ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় হাত বাড়ালেই মেলে মাদক

প্রকাশিত: ০৫:১০, ৯ মে ২০১৭

নওগাঁয় হাত বাড়ালেই মেলে মাদক

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ৮ মে ॥ নওগাঁতেও মাদকবিরোধী অভিযান চালানো হলেও তা নিয়ন্ত্রণে আসছে না। চোরাই পথে ফেনসিডিল, গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা, নেশাা ইনজেকশন আমদানির পাশাপাশি জেলা সদরে জনাকীর্ণ পরিবেশে স্থাপিত সরকার অনুমোদিত দেশী বাংলা মদের দোকান এর প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মদের দোকানে শুধু পারমিটধারীদের কাছে নির্ধারিত পরিমাণে মদ বিক্রির বিধান থাকলেও এখানে তা মানা হয় না। পারমিট বা লাইসেন্সধারী না হলেও যে কোন সময় যে কেউ এখানে মদ কিনে খেতে পারে। এখানে পারমিট দেখাতে হয় না। জানালা দিয়ে টাকা দিলেই হাতে মিলে মদের বোতল। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাসহ সংশ্লিষ্ট সব মহলকে ম্যানেজ করেই নাকি এভাবে খোলাবাজারে এক রকম প্রকাশ্যেই মদ বিক্রি করা হয়। অবস্থাদৃৃষ্টে মনে হয়, মুখে মাদক নিয়ন্ত্রণের সেøাগান তুললেও কার্যত এসব দেখার মতো কেউ নেই এখানে। একই ডিলার নিজের ও ছেলের নামে নওগাঁ শহরের প্রধান সড়ক সংলগ্ন পার-নওগাঁ ট্রাফিক বক্সের সামনে এবং সান্তাহারে পৃথক দুটি মদের দোকান পরিচালনা করছেন। মাদকসেবীরা জানায়, এই দুই দোকানের মধ্যে একটিতে ভেজাল মদ বিক্রি করা হয়। দোকান দুটি থেকে শুধু খুচরা নয়, রীতিমতো কার্টনে প্যাকেট করে রাতের আঁধারে গ্রামাঞ্চলের ক্রেতাদের কাছে পাইকারী মদ বিক্রি করা হয়ে থাকে। ওইসব পাইকাররা কার্টন কার্টুন মদ গ্রামাঞ্চলে বিক্রি করে থাকে। ফলে শহরের মতো গ্রামের উঠতি বয়সের যুবকরা হাতের নাগালে দেশী মদ পেয়ে রীতিমতো মাদকসেবীতে পরিণত হচ্ছে। এতে করে অভিভাবকরা চরম দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তাদের সন্তানদের নিয়ে। এ বিষয়ে মদের দোকানি পরিতোষ কুমার সাহা ভেজাল মদের বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, পারমিটধারীরা একমাসের মদ একদিনে কিনে কার্টনে প্যাকেট করে নিয়ে যায়। এখানে পাইকারী বিক্রি করা হয় না। তবে একমাসের মদ একদিনে কেনার বিধান আছে কিনা বা তারা একমাসের বরাদ্দকৃত মদ একদিনে কিনে নিয়ে নিজ নিজ এলাকায় বিক্রি করে যুবসমাজকে বিপথগামী করছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাব তিনি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, এসব বিষয়ে অন্য কোন সাংবাদিক তো মাথা ঘামায় না। আপনি ঘামান কেন? জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক রাজিউর রহমান জানান, মদ পাইকারী বিক্রির কোন বিধান নেই। প্রত্যেক পারমিটধারী মাদকসেবী এক মাসে সাড়ে ৯ লিটার বাংলা মদ কিনে খেতে পারবে। তবে মাসের বরাদ্দ একদিনে কিনতে বা বিক্রি করতে পারবে না। জেলায় ৯৫০ পারমিটধারী মাদকসেবী রয়েছে। যারা এমন কিছু কাজ করেন যে, মদ না খেলে সে কাজ করতে পারবেন না। সরকারী দোকানে এমন অনিয়ম চললে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
×