ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিএসসিসিএলের তথ্য

’১৮ সালের মধ্যে দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার দ্বিগুণ হবে

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১০ মে ২০১৭

’১৮ সালের মধ্যে দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার দ্বিগুণ হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে ২০১৮ সালের মধ্যে ইন্টারনেটের ব্যবহার দ্বিগুণ হবে। এতে ব্যান্ডউইথ (ইন্টারনেট একক) ব্যবহারের সক্ষমতা বাড়বে আড়াইগুণ। পরিমাণের দিক থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার হবে এক টেরাবাইট। বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে। বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) জানিয়েছে, দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কুয়াকাটা ল্যান্ডিং স্টেশন। দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল সংযুক্ত হওয়ায় দেশে অতিরিক্ত ১ হাজার ৩০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ পাওয়া যাবে। ভবিষ্যতে এই কেবলের মাধ্যমে আরও ২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হবে। বর্তমানে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিমাণ ৪শ’ জিবিপিএসের বেশি। এই ৪শ’ জিবিপিএসের মধ্যে ১২০ জিবিপিএস বিএসসিসিএলের প্রথম সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে আসছে। বাকি ২৮০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ আইটিসির মাধ্যমে ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে। বিএসসিসিএলের এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে কুয়াকাটা-ঢাকা ব্যাকহোল লিংক স্থাপন হয়েছে। তবে ব্যাকহোল লিংক স্থাপনের কাজ নানা প্রশ্ন রয়েছে। ব্যাকহোলের কেবল মাটির নিচ দিয়ে না নিয়ে অনেক জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে আনা হয়েছে। এতে ওই কেবল মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এরপরও বিএসসিসিএল ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ টেস্টিং কাজ শেষ করেছে। পুরোপুরিভাবে দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের কাজ শেষ হলে আনুষ্ঠানিক বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করা হবে। ঢাকা থেকে কুয়াকাটা ল্যান্ডিং স্টেশনের ট্রান্সমিশন লিংক স্থাপনের কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে তা তিনি বলতে পারেননি। তবে কাজ যাতে দ্রুত শেষ করা যায় সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম কুয়াকাটা গিয়ে দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটায় ১০ একর জমিতে ল্যান্ডিং স্টেশন স্থাপনসহ নানা অবকাঠামো তৈরি করেছে। এখান থেকে সারাদেশে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করা হবে। ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে ঢাকার মগবাজার টেলিফোন ভবন পর্যন্ত কেবল স্থাপনের কাজও প্রতিমন্ত্রী পরিদর্শন করবেন। যত দ্রুত সম্ভব দেশের মানুষকে বাড়তি ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে দেয়ার জন্য কেবল স্থাপনের কাজ শেষ করার হবে। ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো (আইএসপি) জানিয়েছে, দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় দেশে ইন্টারনেট সেবার ক্ষেত্রে আরও একধাপ এগিয়ে গেল। একটি কেবল কোন কারণে বিকল হলে অন্য কেবলটি ব্যাকআপ হিসেবে কাজ করবে। দেশে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সুবিধা থাকবে। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সব ধরনের কাজকর্মে গতি বাড়বে। দেশে বিনিয়োগও বৃদ্ধি পাবে বলে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোপাইডররা (আইএসপি) মনে করছেন। দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল দেশের মানুষের কাছে একটি বড় সুখবর। এই কেবল দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আগের একটি সাবমেরিন কেবলে থাকায় কোন কারণে কাটা পড়লে ইন্টারনেট সেবা বিঘœ ঘটত। তখন ভারত থেকে আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হতো। দ্বিতীয় সাবমেরিনে যুক্ত হওয়ার ফলে এখন একটা ব্যাকআপ তৈরি হলো। প্রতিটি সাবমেরিন কেবলের লাইফ টাইম ১০ থেকে ১৫ বছর। এখনই উচিত তৃতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপনের চিন্তা করা। ভারত অন্তত ২০ সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের সদস্য দেশগুলো হচ্ছে- সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, মিসর, ইতালি, তিউনিশিয়া, আলজেরিয়া ও ফ্রান্স। সি-মি-উই-৫ কনসোর্টিয়ামে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরবসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশ নিয়ে। দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের মালিকও দ্বিতীয় কনসোর্টিয়ামের সদস্য দেশগুলো। উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে ব্যবহৃত ব্যান্ডউইথের পরিমাণ প্রায় ৪২১ জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড)। এর মধ্যে সরকারী পর্যায়ের ১৬০ ও বেসরকারী পর্যায়ের ২৬০ জিবিপিএসের মতো ব্যান্ডউইথ ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কিন্তু দেশে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ সক্রিয় হলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে রাখা আইটিসিগুলোর (ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল কেবল) ব্যবসা যাতে বন্ধ না হয় সে দিকটি সরকার বিবেচনায় রাখবে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
×