ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিদায়ের মঞ্চে মিসবাহ-ইউনুস

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ১০ মে ২০১৭

বিদায়ের মঞ্চে মিসবাহ-ইউনুস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ডমিনিকায় আজ থেকে শুরু হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের মধ্যকার তৃতীয় ও শেষ টেস্ট। ১-১এ চলামান সিরিজে ‘ফয়সালার’ লড়াই। এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন সাদা পোশাকের পাকিস্তান অধিনায়ক মিসবাহ-উল হক ও দেশটির টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের মালিক ইউনুস খান। প্রায় ড্র’র পথে থাকা জ্যামাইকার প্রথম টেস্টে ৭ উইকেটের দারুণ জয়ে এগিয়ে গিয়েছিল পাকিরা। কিন্তু চারদিন এগিয়ে থেকেও দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং-ব্যর্থতায় ব্রিজটাউনের দ্বিতীয় ম্যাচে অনেকটা নাকটীয়ভাবে হেরে বসে (১০৬ রানে) মিসবাহর দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে কখনই টেস্ট সিরিজে জয়ের স্বাদ পায়নি পাকিস্তান। আজহার আলি, সরফরাজ আহমেদ, মোহাম্মদ আমির, ইয়াসির শাহরা কি পারবেন কিংবদন্তিতুল্য দুই সতীর্থের বিদায়টা রাঙিয়ে দিতে? আগামী পাঁচদিনের মধ্যেই তার উত্তর মিলবে। মিসবাহ-ইউনুসের জন্যই ইতিহাস গড়তে চায় পাকিস্তান। পরবর্তী টেস্ট অধিনায়কের দায়িত্ব পেতে যাওয়া আজহার বলেন, ‘পাকিস্তানের ক্রিকেটে দু’জনের অবদান অনেক। তাই জয় উপহার দিয়ে তাদের বিদায় জানাতে চাই। এজন্য আমরা সর্বস্ব উজাড় করে দিতে তৈরি।’ বাঁহাতি পেসার ওয়াহাব রিয়াজ বলেন, ‘সকলেই চায় ক্যারিয়ারের শেষটা স্মরণীয় করে রাখতে। মিসবাহ-ইউনুসও তাই চাইছে এতে সন্দেহ নেই। তাই আমাদের উচিত হবে সেরা পারফর্মেন্স প্রদর্শন করে ম্যাচ জয়ের মধ্য দিয়ে তাদের বিদায় জানানো।’ কেবল বর্তমানরাই নন, পাকিস্তানের সাবেকদের চাওয়া এমন। সাবেক নির্বাচক ও স্পিন বোলার ইকবাল কাশিম বলেন, ‘এ টেস্টটি মিসবাহ-ইউনুসের। এ ম্যাচে সকলের সেরাটা দেয়া উচিত। বিদায়ী ম্যাচে অবশ্যই তাদের জয় উপহার দিতে হবে। শেষ টেস্ট জয়ের সামর্থ্য আছে পাকিস্তানের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে আমরাই এগিয়ে।’ তবে নিজেদের বিদায়ের মঞ্চ বলে নয়, টেস্টটা জিতে পাকিস্তানকে অনেক অপেক্ষার সিরিজ উপহার দিতে চান মিসবাহ। অধিনায়ক বলেন, ‘এ ম্যাচটি আর সকল টেস্টের মতোই। হ্যাঁ, কিছুটা আবেগ অনুভব করছি। তবে অন্যান্য ম্যাচের মতো এটিতেও জয় চাই আমরা। এই ম্যাচটি জিততে পারলে সিরিজও নিজেদের করে নিতে পারব। তাই সবকিছুর উর্ধে দেশের কথা চিন্তা করেই খেলতে নামব আমরা।’ ২৮ মে ৪৩-এ পা রাখতে যাওয়া মিসবাহ পাকিস্তানের অন্যতম সফল অধিনায়ক। তার নেতৃত্বেই প্রথমবারের মতো আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠেছিল পাকিস্তান। ২০১০ সালে স্পট ফিক্সিং কলঙ্কে বেসামাল দেশকে দারুণ দক্ষতায় টেনে এনেছেন। অন্যদিকে ইউনুস পাকিস্তান টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের মালিক। তিনিই প্রথম ও একমাত্র ব্যাটসম্যান যিনি তার দেশের হয়ে ১০ হাজার রানের চূড়ায় উঠেছেন। এই সফরেই প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত ৫৮ রানের পথে স্মরণীয় ওই ইতিহাস গড়েন ৩৯ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। সর্বাধিক সেঞ্চুরি, সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানসহ টেস্টে পাকিস্তানের অনেক রেকর্ডই তার দখলে। কিংবদন্তিতুল্য দুই সতীর্থের বিদায় স্মরণীয় করে রাখতে চান আজহার-আমির-সরফরাজরা। তবে চারদিন পিছিয়ে থাকার পরও দ্বিতীয় টেস্ট জয়ের পর সিরিজ জিততে আত্মবিশ্বাসী ক্যারিবীয়রা। সমতা আনতে পেরে বেশ ফুরফুরে মেজাজে স্বাগতিকরা। ডমিনিকা টেস্টে জয়ের স্বপ্নে বিভোর অধিনায়ক জেসন হোল্ডার বলেন, ‘আমরা আমাদের হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছি। ব্রিজটাউনে দুর্দান্ত জয়ে সিরিজে সমতা আনতে পেরেছি। এখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য সিরিজ জয়। এভাবে সিরিজ জিততে পারলে সাফল্যটা অনেক বড়ভাবেই দেখা হবে।’
×