ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গোল্ডেন প্রাপ্ত রহিমার স্বপ্ন পূরণ হবে ?

প্রকাশিত: ০৫:১০, ৯ মে ২০১৭

গোল্ডেন প্রাপ্ত রহিমার স্বপ্ন পূরণ হবে ?

তাহমিন হক ববী, নীলফামারী ॥ বাবা হাওয়াই মিঠাই ও কটকটি ফেরি করেন গ্রামে গ্রামে। আর মা মানুষের জমিতে কামলা কিষানী খাটেন। খড়ের বাঁশ চাটাইয়ের ঘরে পরিবারের পাঁচজনের বসবাস। যেখানে মাথা গোঁজার ঠাঁই মেলাই ভার, সেখানে লেখাপড়া তো আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো। তবুও অদম্য মেধা ও ইচ্ছা শক্তিকে পুঁজি করে দারিদ্র্যতার করাল গ্রাসে নিজেকে ভাসিয়ে না দিয়ে অন্ধকার ঘরে কুপির আলো জ্বেলে লেখাপড়া চালিয়ে নীলফামারীর সোনারায় সংগলশী উচ্চবিদ্যালয় হতে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগে দিনাজপুর বোর্ডের গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে রহিমা খাতুন। সে জেলা সদরের সোনারায় ইউনিয়নের বেড়াকুটি গ্রামের আব্দুর রহমান ও শিল্পী বেগমের মেয়ে। সোমবার সকালে রহিমার বাড়িতে গেলে সে জানায় বড় হয়ে এমবিবিএস ডাক্তার হতে চায়। দাঁড়াতে চায় নিজের পায়ে। দুই ভাই- এক বোনের মধ্যে রহিমা বড়। কুঁড়ে ঘরের ছাপড়া ঘরে বসবাস করে আর দিন এনে দিন খাওয়া পরিবারের সন্তান হয়ে মেধাবী রহিমা কি পারবে তার ইচ্ছে পূরণ করতে? পলি ও সুমা দুশ্চিন্তায় সংবাদদাতা বোয়ালমারী, ফরিদপুর থেকে জানান, শত অভাবের মাঝেও এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে জেলে পরিবারের দুই মেয়ে। তারা এখন উচ্চ শিক্ষা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে। ভাল কলেজে ভর্তির সুযোগ নিয়ে হতাশায় রয়েছে দুই অদম্য মেধাবী। সেই সঙ্গে উচ্চ শিক্ষার খরচ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে তারা। পলি সিকদার : রুপাপাত বামন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি (বিজ্ঞান) পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে পলি সিকদার। সে ৮ম শ্রেণীতেও বৃত্তি পেয়ে ছিল। পলি রুপাপাত গ্রামের জেলে প্রভাস সিকদারের মেয়ে। প্রভাস সিকদার খালে বিলে মাছ ধরে হাটে-বাজারে বিক্রি করে সংসার খরচের পাশাপাশি ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে আসছেন। মা শিলা সিকদার গৃহিণী। তাদের একমাত্র সম্পদ ভিটেবাড়ির ৫ শতক জমি। সেখানে ছোট দোচালা টিনের ঘরে পরিবারের পাঁচ সদস্যের বসবাস। পলিরা তিন বোন। বড় বোন শিপ্রা সিকদার পাশে নবকাম পল্লী কলেজে অনার্স পড়ছে। শিপ্রা নিজে প্রাইভেট পড়িয়ে তার লেখাপড়ার খরচ জোগায়। পলি ভাল ফল করেও উচ্চ শিক্ষার জন্য ভাল কলেজে ভর্তি হতে পারবে কি না এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছে তার পরিবার। সুমা দত্ত : রুপাপাত বামন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি (বিজ্ঞান) শাখায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সুমা দত্ত। সে ৮ম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিল। সুমা রুপাপাত গ্রামের জেলে কর্ন দত্তের মেয়ে। কর্ন দত্ত খালে বিলে মাছ ধরে হাটে-বাজারে বিক্রি করে সংসার খরচের পাশাপাশি ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে আসছেন। মা বাসন্তি দত্ত গৃহিণী।
×