ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে চান শারমিন

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ১১ মে ২০১৭

উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে চান শারমিন

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ১০ মে ॥ নিজের অদম্য ইচ্ছা আর নিরলস পরিশ্রম সাফল্য বয়ে এনেছে জেলার মান্দা উপজেলার সাহাপুকুরিয়া গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা মালা খাতুনের মেয়ে শারমিন পারভীনের জীবনে। ওই গ্রামের এই শারমিন পারভীন দারিদ্র্যকে জয় করে সব পেছনের কথাকে হার মানিয়ে সাহাপুর ডিএ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এর খুশিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও গ্রামবাসী উদ্বেলিত। শারমিন পারভীন জেএসসি পরীক্ষায় একই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল। তাছাড়া সাহাপুর ঢোলপুকুরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা সমাপনী ২০১১ পরীক্ষাতেও সে প্রতিটি বিষয়ে এ প্লাস পেয়েছে। ভবিষ্যতে সে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে ভাল একটি সরকারী চাকরি করতে চায়। কিন্তু এ সময় সবচেয়ে কাছে থাকার কথা ছিল যে পিতাকে সে যখন শারমিনের বয়স মাত্র তিন মাস তখনই একমাত্র আদরের কন্যা সন্তান ও তার মাকে ফেলে রেখে চলে গেছে। ফলে শারমিনের আশ্রয় হয় নানা ইনু মোল্লার বাড়িতেই। গত বছর ২৭ জানুয়ারি নানা মারা যান। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস পরেরদিন নানি পদ্ম বিবিও মারা যান। ফলে বর্তমানে মা ও মেয়েকে দেখার মতো এ দুনিয়ায় আর কেউ বেঁচে নেই। তাহলে কি এসএসসিতে এ-প্লাস পাওয়া মেধাবী ছাত্রী শারমিনের উচ্চ শিক্ষা কি বন্ধ হয়ে যাবে ? সেই চিন্তায় অসহায় পরিবারটি এখন দু’চোখে অন্ধকার দেখছে। কারণ নুন আনতে যাদের পানতা ফুর্য়া, তাদের পক্ষে কি আবার উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য এত টাকা যোগাড় করার সাধ্য থাকে? কে নেবে এ অসহায় মেয়ের উচ্চ শিক্ষার দায়-দায়িত্ব, সেই চিন্তায় এখন তাদের পেয়ে বসেছে। অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে ও বিভিন্ন জায়গায় নিরলসভাবে খেটে পরিবারের দু’মুঠো ভাত জোগাতে যার দেখার কেউ নেই সে কি মেধাবী মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারবে? এমনটিই বললেন মালা খাতুন। তিনি জানান, দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে অনেক কষ্টে মেয়েকে লেখাপড়া করিয়েছি। যার ফলে সে আজ জিপিএ গোল্ডন-৫ পেয়েছে।
×