ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ত্রিদেশীয় সিরিজে ভাল ফলের প্রত্যাশা বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ৯ মে ২০১৭

ত্রিদেশীয় সিরিজে ভাল ফলের প্রত্যাশা বাংলাদেশের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইংল্যান্ডে লম্বা সফর শুরু হয়েছে গত ২৬ এপ্রিল। সাসেক্সে ১০ দিনের অনুশীলন ক্যাম্প করেছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। সেখানে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছে। দারুণ ব্যাটিং-বোলিং নৈপুণ্যে বেশ উজ্জীবিত অবস্থায়ই আছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। যদিও সেই সফরে ছিলেন না বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। এবার পুরো শক্তির দলই আয়ারল্যান্ডে। ত্রিদেশীয় সিরিজের জন্য প্রস্তুত হতে ভাল সময় পাচ্ছে সফরকারীরা। ১২ মে ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড। তবে ওই ম্যাচে নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি খেলতে পারবেন না এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা থাকায়। পরিবর্তে আইরিশদের বিপক্ষে দলকে নেতৃত্ব দেবেন সাকিব। সিরিজের অন্য দল শক্তিশালী নিউজিল্যান্ড। ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরুর আগে বুধবার আরেকটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে আয়ারল্যান্ডের পরিবেশ সম্পর্কেও বুঝে ওঠার সুযোগ থাকবে বাংলাদেশ দলের জন্য। সফরটি মূলত আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশগ্রহণের জন্য। আগামী মাসের ১ তারিখেই ইংল্যান্ডের মাটিতে শুরু হবে বিশ্বের সেরা আট দলকে নিয়ে এ মর্যাদার আইসিসি টুর্নামেন্ট। উদ্বোধনী দিনেই স্বাগতিকদের বিপক্ষে দ্য ওভালে মাঠে নামবেন মাশরাফিরা। এর আগে বাংলাদেশের জন্য দারুণ লাভজনক হিসেবে সুযোগ হয়েছে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলার। প্রায় সামঞ্জস্যপূর্ণ পরিবেশ আয়ারল্যান্ডের মাটিতে এ ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলে বেশ ভাল প্রস্তুতি নিতে পারবেন মাশরাফিরা এমনটাই আশা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই সেই প্রস্তুতির ১২ দিন পার করেছে বাংলাদেশ দল। ইংল্যান্ডের সাসেক্স কাউন্টি সফরে ১০ দিনের ক্যাম্প করেছে এবং দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে। ডিউক অব নরফোকের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুণ্য আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছিল বাংলাদেশ দলের। সেটা পরবর্তীতে সাসেক্সের বিপক্ষেও কার্যকর হয়েছিল। আবারও দারুণ ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখিয়ে ১৩৪ রানের বিশাল জয় দিয়ে ইংল্যান্ডের ক্যাম্প শেষ করেছে। ৯ উইকেটে ৩১৪ রানের বড় সংগ্রহও পেয়েছিল। তবে এবার আয়ারল্যান্ডের মাটিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচের লড়াই। ত্রিদেশীয় সিরিজে খেলতে হবে আয়ারল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। এর আগে বুধবার আরেকটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে নিজেদের ঝালিয়ে নেয়ার সুযোগ বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। সাকিব ও মুস্তাফিজ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে (আইপিএল) নিজ নিজ দলের সঙ্গে ব্যস্ত ছিলেন, এ কারণে তারা থাকতে পারেননি ক্যাম্পে। এখন তারা এই প্রস্তুতি ম্যাচে খেলার সুযোগ পাবেন। পারিবারিক সমস্যায় সাসেক্স থেকে দেশে ফিরে এসেছিলেন ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি। তিনিও এখন দলের সঙ্গে যোগ হয়েছেন। প্রস্তুতি ম্যাচটায় সুযোগ থাকবে তারও খেলার। কিন্তু ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচেই অনুপস্থিত থাকবেন তিনি। কারণ আইসিসি থেকে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়েছে বাংলাদেশ অধিনায়কের ওপর। গত মার্চ-এপ্রিলে শ্রীলঙ্কা সফরে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে এই নিষেধাজ্ঞা পান তিনি। তিন ম্যাচে দলের বোলিংয়ের সময় সেøা ওভার রেটের কারণে মাশরাফিকে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এ কারণে আইরিশদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে মাশরাফির সহকারী সাকিব দলকে নেতৃত্ব দেবেন। তবে পরের ম্যাচগুলো থেকেই আবার নেতৃত্বে ফিরবেন মাশরাফি। ত্রিদেশীয় সিরিজটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ দলের জন্য। বিশেষ করে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের দিক থেকে বিবেচনা করলে মহা গুরুত্বপূর্ণ। এই মুহূর্তে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের ৭ নম্বরে থাকলেও সেটা টিকিয়ে রাখার জন্য বেশ চ্যালেঞ্জের মুখেই আছেন মাশরাফিরা। ৮ নম্বরে থাকা পাকিস্তান ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে ৮৮ রেটিং নিয়ে। বাংলাদেশের রেটিং এই মুহূর্তে ৯১। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ যে র‌্যাঙ্কিং ঘোষণা করবে আইসিসি সেখানে সেরা আটের মধ্যে থাকতে না পারলে ২০১৯ বিশ্বকাপ সরাসরি খেলার সুযোগ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে বাংলাদেশ। অবশ্য ৯ নম্বরে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ বেশ পিছিয়ে ৭৯ রেটিং নিয়ে। তবে নিজেদের অবস্থান নিরাপদ রাখতে হলে ত্রিদেশীয় সিরিজে আইরিশদের বিপক্ষে একটি অযাচিত পরাজয় অনেক বড় প্রভাব ফেলবে। কারণ আয়ারল্যান্ড র‌্যাঙ্কিংয়ে অনেক পিছিয়ে থাকায় (১২) তাদের কাছে একটি হার অনেক বেশি রেটিং হারানোর কারণ হয়ে যাবে বাংলাদেশের জন্য। তবে চার নম্বরে থাকা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিততে পারলে সুযোগ থাকবে রেটিং বাড়ানোর। এমনকি ৯৩ রেটিং নিয়ে ৬ নম্বরে থাকা শ্রীলঙ্কাকে হটিয়ে জায়গাটা দখলের দারুণ একটা সুযোগ। তাই ত্রিদেশীয় এ সিরিজটি দারুণ গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ দলের জন্য। উভয় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দুটি করে মোট ৪ ম্যাচ খেলবে। এতে করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতিটাও বেশ ভাল হবে। পারফর্মেন্স ভাল হলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বেশ উজ্জীবিত হয়েই নামতে পারবেন মাশরাফিরা। ২০০৯ ও ২০১৩ সালে হওয়া গত দুটি আসরে খেলতে পারেনি বাংলাদেশ দল। এবার ফিরেছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে, তাই নিজেদের দারুণভাবে মেলে ধরার একটি চ্যালেঞ্জ তো আছেই।
×