ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রার্থী দেবে তিন শ’ আসনে ॥ জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

নামসর্বস্ব ৫৯ দলের নতুন জোট ঘোষণা এরশাদের

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৮ মে ২০১৭

নামসর্বস্ব ৫৯ দলের নতুন জোট ঘোষণা এরশাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় জোট-বিএনএ ও জাতীয় ইসলামী মহাজোট নিয়ে সম্মিলিত জাতীয় জোট গঠন করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে এই জোটের যাত্রা শুরুর ঘোষণা দেন এরশাদ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিজেকে দলের চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদারকে জোটের মুখপাত্র উল্লেখ করেছেন। এরশাদ বলেন, দেশ ও জাতির প্রয়োজনে এবং আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে আজ একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট গঠনের ঘোষণা দিচ্ছি। অনেকে আমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইতোমধ্যে এগিয়ে এসেছেন। জোট গঠনের পর আরও কেউ অন্তর্ভুক্ত হতে চাইলে বিবেচনা করা হবে। তিনি আরও বলেন, দেশ ও জাতির স্বার্থে জাতীয় পর্যায়ে এই জোট গঠন করা হয়েছে। আমরা এক সঙ্গে নির্বাচন করব এবং ৩০০ আসনে প্রার্থী দেব। আমরা জোটগতভাবে জাতীয়সহ সকল পর্যায়ের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। জাপা চেয়ারম্যান জানান, তিনি ছাড়াও ইসলামিক ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এমএ মান্নান, জাতীয় ইসলামী মহাজোটের চেয়ারম্যান আবু নাসের ওয়াহেদ ফারুক এবং বাংলাদেশ জাতীয় জোটের (বিএনএ) চেয়ারম্যান সেকান্দার আলী মনি নতুন জোটের ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে জোটের গুরুত্ব সম্পর্কে এরশাদ বলেন, আজ আমরা এখানে যারা আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি, রাজনৈতিক নীতি ও আদর্শের দিক থেকে আমরা সবাই স্বাধীনতার চেতনা, ইসলামী মূল্যবোধ তথা সকল ধর্মের প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী আদর্শের অনুসারি এবং ধারক ও বাহক। আমাদের অঙ্গীকার, এই জোটে কোন স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির জায়গা হবে না। এরশাদ আরও বলেন, বর্তমানে সংসদীয় গণতান্ত্রিক বিশ্বে জোটগত রাজনৈতিক প্রবণতা বিরাজ করছে। আমাদের দেশেও এই ধারা অব্যাহত আছে। আমরাও এই প্রবণতার বাইরে নই। জোটের রাজনীতির মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে সৌহার্দ্য স্থাপনের সুযোগ থাকে। যা সংঘাতের রাজনীতির বিপরীতে সম্প্রীতির রাজনীতি প্রবর্তন করতে পারে। এরশাদ বলেন, প্রথম পর্যায়ে দুটি রাজনৈতিক দল এবং দুটি জোট এই ৪ শরিক নিয়ে আমরা বৃহত্তর একটি জোট গঠন করেছি। আরও ২টি নিবন্ধিত দলের সঙ্গে আমাদের কয়েক দফা কথা হয়েছে। তারাও আমাদের প্রাথমিক আলোচনায় আসার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। তাদের সুবিধামতো আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানালে আমাদের সঙ্গে যোগ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এমএম মান্নান, জাতীয় ইসলামী মহাজোটের চেয়ারম্যান আলহাজ আবু নাসের ওয়াহেদ ফারুক ও বাংলাদেশ জাতীয় জোটের চেয়ারম্যান সেকান্দার আলী মনি। এই সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, তাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাহিদুর রহমান টেপা, সুনীল শুভ রায়, এম ফয়সল চিশতি, তাজুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, ফখরুল ঈমাম এমপি সোহেল রানা, মশিউর রহমান রাঙ্গা এমপি, আবুল কাসেম। জাতীয় পার্টি ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ছাড়া লেবার পার্টির চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মনির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় জোট-বিএনএ জোটে দল রয়েছে ২২ আর মাওলানা আবু নাসের ওয়াহেদ ফারুকের নেতৃত্বে জাতীয় ইসলামী মহাজোটে ৩৫ রাজনৈতিক দল রয়েছে। এর ফলে নামসর্বস্বদের নিয়ে এরশাদের জোটে রাজনৈতিক দলের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৯। জোটের আত্মপ্রকাশে এমপি বাবলার শোডাউন ॥ এদিকে জোটের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকায় ব্যাপক শোডাউন করেছে ঢাকা-৪ আসনের এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। সকাল এগারোটার দিকে আবু হোসেন বাবলার নির্বাচনী এলাকা শ্যামপুর কদমতলী থেকে জাপার কেন্দ্রীয় নেতা সুজন দে ও শেখ মাসুক রহমানের নেতৃত্বে কয়েক হাজার নেতাকর্মীর বিশাল মিছিল প্রেসক্লাব এলাকায় এসে পৌঁছলে পুরো এলাকায় উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। এর আগে সকাল সাড়ে নয়টার পর থেকে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন থানা থেকে নেতাকর্মীরা খ- খ- মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাব এলাকায় জড়ো হতে থাকে। এছাড়া জাতীয় যুব সংহতি ও জাতীয় ছাত্র সমাজ ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
×