ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ঘোড়ামারা আজিজসহ ৬ জনের রায় যে কোন দিন ॥ যুদ্ধাপরাধী বিচার

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১০ মে ২০১৭

ঘোড়ামারা আজিজসহ ৬ জনের রায় যে কোন দিন ॥ যুদ্ধাপরাধী বিচার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গাইবান্ধার সাবেক সাংসদ জামায়াত নেতা আবু সালেহ মুহাম্মদ আবদুল আজিজ মিয়া (৬৫) ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়েছে। অর্থাৎ যে কোন দিন ঘোষণা করা হবে। অন্যদিকে যশোরের মনিরামপুরের সিদ্দিকুর রহমানের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ২৬ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। মানবতাবিরোধী মামলায় সাতক্ষীরার খালেক ম-লসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানির জন্য ১৩ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। এদিকে গাইবান্ধার ৬ আসামির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, হত্যা, আটক, অপহরণ, লুণ্ঠন ও নির্যাতনের তিনটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে মঙ্গলবার মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখে। ২০১০ সালে ট্রাইব্যুনাল গঠনের মধ্য দিয়ে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের পর এটি হবে ২৯তম রায়। আজিজ ছাড়া বাকি আসামিরা হলেনÑ মোঃ রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু (৬১), মোঃ আবদুল লতিফ (৬১), আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী (৫৯), মোঃ নাজমুল হুদা (৬০) ও মোঃ আবদুর রহিম মিঞা (৬২)। অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে গত বছর ২৮ জুন এই ছয় আসামির বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল। আসামিদের মধ্যে লতিফ ছাড়া সবাই পলাতক। প্রসিকিউশনের পক্ষে যুক্তিতর্কের শুনানি করেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন ও সৈয়দ হায়দার আলী। তাদের সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর শেখ মুশফিক কবির। অন্যদিকে আসামিদের মধ্যে লতিফের পক্ষে আইনজীবী খন্দকার রেজাউল এবং পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। যুক্তিতর্ক শেষে প্রসিকিউটর সায়েদুল হক সুমন জনকণ্ঠকে বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ আমরা সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে প্রমাণে সক্ষম হয়েছি। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাওয়া হয়েছে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে।’ আজিজসহ গাইবান্ধার এই ছয়জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের তদন্ত শুরু হয় ২০১৪ সালের ২৬ অক্টোবর। এক বছরের বেশি সময় তদন্তের পর ছয় খ-ে ৮৭৮ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা, যাতে ২৫ জনকে সাক্ষী করা হয়। তদন্ত সংস্থা ২০১৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর ওই প্রতিবেদন চূড়ান্ত করলে প্রসিকিউশন শাখা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে। এর ওপর শুনানি নিয়ে ট্রাইব্যুনাল গত বছর জুনে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে। এর আগে ছয় আসামিকে গ্রেফতারের জন্য ২০১৫ সালের ২৬ নবেম্বর পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু পাঁচজনকে গ্রেফতার করা সম্ভব না হওয়ায় তাদের পলাতক দেখিয়েই এ মামলার কার্যক্রম চলে। তদন্ত সংস্থা বলছে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৯ থেকে ১৩ অক্টোবর বর্তমান গাইবান্ধা সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটান আসামিরা।
×