ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পথচারীর দুর্ভোগ

ছোট যানে ঢেকে থাকে বগুড়া নগরীর সড়ক

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ৯ মে ২০১৭

ছোট যানে ঢেকে থাকে বগুড়া নগরীর সড়ক

সমুদ্র হক, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়া নগরীর পথঘাট ঢেকে দিয়েছে ছোট যান্ত্রিক যানবাহন। এরই মধ্যে শিক্ষাঙ্গনের বড় বাস, মিনিবাস, ট্রাক ঢুকে পড়লে তবেই হয়েছে....। আরও কাহিল হতে হয় যখন নগরীর পেটের মধ্যের রেলগেটগুলো বন্ধ হয়ে যায়। মনে হবে রাস্তা কোথায়। সবই স্থবির। ‘ত্রাহী মধুসূদন’ কাকে বলে তা হাড়ে হাড়ে টের পাইয়ে দেয়। এদিকে ফুটপাথ তো দখল হয়েছেই তার সামনের রাস্তার কিছু অংশ দখলে নেয় ফেরিওয়ালা স্ট্রিট হকাররা। কে কার কথা শোনে। নগরীর এই উপদ্রব ও যন্ত্রণা থেকে রেহাই দিতে কত কী-ই না করা হলো। দুই-তিন দিন ঠিক। তারপর যাহা বায়নোœ তাহাই তেপান্ন। ছোট যান্ত্রিকযানগুলো অহরহ দুর্ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে। কখনও মহাসড়কে দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে। এসব যানবাহনের বেশিরভাগই চালাচ্ছে অদক্ষ প্রশিক্ষণহীন তরুণ। প্রথমে সিএনজি চালিত অটোরিকশা নগরীর রাস্তাঘাটের দখল নেয়। এর সঙ্গী হয়ে আসে ব্যাটারি চালিত এক ধরনের ইজিবাইক। হালে প্যাডেলের (পায়ে চালিত) রিকশা দ্রুত কমে গিয়ে ইলেকট্রিক মোটরের রিকশা বেড়ে গেছে। নগরীর পথে এ ধরনের ছোট যান্ত্রিক যানবাহন যেন ছুটে চলেছে। কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। নগরীর কেন্দ্রস্থল সাতমাথার সবগুলো সড়কে সকাল থেকে রাত অবধি ট্রাফিক কনস্টেবল বাঁশি ফুঁকিয়েই চলেছে। মাঝে মধ্যে ট্রাফিক সার্জেন্ট এসে তাদের সহযোগিতা করছে। কখনও রিকশাকে তাড়িয়ে দিচ্ছে। কখনও রাস্তা দখল করা হকারদের সরিয়ে দিচ্ছে। কিছুক্ষণ পর যথা পূর্বং তথা পরং। স্টেশন রোডের একটি হোটেলের সামনে ফুটপাথ দখল করে পরোটা, মোগলাই পরোটা, পুড়ি বানানো হয়। কাঁঠালতলার মোড়ে নতুন একটি হোটেলের সামনের ফুটপাথে বড় গ্যাস সিলিন্ডিার রেখে চুলা জ্বালিয়ে রান্নাবান্না হয়। জনসমাগমের এই স্থলে গ্যাস সিলিন্ডারের কিছু হলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তার অল্প দূরে ফতেহ্আলী মাজার সংলগ্ন এলাকার রাস্তার চারদিকে রিকশা ও ইলেকট্রিক মোটরের রিকশায় ঠাসা। কিছুটা এগিয়ে করতোয়া ব্রিজের ওপর দুই ধারে কিছু অংশ হকারদের দখলে। ব্রিজ পার হয়ে চেলোপাড়ার গাবতলি রোড ও চন্দনবাইশা রোডের মোড়ে রাস্তার একধারে ইজিবাইক আরেক ধারে সিএনজি চালিত অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে রাখার পর যে জায়গা তার মধ্যে এলোমেলোভাবে এই যানবাহনগুলো ইচ্ছামতো চলছে। শহরের গোহাইল রোডে সাতমাথার কাছ থেকে এ্যাডওয়ার্ড পার্কের দক্ষিণায়ন ও অরুণাচল গেটের কাছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক অনিয়ন্ত্রিতভাবে চলাচল করে। সন্ধ্যা থেকে অনেকটা সময় কবি নজরুল ইসলাম সড়কের দুই ধারে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভরা তাদের মোটরসাইকেল পার্কিংয়ের মতো করে রাখে। রাস্তার অনেকটা জায়গা দখল হয়ে যায়। বগুড়া নগরীতে লাইসেন্সকৃত পায়ে চালিত রিকশার সংখ্যা ৫ হাজার। বর্তমানে অন্তত ২০ হাজার রিকশা চলাচল করে। যার অর্ধেকই ইলেকট্রিক মোটর চালিত। বগুড়ায় সিএনজি চালিত অটোরিকশার সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চলছে সমপরিমাণ। সিএনজি চালিত অটোরিকশার বেশিরভাগেরই লাইসেন্স নেই। ইজিবাইকগুলো আসলে যন্ত্র চালিত যান কি না আজ পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। দিনে দিনে বগুড়ায় ইজিবাইক আর ইলেকট্রিক ব্যাটারির রিকশার বেচাকেনা বাড়ছেই।
×