ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষিণাঞ্চলে ধানের বাজার নিয়ন্ত্রণে ফড়িয়ারা

প্রকাশিত: ০৫:১১, ৯ মে ২০১৭

দক্ষিণাঞ্চলে ধানের বাজার নিয়ন্ত্রণে ফড়িয়ারা

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ সরকারীভাবে বোরো সংগ্রহ অভিযানে বরিশালসহ বিভাগের ছয় জেলায় পাঁচ হাজার ৯৫৮ টন বোরো সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কেজি চালের মূল্য ৩৪ টাকা ও ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ টাকা। তবে বোরোচাষীদের এ মূল্য পাওয়ার আশা ক্ষীণ। ইতোমধ্যে সরকারী গুদামে ধান ও চাল সরবরাহ করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে দালাল-ফড়িয়াদের সিন্ডিকেট। তারা সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অর্ধেক দামে ধান ক্রয় করতে চষে বেড়াচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের হাট-বাজারগুলো। অথচ ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় দাদন ও ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে বোরোচাষীরা। বরিশাল আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২ মে থেকে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তারা বোরো ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। ইতোমধ্যে তারা চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য ২৬ মিল মালিকের সঙ্গে আলোচনা করছেন। অভিযোগ রয়েছে, ওই সব মিল মালিকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটছেন দালাল ও ফড়িয়ারা। প্রতি কেজি ধানের দাম ২৪ টাকা করে প্রতি মণের মূল্য ৯৬০ টাকা হলেও গ্রামগঞ্জের বাজারগুলোতে প্রতি মণ ধান কৃষকরা বিক্রি করছেন সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় শ’ টাকা দরে। দালাল-ফড়িয়ারাই এ দামে কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করে নিয়ে যায়। সূত্রমতে, সরকারীভাবে মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় দালাল ও ফড়িয়ারাই বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রান্তিক বোরোচাষীরা জানান, প্রতিটি উপজেলার বেশিরভাগ প্রান্তিক চাষী স্থানীয় মহাজনদের কাছ থেকে মৌসুমের শুরুতে এক হাজার টাকার বিনিময়ে এক মণ ধান ও নগদ এক হাজার টাকা করে দাদন নিয়েছেন। এ টাকায় চাষীরা উচ্চমূল্যে বীজ ক্রয় করে বীজতলা তৈরিসহ চাষাবাদ করেছেন। সেচকাজে জ্বালানি তেলসহ কৃষি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধির কারণে তাদের গত বছরের তুলনায় এ বছর উৎপাদন ব্যয় বেশি হয়েছে। তবুও জমিতে অধিক ফলনের আশায় চড়া সুদে দাদন নিয়ে টাকা খরচে কৃপণতা করেননি। কৃষকদের কাছ থেকে জানা গেছে, এ বছর প্রতি মণ ধানের উৎপাদন খরচ হয়েছে ছয় শ’ টাকা। সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারলে তারা লাভের মুখ দেখতেন কিন্তু বর্তমান বাজার মূল্য তাদের চরম হতাশ করেছে।
×