ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বজ্রপাতে মা ও ছেলেসহ ১৬ জনের মৃত্যু, আহত ১৪

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১০ মে ২০১৭

বজ্রপাতে মা ও ছেলেসহ ১৬ জনের মৃত্যু, আহত ১৪

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে মা ও ছেলেসহ অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছে আরও ১৪ জন। এর মধ্যে ঝিনাইদহ ও ময়মনসিংহে ৩ জন করে ৬ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, চুয়াডাঙ্গা ও নারায়ণগঞ্জে দু’জন করে ৬ জন এবং কুড়িগ্রাম ও সুনামগঞ্জে একজন করে ২ জন মারা গেছে। মঙ্গলবার ঝড়-বৃষ্টির সময় বজ্রপাতের এসব ঘটনা ঘটে। খবর স্টাফ রিপোর্টার, নিজস্ব সংবাদদাতা ও সংবাদদাতার পাঠানো। জানা গেছে, ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু ও কালীগঞ্জে বজ্রপাতে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলেন হরিণাকুন্ডু উপজেলার পার্বতীপুর গ্রামের এমদাদুল হকের ছেলে আমানুল্লাহ (৪০), একই উপজেলার পোলতাডাঙ্গা গ্রামের ইউনুছ আলীর ছেলে মিরাজ (৩৫) ও কালীগঞ্জ উপজেলার মোল্লাডাঙ্গা গ্রামের মোঃ ফসিয়ার রহমানের স্ত্রী আঞ্জুরা বেগস (৪৫)। মঙ্গলবার বিকেলে পৃথক স্থানে বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়। হরিণাকুন্ডু থানার ওসি মাহতাব উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার দুপুরের পর প্রচণ্ড বেগে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। সেসময় পার্বতীপুর গ্রামের আমানুল্লাহ ও পোলতাডাঙ্গা গ্রামের মিরাজ মাঠের ক্ষেতে কাজ করছিলেন। ঝড়বৃষ্টি দেখে তারা বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেন কিন্তু ক্ষেতের পাশেই বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে ঝড়বৃষ্টি শেষে তাদের মৃতদেহ মাঠ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। কালীগঞ্জ উপজেলার নিহত আঞ্জুরা বেগমের ভাই শরিফুল ইসলাম জানান, তার বোন বাড়ির পাশে ধান গোচ্ছাছিলেন। তখন বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ময়মনসিংহ বজ্রপাতে মঙ্গলবার দুপুরে স্কুলছাত্রসহ মারা গেছে ৩ জন। ময়মনসিংহ জিলা স্কুল মাঠে খেলার সময় বজ্রপাতে নবম শ্রেণীর ছাত্র তামিম এবং ধোবাউড়া উপজেলার পোড়াকান্দলিয়া গ্রামে ধান কাটার সময় এংরাজ ও আরশাদ আলী নামে সহোদর মারা গেছে। ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র তামিম শহরের জামতলা মোড় এলাকার বাসিন্দা। চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে (মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে) বজ্রপাতে সেলিনা বেগম (৪০) ও ইয়াসিন সরদার (১৫) নামে মা ও ছেলে নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে ওই ইউনিয়নের গোয়ালনগর প্রধানীয়া বাড়ি ও উত্তর বলশাহী ঢালী কান্দি গ্রামের সরদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। একই সময় ওই বাড়ির ৩ নারী গুরুতর আহত হয়ে চাঁদপুর সরকারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরা হলো ওই বাড়ির ফারুক প্রধানীয়ার স্ত্রী লাকী বেগম (৩৫), ইউনুছ প্রধানীয়ার স্ত্রী রাবেয়া বেগম (৪০) ও কালা প্রধানীয়ার স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৩০)। আর নিহতরা হলেন ঢালী কান্দি গ্রামের দুলাল সরদারের স্ত্রী সেলিনা বেগম ও তার ছেলে ইয়াসিন সরদার। অপরদিকে ওই ইউনিয়নের গোয়াল নগর গ্রামের প্রধানীয়া বাড়িতে একই সময় আহতরা বাড়ির আঙ্গিনায় কাজ করার সময় একইভাবে বজ্রপাতে আহত হন তিন নারী। নবীনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপজেলার শ্যামগ্রাম ইউনিয়নের শ্রীঘর গ্রামে মঙ্গলবার দুপুরে কালবৈশাখী ঝড়ের বজ্রপাতে এক নারী মারা গেছে এবং মানিকনগর এলাকার মেঘনার পাড়ে বালুবাহী বলগ্রেডের দুই শ্রমিক আহত হয়েছে। মৃতের নাম খোদেজা বেগম (৩০), স্বামী কবির মিয়া বাড়ি শ্রীঘর বণিক পাড়া। বাড়ির পাশে কৃষিজমিতে গরুর জন্য ঘাস কাটার সময় হঠাৎ ঝড় শুরু হলে তখন বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদার কুতুবপুর ও কানাইডাঙ্গা গ্রামে বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ দুজন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজারে পৃথক দুটি স্থানে বজ্রপাতে এক নারীসহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলো- জামিল মিয়া (৪৫) ও সুবেদা বেগম (৩৫)। ঘটনা দুটি ঘটেছে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে এগারো টায় উপজেলার মরদাসাদী ও দুপ্তারা এলাকায়। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সকালে উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের বড় মনোহরদী এলাকার মৃত আফাজউদ্দিনের ছেলে জামিল মিয়া (৪৫) দুপ্তারা এলাকায় বিলে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে যায়। বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে প্রচ- বৃষ্টি ও ঝড়োহাওয়া বইতে থাকে। এ সময় বজ্রপাতে জামিল মিয়ার মৃত্যু হয়। অপরদিকে একই সময় উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের মরদাসাদী এলাকায় জমি থেকে কাটা ধান আনতে গেলে বজ্রপাতে সুবেদা বেগম (৩৫) নামে এক নারীর ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। নিহত সুবেদা বেগম মরদাসাদী গ্রামের ইসমাইলের স্ত্রী। কুড়িগ্রাম রৌমারীতে বজ্রপাতে আনোয়ার হোসেন (৪২) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে বাবু মিয়া (৯) নামের এক শিশু। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের আমবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানায়, আনোয়ার হোসেন ওই সময় হলহলিয়া নদীতে মাছ ধরছিলেন। পাশে দাঁড়িয়ে ছিল শিশু বাবু মিয়া। বজ্রপাতের পর ঘটনাস্থলেই মারা যান আনোয়ার এবং বাবুকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়। সুনামগঞ্জ বজ্রপাতে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটেছে। মৃতের নাম সাইফুল ইসলাম (১৫)। সে সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ভৈষারপাড় গ্রামের উমেদ আলীর পুত্র। এ ঘটনায় আর আহত হয়েছে ২ জন। আহতরা হলেন সাইফলের সহোদর ডালিম মিয়া (২৭)।
×