ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্মার্টফোনের আদবকেতা

প্রকাশিত: ০৭:০১, ৮ মে ২০১৭

স্মার্টফোনের আদবকেতা

শাকিল আহমেদ ॥ কিছু মোবাইল ব্যবহারকারী রয়েছেন, যারা তাদেও মোবাইল নিয়ে এতটাই ব্যস্ত থাকেন যে পৃথিবীকে একদম ভুলে যান। ভুলে যান তাদের আশপাশে থাকা মানুষগুলোকে, যারা তার কর্মকাণ্ডে বিরক্তবোধ করছেন। মোবাইল নিয়ে এ ধরনের আচরণ কখনোই শোভনীয় নয়। বিশ্বে প্রায় প্রতিদিন হাজারের অধিক মানুষ মোবাইল ব্যবহারকারীদের দলে যুক্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশও এদিক থেকে পিছিয়ে নেই। এখন তো ভাবতেই অবাক লাগে যে, বিশ্বজুড়ে কতভাবেই না মোবাইল ফোন ব্যবহার করা হচ্ছে। সবার সামনে দামী ও স্মার্ট মোবাইল ফোন বের করাটা এখন আর বড়লোকী দেখানোর মতো কোন বিষয় নয়। এ কথা বলার যন্ত্রটি এখন কার্যত সমাজের সর্বস্তরে পৌঁছে গেছে। কিছু ব্যবহারকারী রয়েছেন, মোবাইল ছাড়া যাদের জীবনটাই যেন বৃথা। মোবাইল ফোনটি তাদের সঙ্গে সবসময়ই থাকে। আজকাল বাসে বা ট্রেনে উঠলে দেখা যায়, অনেকেই মোবাইলে কথা বলছে। আর তাদের রিংটোন শুনলে বিরক্ত না হয়ে থাকা যায় না। অনেকেই মুরগির ডাক থেকে শুরু করে শিশুর কান্নাসহ নানা অরুচিপূর্ণ রিংটোন তাদের মোবাইলে সেট করেন, যা সেই ব্যক্তির ব্যক্তিত্বকে প্রশ্নের মুখে ফেলে। অনেক সময় এমন কিছু মানুষ দেখা যায়, যারা সবকিছু ভুলে কথা বলাতে এতটাই মশগুল থাকেন যে, এতে তিনি যে আশপাশের মানুষের মধ্যে বিরক্তির সৃষ্টি করছেন, সেদিকে খেয়াল রাখেন না। এ ধরনের নির্বোধকে কেউ ভাল চোখে দেখে না। যদিও নিয়ম রয়েছে ব্যাংক, সরকারী অফিস, কনসার্ট এবং আরও কিছু জায়গায় মোবাইল ব্যবহার বন্ধ রাখা। কিন্তু এগুলো মানার চাইতে, না মানাটাই যেন এখন নিয়মে পরিণত হচ্ছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, মোবাইল ফোন থেকে যে তেজস্ক্রিয়তা নির্গত হয়, তা মানুষের দেহের ক্ষতি করতে পারে, বিশেষ করে শিশুদের। উন্নত দেশগুলোতে নিয়ম রয়েছে, শিশুদের মোবাইল ফোনের বিজ্ঞাপনে লক্ষ্য হিসেবে দেখানো যাবে না। আমাদের দেশে এমন কোন নিয়ম তো নেই, বরং শিশুদেরই বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিতর্কিত ব্যাপার থেকে সবার দূরে থাকতে হবে। যাই হোক, শিশুরা যেন অধিক সময় মোবাইল ফোনে কথা না বলে বা সময় না কাটায় সে ব্যাপারে খেয়াল রাখা উচিত। এছাড়া প্রায়ই দেখা যায়, গাড়িচালকেরা মোবাইলে কথা বলছে। দেশে কিন্তু আইন রয়েছে, গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার সম্পর্কে। প্রযুক্তির যে কোন আবিষ্কারের মতো মোবাইল ফোনের খারাপ ও ভাল দুটি দিকই বর্তমান। জরুরী মুহূর্তে একটা মোবাইল ফোন আপনার জীবন-মরণ ঠিক করে দিতে পারে। যে কোন সময় যে কোন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ঘটাতে সাহায্য করে সেলফোন, যা বিস্ময়কর। আবার অবৈধ কাজও হচ্ছেÑ এ মোবাইল ফোন দিয়ে। যা খুবই দুঃখজনক।
×