ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদা জিয়া ‘ভিশন ২০৩০’ ঘোষণা করবেন আজ

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১০ মে ২০১৭

খালেদা জিয়া ‘ভিশন ২০৩০’ ঘোষণা করবেন আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ বুধবার ‘ভিশন-২০৩০’ ঘোষণা করবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। বিকেল সাড়ে ৪টায় গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি তা ঘোষণা করবেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, জাতীয়তাবাদী বুদ্ধিজীবী ও ঢাকায় কর্মরত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদেরও বিএনপির পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। জানা যায়, ইতোমধ্যেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির ২ দফা বৈঠকে ‘ভিশন-২০৩০’ কিছু সংযোজন বিয়োজন করা হয়েছে। বিশেষ করে আগে ‘ভিশন-২০৩০’ এ দ্বিকক্ষ পার্লামেন্টের কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তা বাদ দেয়া হয়েছে। সোমবার রাত দেড়টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে না পারলেও মঙ্গলবার সকালে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দ্বিকক্ষ পার্লামেন্টের বিষয়টি বাদ দেয়া হয়। তবে মন্ত্রণালয় ভিত্তিক রূপকল্প, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং দেশকে এগিয়ে নিতে বেশ কিছু বাস্তবসম্মত প্রস্তাব এ ভিশনে থাকবে বলে জানা গেছে। সূত্রমতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশে-বিদেশে বিএনপির প্রতি জনদৃষ্টি আকর্ষণ করতে আগেভাগেই ‘ভিশন-২০৩০’ ঘোষণার উদ্যোগ নেয় দলীয় হাইকমান্ড। এ কাজে বিএনপিকে সহযোগিতা করেন কিছু জাতীয়তাবাদী বুদ্ধিজীবী। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে কোথায় নিয়ে যেতে চায় ‘ভিশন-২০৩০’ এ তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হবে। বিশেষ করে ২০৩০ সালের মধ্যে মাথাপিছু ৫ হাজার ডলার আয়ের মাধ্যমে দেশকে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ করার কথা বলা হবে। এর আগে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া গতবছর ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে ‘ভিশন-২০৩০’ সারমর্ম উপস্থাপন করেন। তবে আজকের সংবাদ সম্মেলনে এর বিস্তারিত বই আকারে প্রকাশ করে দেশবাসীর উদ্দেশে তুলে ধরা হবে। এছাড়া পরে তা বিভিন্ন দেশের দূতাবাসসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হবে। ‘ভিশন-২০৩০’ এ আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর দেশ গড়তে জনআকাক্সক্ষাকে মর্যাদা দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করার কথা থাকবে। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে কি করণীয় তাও তাতে থাকবে। এছাড়া থাকবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পদ্ধতি সংস্কার সম্পর্কে কিছু প্রস্তাব। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সর্বস্তরে ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের একটি রূপরেখাও ‘ভিশন-২০৩০’ এ থাকবে। এছাড়া বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- এবং আটক অবস্থায় দৈহিক-মানসিক অমানবিক নির্যাতনের অবসান ঘটানোর প্রস্তাবনা থাকবে। উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের যোগ্যতা ও পদ্ধতি-সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করবে বিএনপি। দুর্নীতি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ ও জাতীয় সংসদকে কার্যকর রাখার বিষয়ও এতে থাকবে। উল্লেখ্য, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি চরম রাজনৈতিক সঙ্কটের মুখে পড়ে। বিশেষ করে ২০১৫ সালের জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন করতে গিয়ে দেশ-বিদেশে চরম সমালোচনার মুখে পড়ে দলটি। গতবছর দলের ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের পর সর্বস্তরে দলের নেতাকর্মীরা কিছুটা আশার আলো দেখলেও তৃণমূল পর্যায়ে কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব-সংঘাত বেড়ে যাওয়ায় দলীয় কর্মকা- স্থবির হয়ে পড়ে। এ কারণে সরকারবিরোধী আন্দোলনে যেতে পারেনি দলটি। তাই ‘ভিশন-২০৩০’ ঘোষণার মধ্য দিয়ে সারাদেশে দলীয় নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করে একাদশ নির্বাচনের প্রস্তুতি জোরদার করার কৌশল নেয় বিএনপি হাইকমান্ড। বিএনপির মুখপাত্র ও দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, দল ক্ষমতায় গেলে ২০৩০ সালের মধ্যে কি কি করা হবে ‘ভিশন-২০৩০’ এ তা থাকবে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশকে এগিয়ে নিতে যা যা করা দরকার বিএনপি তা তা করে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। সংবাদ সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া জাতির কাছে ‘ভিশন-২০৩০’ তুলে ধরবেন বলে তিনি জানান।
×