ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এক বছর আগে দল গঠন করেই বাজিমাত ম্যাক্রোঁর

তাঁকে বলা হচ্ছে ফ্রান্সের তৃতীয় নেপোলিয়ন

প্রকাশিত: ০৩:৫২, ৯ মে ২০১৭

তাঁকে বলা হচ্ছে ফ্রান্সের তৃতীয় নেপোলিয়ন

ফ্রান্সের দিগ্বিজয়ী বীর নেপোলিয়নের পর সবচেয়ে তরুণ বয়সে দেশটির ক্ষমতার শীর্ষে উঠেছেন মাত্র তিন বছর আগেও জনসাধারণের কাছে অপরিচিত ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এখন তাকে বলা হচ্ছে, ফ্রান্সের ‘তৃতীয় নেপোলিয়ন’। রবিবার নিজের ৪০তম জন্মদিনের কয়েক মাস আগে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এক বছর আগেও তার নিজের কোন রাজনৈতিক দল ছিল না। ছিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের একজন উপদেষ্টা। মাত্র এক বছর আগে সরকারী পদ ছেড়ে নিজের রাজনৈতিক দল ‘এন মার্চ’ বা ‘এগিয়ে যাও’ গঠন করেই বাজিমাত করলেন ম্যাক্রোঁ। সাবেক ব্যাংকার ম্যাক্রোঁ ফরাসী রাজনীতির প্রজন্ম বদলের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছেন। যে রাজনীতিতে বছরের পর বছর ধরে কতগুলো পরিচিত মুখই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেছে। খবর ইয়াহু নিউজের। জি-৭ দেশগুলোর মধ্যে এখন ম্যাক্রোঁ সবচেয়ে তরুণ নেতা। এসব দেশের সব নতুন-পুরাতন তরুণ নেতার চেয়েও ম্যাক্রোঁ তরুণতর, তা হালের কানাডীয় প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডোই হোন আর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি হোন। ফ্রান্সের অভিজাত ন্যাশনাল স্কুল অব এ্যাডমিনিস্ট্রেশনের গ্র্যাজুয়েট ম্যাক্রোঁ। এই স্কুল থেকেই ফ্রান্সের ভবিষ্যত শীর্ষ সরকারী কর্মকর্তারা বের হয়ে আসেন। এর সাবেক ছাত্রদের মধ্যে তিনি ফরাসী প্রেসিডেন্ট রয়েছেন, এবার ম্যাক্রোঁকে নিয়ে তা চারে দাঁড়াল। গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর ম্যাক্রোঁ ফ্রান্সের অর্থ মন্ত্রণালয়ে ফিন্যান্সিয়াল ইন্সপেক্টর হিসেবে কাজ করেন। এর বিনিয়োগ ব্যাংকার হিসেবে রথসচাইল্ড এ্যান্ড সি ব্যাংকে যোগ দেন। ২০০৯ সালে স্বাধীন রাজনীতিক হওয়ার আগে তিনি তিন বছর ফরাসী সমাজতান্ত্রিক দলের সদস্য ছিলেন। পরে বর্তমান ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের ব্যক্তিগত কর্মিদলের সদস্য হন এবং পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালসের নেতৃত্বাধীন সরকারের অর্থ, শিল্প ও ডিজিটাল এ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু দুই বছর মন্ত্রিত্ব করার পরই তাতে ইস্তফা দিয়ে ২০১৬ সালে নিজের দল ‘এগিয়ে যাও’ আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করেন। তার মাত্র এক বছরের মধ্যেই তিনি ফরাসী রাজধানীর প্রতিষ্ঠিত সব ধারাকে ধরাশায়ী করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন। উত্তর ফ্রান্সের আমিয়েঁর চিকিৎসক দম্পতির ঘরে জন্ম নেয়া ম্যাক্রোঁ তার চেয়ে বয়সে ২৪ বছরের বড় নিজের স্কুল টিচারকে বিয়ে করেন। বর্তমানে ৬৩ বছর বয়সী স্ত্রী ব্রিজিতের সাতজন নাতি-নাতনি রয়েছে। ১৫ বছর বয়সে প্রাইভেট স্কুলের বিবাহিত এই শিক্ষকের সঙ্গে ম্যাক্রোঁর পরিচয় হয়। ম্যাক্রনের বয়সী এক মেয়ে ছিল তার। এক ক্লাসেই পড়ত তারা। ব্রিজিতের পরিবার আমিয়ঁ শহরের প্রসিদ্ধ চকলেট প্রস্তুতকারী ও ব্যবসায়ী। ব্রিজিতদের থ্রনিউ পরিবার ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ব্রিজিতের সম্পর্ক তখনি মেনে নেয়নি, কিন্তু আজ তারা সুখী ও সফল দম্পতি। প্রথম পর্বের ভোটে জয়ের পর এক অনুষ্ঠানে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে স্মিতহাস্যে ম্যাক্রোঁ বলেছিলেন, ‘ব্রিজিত সব সময় আমার পাশে আছে। তার চেয়ে বড় বিষয় তাকে ছাড়া আমি আজকের আমি হয়ে উঠতে পারতাম না।’
×