ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপি ভাঙ্গা যাবে না ॥ অভিমত মির্জা ফখরুলের

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৮ মে ২০১৭

বিএনপি ভাঙ্গা যাবে না ॥ অভিমত মির্জা ফখরুলের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি ভাঙতে দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিমত প্রকাশ করেন, যতই নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হোক না কেন বিএনপি ভাঙ্গা যাবে না। কারণ, বিএনপি জনগণের দল এবং জনগণই হচ্ছে বিএনপির শক্তি। রবিবার বিকেলে মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুলের মতে, গত ১০ বছরে অনেক চেষ্টা করেও বর্তমান সরকার বিএনপির একজন কর্মীকেও আওয়ামী লীগে নিতে পারেনি। তাই বিএনপি ভাঙতে না পরাই এখন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় কষ্ট। তিনি বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী দল। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকারের জন্য আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, যাকে যেখানে দায়িত্ব দেয়া হয় নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে। আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের নতুন রাজনৈতিক জোট প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অযথা বিএনপিকে নিয়ে এরশাদ সমালোচনা করছেন। বিএনপি যদি কোথাও না থাকে তাহলে সকল কর্মকা-ে এত বিএনপিভীতি কেন? তিনি বলেন, তথাকথিত বিরোধী দল ৫৯টি দল নিয়ে একটি নতুন জোট গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। অথচ তারা নিজেরাই কি না, এখনও মহাজোট সরকারের শরিক হিসেবে রয়েছেন। এছাড়া এ জোটের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শুধু দুটি দলের নিবন্ধন রয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে কর্মিসভায় আরও বক্তব্য রাখেনÑ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, দলের স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার প্রমুখ। মির্জা আব্বাস বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যেতে পারবে না। তাই তারা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু সে সুয়োগ আর আওয়ামী লীগকে দেয়া হবে না। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে এ সরকারকে বাধ্য করা হবে। রাজপথের আন্দোলনে এ দাবি আদায় করা হবে। তাই সবাইকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে। আন্দোলনে সহায়ক সরকারের দাবি আদায় করা হবে রাজপথের আন্দোলনে সহায়ক সরকারের দাবি আদায় করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ অংশ নেবে কি না সন্দেহ রয়েছে। রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। দুদু বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করে আবারও ক্ষমতায় যেতে চায় আওয়ামী লীগ। কারণ, তারা জানে সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে ক্ষমতায় যেতে পারবে না। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোন দিন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, আর হবেও না। তবে সহায়ক সরকারের জন্য আন্দোলনের পাশাপাশি আমরা জাতীয় সংলাপও করতে চাই। সহায়ক সরকার ছাড়া দেশে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, সংবিধান দেখিয়ে লাভ নেই। দুদু বলেন, জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ায় আওয়ামী লীগ হতাশায় ভুগছে। এ জন্যই বিএনপি নেতাদের নামে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠাচ্ছে। তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই। তাই কেউ গণতন্ত্রের কথা বললেই জেল-জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এভাবে একটি স্বাধীন দেশ চলতে পারে না। এ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গণতন্ত্রকামী সকল মানুষকে মাঠে নামতে হবে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবির ব্যাপারীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেনÑ বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক দল ন্যাপ ভাসানীর মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, জাগপা সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমান প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে দুদু বলেন, এমন সময় আসবে, রাজনীতির মেরুকরণে আপনি বাদে জাতীয় ঐক্য হবে। সকল রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ১৯৭০ সালের মতো নির্বাচন করবে। আপনি যদি গোপালগঞ্জের বাইরে কোন আসনে তখন জয়লাভ করেন, তাহলে বুঝব আপনার জনপ্রিয়তা আছে। দুদু বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঢাকার বাইরে গিয়ে সমাবেশ করছেন এবং নৌকা মার্কায় ভোট চাইছেন। শুধু নৌকা মার্কায় ভোট চাওয়া যাবে, ধানের শীষের ভোট চাওয়া যাবে না, লাঙ্গলে ভোট চাওয়া যাবে না বা অন্য প্রতীকে ভোট চাওয়া যাবে না এটা তো কোন রাজনীতি হতে পারে না। তবে এই রাজনীতি আওয়ামী লীগ চালু করেছে। আজ বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক আজ সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক। রাত সাড়ে ৮টায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে তার গুলশান কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা সামসুদ্দিন দিদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জানা যায়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের ভিশন-২০৩০ নিয়ে আলোচনা হবে এবং তা অনুমোদন করা হবে। ১০ মে হোটেল ওয়েস্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। বর্তমান দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সাংগঠনিক বিষয় আলোচনা হবে। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ ছাড়াও দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বিএনপির সাংগঠনিক বিষয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে।
×