ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সব্যসাচী দাশ

ব্যস্ত অভিনেত্রী নাবিলা

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ১১ মে ২০১৭

ব্যস্ত অভিনেত্রী নাবিলা

মধু কই কই আরে বিষ খাওয়াইলা/ কোন কারণে ভালবাসার দাম ন দিলা...প্রেম নিবেদনের পরিবর্তে বিষাদের বিষ দান! গানের এই লাইনে , ভালবাসার যথাযথ মূল্য না পাওয়ার একটা গভীর অভিমান স্পষ্ট। কিন্তু, প্রেম-ভালবাসার মতো সিরিয়াস বিষয় যে, সব সময় সিরিয়াস থাকে না। গানটির ব্যবহারে তা মোটামুটি স্পষ্ট। আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত মজার প্রেমের গল্প ‘মেইড ইন চিটাগাং’ নাটকের এক দৃশ্যে আঞ্চলিক ভাষার এই গানটি ব্যবহার করেছে। জনশ্রুতির দিক থেকে গানটা বেশ জনপ্রিয়। সেই সুবাদে ‘মেইড ইন চিটাগাং’ নাটকটিও দর্শকপ্রিয়তা পায়। যে ক’জন অভিনেতা-অভিনেত্রী এই নাটকে অভিনয় করেছেন তাদের সকলেই চট্টগ্রামের স্থানীয়। নাটকে অন্যান্য শিল্পীর মধ্যে নাবিলা ইসলাম একজন। নাবিলা চট্টগ্রামের মেয়ে। জন্ম শৈশব-কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রামে। আবৃত্তি, উপস্থাপনা, মডেলিং, অভিনয় মোটকথা বিনোদনের প্রায় ক্ষেত্রেই তিনি উজ্জ্বল। সম্প্রতি তার ব্যক্তিগত ও ক্যারিয়ার জীবন নিয়ে বিস্তারিত কথা হয়। আনন্দকণ্ঠের সঙ্গে। দীর্ঘ আলাপচারিতায় উঠে আসে, তার চট্টগ্রামের জীবন থেকে বর্তমান ঢাকার ব্যস্তময় জীবন। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা এই জার্নি সম্পর্কে বলুন? উত্তরে নাবিলা বলেন, ছোটবেলা থেকেই আবৃত্তি গান উপস্থাপনা এসবের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, আমার মা অবশ্য চাইতেন আমি একজন শিল্পী হই। কিন্তু সঙ্গীতের পথে কিছু দূর চলার পর আমার ছন্দপতন ঘটে। সময়ে সময়ে আমি আবৃত্তি, উপস্থাপনা, মডেলিং ও অভিনয়ে বেশি মনোযোগী হলাম এবং ভাল করতে থাকলাম। চট্টগ্রামের নির্মাতা ওয়াহিদ তারেক, ‘লিটেল এনজেল আই এ্যাম ডাইং’ নামে একটি টেলিফিল্ম নির্মাণ করবেন এবং টেলিফিল্মটির জন্য তারেক ভাই আমাকে পছন্দ করলেন। মিডিয়াতে ওটাই ছিল আমার প্রথম বড় কাজ। পাশাপাশি একাধিক বড় বড় প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছি। এক সময় গ্রাজুয়েশন শেষ করে, এমবিএ ডিগ্রীর জন্য ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হই, সেই থেকেই ঢাকায়। এই ছিল মোটামুটি চট্টগ্রাম টু ঢাকা জার্নি। মিডিয়াতে নিয়মিত কাজ করছেন কবে থেকে? নাবিল বলেন, আমি মূলত ২০১৫ সাল থেকে মিডিয়া ক্যারিয়ারে নিয়মিত, আমার ক্যারিয়ার এখন পুরোটাই মিডিয়াকেন্দ্রিক। উপস্থাপনা করছেন কোথায়? বৈশাখী টিভি চ্যানেলে ‘সময় কাটুক গানে গানে’ এবং মাছরাঙা টিভি চ্যানেলের একটা পোগ্রামে উপস্থাপনা করতাম, সময়ের কারণে উপস্থাপনাটা এখন নিয়মিত করতে পারছি না। নাটকের সঙ্গেই এখন আমার দিনরাত্রি। আপনার অভিনীত নাটক সম্পর্কে বলুন। নাবিলা, আমি এ যাবত বেশ সংখ্যক ভাল ভাল নাটকে কাজ করেছি। আমার চরিত্র এবং নাটকের গল্প বেশিরভাগই সুন্দর, আলাদা করে যদি উল্লেখ করতে হয় তাহলে, নায়ক রিয়াজের সঙ্গে ‘মাধবীলতা শুধু তোমার জন্য’ সুবর্ণা মোস্তাফা, আনিসুর রহমান মিলন ভাইয়ে সঙ্গে নাটক ‘টাকা’। ‘তোমায় ভেবে লেখা’ নাটকটিও আমার অভিনীত ভাল নাটকের মধ্যে অন্যতম। নুসরাত ইমরোজ তিশা ও তাহসান ভাই ছিলেন এই নাটকে আমার সহশিল্পী। এ ছাড়া অনন্ত রোজারিওর নাটক ‘উপহার’ মঞ্জুরুল হাসান মিলনের নিউটনের এ্যাপেল, মোস্তাফা কামাল রাজের মেগা সিরিয়াল ‘নয়-ছয়’ এই তো। পছন্দের চরিত্র? নাবিলা, বেশ কয়েকটা নাটকের চরিত্র আমার পছন্দের, এই মুহূর্তে তোমায় ভেবে লেখা নাটকের রক স্টারের চরিত্রের কথা মনে পড়ছে। বেশ এনজয় করেছিল চরিত্রটিতে এবং ‘সিনেমেটিক’ নাটকের সিনেমেটিক চরিত্রটা আমার বেশ পছন্দের। মূলত এই চরিত্রগুলোর কারণে পরবর্তীতে আমাকে খুঁজে নেয়া হয়েছে। এখন কী কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন? বেশ কয়েকটা নাটকের কাজে এখন ব্যস্ত আছি, এরই মধ্যে খায়রুল পাপনের পরিচালনায় ‘হোম থিয়েটার’। মুনতাসির রিপনের ‘অল্প স্বল্প গল্প’ কয়েক দিন হলো শেষ করলাম। এ ছাড়া ৬ পর্বের একটা নাটক কিছুদিন আগে শেষ করেছি যেটা দীপ্ত টিভিতে চলছে। বর্তমানে ঈদের জন্য তিনটা নাটকের কাজ করছি। বাংলাদেশের টিভি দর্শকরা তো বিদেশী নাটক, সিরিয়ালে মগ্ন, এই দৃশ্য শহর থেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল সচরাচর। এক্ষেত্রে আপনার মূল্যয়ান, উত্তরে নাবিলা বলেন, দেখেন দৃশ্যটা বদলাতে আমরা সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করছি, বিভিন্ন ডিরেক্টরস গিল্ড এ ব্যাপারে যথেষ্ট সক্রিয়। ব্যক্তিগত খোঁজখবর, প্রেম, ভালবাসা রিয়ে, উত্তরে নাবিলা হেসে বলেন, এই বিষটা একটু প্রাইভেট, আমি এ ব্যাপারে কথা বলতে চাই না। ভাই-বোন বা পরিবারের অন্য সবাই কে কী করছে? আমরা তিন বোন-নাবিলা, দিয়া আর তুলতুল। এর মধ্যে দিয়া চিকিৎসক আর তুলতুল নবম শ্রেণীতে পড়ছে। মা-বাবা চট্টগ্রামে থাকছেন। ভবিষ্যতে বড় পর্দায় কাজ করার ইচ্ছা রাখেন। উত্তর, হ্যাঁ রাখি। তাবে মোনপুরা চলচ্চিত্রের মতো ভাল চলচ্চিত্রে। সব শেষে নাবিলা বলেন, নাটক বলেন আর সিনেমাই বলেন গল্প আর পরিচালক ভাল না হলে কাজটাই বৃথা। এই মন্তব্যে তার ব্যক্তিত্বের দৃঢ়তা স্পষ্ট। ভবিষ্যতে খুব ভাল ভাল কাজ হয়ত তার জন্য অপেক্ষা করছে।
×