ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোহাম্মদ কামরুল হাসান।

স্বাপ্নিক গায়িকা জেফার

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ১১ মে ২০১৭

স্বাপ্নিক গায়িকা জেফার

পপ কিংবা রক ঘরানার গান নিয়ে ভার্চুয়াল জগতে হাজির হলেও জেফারের ফার্স্ট ত্রুাশ আরএ্যান্ডবি। হিপহপ সিঙ্গারদের গান শুনেই সঙ্গীতকে ভালবাসা। টু পাক সাকুর, এমিনেম, লিংকিন পার্ক ছিল তার পছন্দের। পরবর্তীতে শোনেন পপ ঘরানার মিউজিক। মাইকেল জ্যাকসন ও পিংক তার পছন্দের শিল্পী। তাদের বেশ কিছু গান জেফার কাভার করেছেন। তবে যে শিল্পী জেফারকে বেশি প্রভাবিত করেছে তার নাম এ্যামিলি। ইভানিসেন্স ব্যান্ডের জনপ্রিয় এই গায়িকার ছায়া দেখা যায় তার গান ও কণ্ঠে। জেফারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সে বলল, ‘এ্যামিলি আমার প্রিয় একজন আর্টিস্ট। রক ঘরানার গান আমি প্রথম তার কণ্ঠেই শুনি। সম্ভবত সাব কনসাস মাইন্ডে তার লাইফ স্টাইল কিংবা গায়কী আমাকে প্রভাবিত করেছে।’ জেফার রহমান যেমন কোন নির্দিষ্ট ঘরানার গান শোনেন না, তেমনি রক ও পপ দুই জেনারের গান গাইতে পছন্দ করেন। প্রথমদিকে কাভার সং দিয়ে মঞ্চে হাজির হলেও এখন চান মৌলিক গানে দর্শক মাতাতে। সত্যি করে বলতে তার স্বপ্ন অনেক বিশাল। বাংলা গান কিংবা সুরকে জেফার নিয়ে যেতে চান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। এ কারণেই তার ইংরেজী ভাষায় গান করা। কারণ ইংরেজী ভাষায় গান গাওয়া ছাড়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কখনই বাংলাদেশকে উপস্থাপন করা সম্ভব নয়। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই বাংলাভাষা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অবহেলিত। এ ভাষায় এত বরেণ্য ও প্রতিভাবান রক শিল্পী থাকা সত্ত্বেও তা কেবল ভাষাগত সমস্যার জন্য বাইরে নজর করতে ব্যর্থ হন। এ খেদ আমাদের সকলের। নগর বাউল জেমসের কথাই ধরুন। এত অসাধারণ সব বাংলা গানের রূপকার জেমস কখনও ঢাকা-কলকাতা সীমানা পেরোতে পারেননি। কিন্তু যখনই একটি হিন্দী সিনেমায় তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে গান করলেন, ওমনি তা ব্যাপক সাড়া ফেলে দিল। এ কথা কেবল জেমসের ক্ষেত্রে নয়, বাংলাদেশের বেশিরভাগ ব্যান্ডের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। বাংলা রকের কথা ও সুর এত সমৃদ্ধি হওয়া সত্ত্বেও তা বিদেশে নজর কারতে পারেনি। আমাদের দেশের এ খেদ মিটানোর স্বপ্ন দেখছেন জেফার। তিনি চান ইংরেজী গানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিদেশের মাটিতে উপস্থাপন করতে। এ প্রসঙ্গে জেফার বলেন, ‘ইংরেজী গান করি। এ কারণে আমাকে অনেক প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়। প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। অথচ লক্ষ্য করবেনÑ বেশিরভাগ জনপ্রিয় ব্যান্ডগুলোর মাতৃভাষা ইংরেজী নয়। জার্মান ব্যান্ড ‘স্করপিয়ন’ কিংবা ব্রাজিলের ‘সেপালচুরা’। এ ব্যান্ডগুলো জনপ্রিয় হয়েছে ইংরেজী গানের মাধ্যমে। তারা বিশ্ব অঙ্গনে দেশের সঙ্গীত উপস্থাপনের সুযোগ পায়। আমিও চাই আমার দেশকে, মাতৃভূমিকে উপস্থাপন করতে। মাতৃভাষার প্রতি আমার কোন অবহেলা নেই। কোন শিল্পীর থাকে না। আমি কেবল দেশের সঙ্গীতকে বহুদুর নিয়ে যেতে চাই।’ সে অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছে জেফার। টালিউডের একটি ছবিতে তার গাওয়া ইংরেজী গান মূল সিনেমায় চিত্রায়িত হয়েছে। সিনেমার একটি গানের দৃশ্যায়নে জেফারকে দেখা যাবে। মীন রাশির এ জাতিকা একজন স্বাপ্নিক তরুণী। সেই সঙ্গে বেশ একরোখাও বটে। বাংলাদেশের সমৃদ্ধ লোকসঙ্গীতের প্রতি তার যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। লালন ব্যা-ের গান তার ভাল লাগে। এ ছাড়া দেশের অধিকাংশ শিল্পীর গান তার পছন্দ। সে তালিকাও বেশ দীর্ঘ। জেফার কেবল ইংরেজী গান শোনেন না বরং যে কোন সঙ্গীতের প্রতি রয়েছে সমান দুর্বলতা। একজন প্রতিভাবান গায়িকা হওয়া সত্ত্বেও জেফার নির্দিষ্ট কোন ইনস্ট্রুুমেন্ট বাজান না। কিংবা এখনো অভ্যস্ত হননি। তবে সামনে পিয়ানো কিংবা গিটার শেখার ইচ্ছা আছে। স্বাপ্নিক এ তরুণী জেফারের বিশাল আকাশ রঙধুনতে ছেয়ে যাক এই আমাদের কাম্য। বিশ্ব অঙ্গনে তার গায়িকীর মাধ্যমে পরিচিতি হোক বাংলা গান।
×