ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ইন্টারনেটের দাম কমাতে ফের তাগিদ বিটিআরসিকে

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ১১ মে ২০১৭

ইন্টারনেটের দাম  কমাতে ফের তাগিদ বিটিআরসিকে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ইন্টারনেটের দাম গ্রাহক পর্যায়ে কমাতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বিটিআরসিকে আবারও তাগিদ দিয়েছে। বিটিআরসি ইন্টারনেটের দাম পুনর্নির্ধারণের জন্য ইতোমধ্যে আইটিইউ থেকে একজন পরামর্শক নিয়োগ করেছে। পরামর্শকের প্রতিবেদন পাওয়ার পর ইন্টারনেটের দাম পুনর্নির্ধারণ করা সম্ভব হবে বলে বিটিআরসি জানিয়েছে। বিটিআরসি সূত্র জানিয়েছে, মোবাইল ফোনে ইন্টারনেটের দাম পুনর্নির্ধারণের কাজ চলছে। অপারেটররা মোবাইলে ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্যাকেজ দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে বেশি টাকা কেটে নিচ্ছে এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কস্ট মডেলিং’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সাধারণ মানুষের কাছে ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার জন্য বিটিআরসি এমন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। বিটিআরসি জাতিসংঘের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) একজন কর্মকর্তাকে পরামর্শক হিসেবে এ মাসের শুরুর দিকে নিয়োগ দিয়েছে। নিয়োগকৃত পরামর্শক ইন্টারনেট সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ইন্টারনেটের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণের বিষয়ে বিটিআরসিকে পরামর্শ উৎপাদনকারীরা পায় ৬৭ টাকা আর আমদানি করা যায় ৫৫ দশমিক ৫ টাকায় ক্ষতির পরিমাণ ১১ দশমিক ৯৫ টাকা। কেরসিন প্রতিলিটার কিনে থাকে ৫৯ টাকায় সেখানে আমদানি করা যায় ৪৮ দশমিক ৩৩ টাকায়। আর্থিক ক্ষতি ১০ দশমিক ৬৭ টাকা। প্রতিলিটার পেট্রোলে প্রদান করা হয় ৬০ টাকা সেখানে আমদানি করা যায় ৪৪ দশমিক ৩৬ টাকায়। এখানেও সরকারের ক্ষতি লিটারেই ১৫ দশমিক ৬৪ টাকা। সরকার দীর্ঘদিন ধরে তেলের দর কমানোর কথা বলে আসছে। সবশেষ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও জানিয়েছে তেলের দাম কমানোর বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আইনের মারপ্যাঁচে বিপিসির মুনাফা বেসরকারী তেল উৎপাদনকারীদের পকেটে গেলেও সাধারণ মানুষের পকেট ফাঁকা হচ্ছে। বিপিসির এই আমদানি মূল্য ধরে হিসেবে করলে আমদানির চেয়ে বিপিসি ভোক্তা পর্যায়ে প্রতিলিটার পেট্রোলে ৩৪ টাকা ৪৭ পয়সা, অকটেনে ২৬ টাকা, কেরসিনে ১২ দশমিক ৪৮ টাকা এবং ডিজেলে ১২ দশমিক ৭ টাকা বেশি নিচ্ছে। বেসরকারী খাতের পেট্রোম্যাক্স রিফাইনারি আট হাজার মেট্রিকটন, সুপার পেট্রোকেমিক্যাল প্রাইভেট লিমিটেড সাত হাজার মেট্রিকটন, সুপার রিফাইনারি ছয় লাখ মেট্রিকটন, সিনথেটিক রেজিন ছয় লাখ মেট্রিকটন কনডেনসেট আমদানি করেছে। অন্য রিফাইনারিগুলোও কনডেনসেট আমদানি করতে যাচ্ছে। দেশে উৎপাদিত কনডেনসেট থেকে ৬৫-৭৫ ভাগ পেট্রোল উৎপাদিত হয়। এছাড়া ১৫ থেকে ২০ ভাগ ডিজেল এবং অন্যান্য জ্বালানি পাওয়া যায়। পেট্রোলের সঙ্গে অকটেন বুস্টার মিশিয়ে অকটেন উৎপাদন করা হয়। গত অর্থবছরে সারাদেশে এক লাখ ৩৭ হাজার টন পেট্রোল বিক্রির বিপরীতে চলতি অর্থবছরে ২ লাখ ২০ হাজার টন বিক্রির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বিপরীতে দেশে উৎপাদন হবে দুই লাখ ৫২ হাজার টন। অর্থাৎ অবিক্রিত থাকবে ৩২ হাজার টন পেট্রোল। এই অবস্থায় বাজারে চাহিদা না থাকায় আমদানি করা কনডেনসেটের বিপরীতে পেট্রোল কেনা বিপিসির পক্ষে সম্ভব নয়। এছাড়া বছরে দেশে অকটেনের চাহিদা রয়েছে এক লাখ ৮০ হাজার মেট্রিকটন। এর বিপরীতে দেশে অকটেন উৎপাদন হবে দুই লাখ ১২ হাজার টন। এক্ষেত্রে বিপিসি বলছে দেশে অতিরিক্ত অকটেনের চাহিদাও নেই। জ্বালানি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ গত পাঁচ বছর ধরে পেট্রোল এবং অকটেন উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন বিদেশ থেকে পেট্রোল অকটেন আর আমদানি করা হয় না। এসব আমাদের দেশেই উৎপাদিত হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে কনডেনসেট রাখার জায়গা না থাকায় পুড়িয়ে ফেলতে হয় এক্ষেত্রে কারও কারও আর্থিক মুনাফা নিশ্চিত করতে কনডেনসেট আমদানির অনুমোদন দেয়া হচ্ছে।
×