিয়া ১৫০ টাকা, ছোট তেলাপিয়া ১০০-১২০ টাকা, পাবদা ৫০০ টাকা, রুই ২৪০ টাকা, পাঙ্গাস ১৩০ টাকা, কাতলা ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির পণ্য বিক্রি হবে সোমবার থেকে এদিকে রমজান মাসকে সামনে রেখে আগামী ১৫ মে সোমবার থেকে রাজধানীর ৩০টিসহ সারাদেশের ১৮৫টি নির্ধারিত স্থানে ৫টি পণ্য বিক্রি করবে টিসিবি। টিসিবির বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, চিনি কেজিপ্রতি ৫৫ টাকা, ছোলা ৭০ টাকা, মসুর ডাল ৮০ টাকা, খেজুর ১২০ টাকা এবং সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ৮৫ টাকায় বিক্রি হবে। ঢাকায় ৩০টি, চট্টগ্রামে ১০টি, অন্যান্য বিভাগীয় শহরে ৫টি ও জেলা সদরে ২টি করে ট্রাকে করে সারাদেশে এসব পণ্য বিক্রি করবে টিসিবি। এছাড়া টিসিবির নিজস্ব ১০টি খুচরা বিক্রয় কেন্দ্র এবং ২ হাজার ৮১১ পরিবেশকের কাছ থেকেও ভোক্তারা পণ্য কিনতে পারবেন। একজন ভোক্তা প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৪ কেজি চিনি, ৩ কেজি মশুর ডাল, ৫ লিটার সয়াবিন তেল, ৫ কেজি ছোলা এবং এক কেজি খেজুর কিনতে পারবেন।
×