স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়েদুল কাদের বলেছেন, পদ্মা সেতুর পিলারে (পিআর) সুপার স্ট্রাকচার আগামী জুন থেকে স্থাপন শুরু হবে। এ পর্যন্ত সেতুর সার্বিক অগ্রগতি ৪৩ শতাংশ। পদ্মা সেতু কোন দলের সেতু নয়, এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসীম সাহসের ফসল এবং ১৬ কোটি মানুষ সম্পদ। এই সেতু জাতীয় অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখবে। সেতু চালু হলে জিডিপি ১ শতাংশেরও বেশি বেড়ে যাবে। পদ্মা সেতু ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে চালু করার টার্গেট নিয়ে এগুচ্ছে। বৈচিত্র্যপূর্ণ পদ্মার গভীরতা, মাটির প্রকৃতিসহ নানা কারণে ২/৩ মাস টানাপোড়েনের মধ্যে ছিল এই সেতুর কাজ। এখন সব সমস্যা অতিক্রম করে মূল কাজ সুপার স্ট্রাকচার-স্প্যান স্থাপনে এগিয়ে যাচ্ছে। ৪২টি পিলারে ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ২০টি ইতোমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে। এই ২০টি স্প্যান পিলারের ওপর স্থাপন করতে করতে বাকি ২১টি স্প্যানও তৈরি হয়ে যাবে। পদ্মা সেতুর পাইল স্থাপনে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ৩ হাজার কিলোজুল ক্ষমতার হ্যামার চলতি মাসেই মাওয়ায় এসে পৌঁছবে। এটি বর্তমানে শ্রীলঙ্কা হতে সমুদ্র পথে বাংলাদেশের পথে রয়েছে। এই বহরে যুক্ত হয়ে উচ্চ ক্ষমতার ৪টি হ্যামার কাজ করবে। ইতোমধ্যে ২৪শ’ কিলোজুল, ২ হাজার কিলোজুল ও ১ হাজার কিলোজুল ক্ষমতার হ্যামার কাজ করছে।
মাওয়ার পার্শ্ববর্তী দোগাছি সেতুর সার্ভিস এরিয়া-১ সভা কক্ষে নিয়মিত ব্রিফিংয়ের অংশ হিসেবে প্রেস ব্রিফিংয়ে শুক্রবার তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা কথায় নয় কাজে এগিয়ে যেতে চাই। প্রধানমন্ত্রীও এসব বিষয়ে কথা কম বলার জন্য বলেছেন। ২ মাস পর পর নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ের কথা থাকলেও এবার ৩ মাস পর এই প্রেস ব্রিফিং করার কথা তিনি বলেন, সাংবাদিকগণ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে। সেতু নির্মাণকালে যখন মেঘের ছায়া ছিল তখনও সাংবাদিকরা সহযোগিতা করেছেন। ভবিষ্যতে এই ভূমিকা রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, একটি টেকনিক্যাল বিষয় আরেকটি ম্যানেজমেন্ট। ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথা না বলে অহেতুক কোন মন্তব্য করা উচিত নয়। সেতু নিয়ে অহেতুক রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়া হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। মন্ত্রী বলেন, স্প্যান স্থাপন শুরু হলে সময় বেশি লাগবে না। ১৫ দিন পরপরই একটার পর একটা স্প্যান বসতে থাকবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন মূল সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজের র্যান শাওলিন, জাওশিয়ান, শিয়ে কুয়েশিং, নদী শাসন কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চীনের সিনো হাইড্রো কোম্পানির মি. লুক, মি. লি ক্যাভেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনালের সাকিল, কর্নেল মুনির, লে. কর্নেল আনোয়ার, পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (নদী শাসন) শারফুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী (পুনবার্সন) মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন, নির্বাহী প্রকৌশলী (সড়ক) সৈয়দ রজব আলী, নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মোঃ আব্দুল কাদের প্রমুখ।
