ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মঙ্গলবার থেকে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি শুরু, ক্লাস ১ জুলাই থেকে

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৮ মে ২০১৭

মঙ্গলবার থেকে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি শুরু, ক্লাস ১ জুলাই থেকে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তি নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রবিবার জারি করা এ নীতিমালা অনুসারে দেশের সব সরকারী-বেসরকারী কলেজে আগামী মঙ্গলবার থেকে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম শুরু হবে, ক্লাস শুরু হবে ১ জুলাই। নীতিমালায় বলা হয়েছে, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইনে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হবে। অনলাইনের আবেদনের জন্য (িি.িীরপষধংংধফসরংংরড়হ.মড়া.নফ) এ ওয়েবসাইট ছাড়াও টেলিটক মোবাইল থেকে এসএমএস করেও ভর্তির আবেদন করা যাবে। অনলাইনে ১৫০ টাকা ফি জমা দিয়ে সর্বনিম্ন ৫টি এবং সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে পছন্দক্রমের ভিত্তিতে আবেদন করা যাবে। এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করতে প্রতি কলেজের জন্য ১২০ টাকা ফি দিয়ে সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে আবেদন করা যাবে। একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবে তার মধ্য থেকে শিক্ষার্থীর মেধা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি মাত্র কলেজে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হবে। নীতিমালা অনুসারে ৯ থেকে ২৬ মে অনলাইনে এবং টেলিটক মোবাইল থেকে এসএমএসে আবেদন করা যাবে। যারা ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করছে তাদের এ সময়ের মধ্যে আবেদন করতে হবে। ২৭ থেকে ২৯ মে শিক্ষার্থীদের আবেদন যাচাই-বাছাই ও আপত্তি নিষ্পত্তি করা হবে। পুনঃনিরীক্ষণে যাদের ফল পরিবর্তন হবে তারা ৩০ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত আবেদন করতে পারবে। ৫ জুন প্রথম পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে। প্রথম তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের ৬ থেকে ৮ জুন সিলেকশন নিশ্চিত (যে কলেজের তালিকায় নাম আসবে ওই কলেজেই যে শিক্ষার্থী ভর্তি হবেনÑ তা এসএমএসে নিশ্চিত করা) করতে হবে। মাইগ্রেশনের আবেদন (অপশন প্রদান) এবং নতুন আবেদন করা যাবে ৯ ও ১০ জুন। ১৩ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ে এবং ১৮ জুন তৃতীয় পর্যায়ের ভর্তি ফল প্রকাশ করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীরা ১৪ থেকে ১৫ জুন সিলেকশন নিশ্চিত করবে এবং মাইগ্রেশন আবেদন ও নতুন আবেদন করতে হবে ১৬ ও ১৭ জুন। তৃতীয় পর্যায়ে তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের ১৯ জুন সিলেকশন নিশ্চিত করবে। ২০ থেকে ২২ জুন এবং ২৮ থেকে ২৯ জুন দুই দফায় শিক্ষার্থী ভর্তি শেষে আগামী ১ জুলাই ক্লাস শুরু হবে। এ বছর উত্তীর্ণরা ছাড়াও ২০১৫ ও ২০১৬ সালে মাধ্যমিক পাস করা শিক্ষার্থীরা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, বিভাগীয় সদরের কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কলেজের ৮৯ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। অবশিষ্ট ১১ শতাংশ আসনের মধ্যে ৩ শতাংশ সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় সদরের বাইরের এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য, ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্ত দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী এবং নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পদের সদস্যদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। এছাড়া এবার থেকে প্রবাসীদের সন্তান এবং বিকেএসপির শিক্ষার্থীদের জন্য শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কোটা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিজ্ঞান শাখা থেকে উত্তীর্ণরা যে কোন বিভাগে ভর্তি হতে পারবে। মানবিক শাখা থেকে উত্তীর্ণরা মানবিকের পাশাপাশি ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ভর্তি হতে পারবে। ব্যবসায় শিক্ষায় শিক্ষার্থীরা ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগে ভর্তি হতে পারবে। জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সর্বমোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে। বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে সমান জিপিএ প্রাপ্তদের মেধাক্রম সাধারণ গণিত, উচ্চতর গণিত অথবা জীববিজ্ঞানে প্রাপ্ত জিপিএ বিবেচনায় আনা হবে। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে সমান জিপিএ প্রাপ্তদের ভর্তির ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে ইংরেজী, গণিত ও বাংলায় অর্জিত গ্রেড পয়েন্ট বিবেচনা করা হবে। এক বিভাগের প্রার্থী অন্য বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট গ্রেড পয়েন্ট একই হলে পর্যায়ক্রমে ইংরেজী, গণিত ও বাংলা বিষয়ে অর্জিত পয়েন্ট বিবেচনায় নেয়া হবে। নীতিমালায় ফি নির্ধারণের বিষয়ে বলা হয়েছে, মফস্বল-পৌর (উপজেলা) এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেশনচার্জসহ সর্বসাকুল্যে এক হাজার টাকা, পৌর (জেলা সদর) এলাকায় দুই হাজার টাকা এবং ঢাকা ছাড়া অন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় তিন হাজার টাকার বেশি ফি নেয়া যাবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী ভর্তিতে পাঁচ হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও এমপিওবহির্ভূত শিক্ষকদের বেতনভাতা দেয়ার জন্য ভর্তির সময় মাসিক বেতন, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফি বাবদ বাংলা মাধ্যমে ৯ হাজার টাকা এবং ইংরেজী মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। নীতিমালা অনুযায়ী, উন্নয়ন খাতে কোন প্রতিষ্ঠান তিন হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না। দরিদ্র, মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভর্তিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ফি যতদূর সম্ভব মওকুফ করতে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এছাড়া কোন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অনুমোদিত ফির বেশি নেয়া যাবে না উল্লেখ করে নীতিমালায় বলা হয়েছে, অতিরিক্ত ফি নিলে পাঠদানের অনুমতি, একাডেমিক স্বীকৃতি বাতিলসহ এমপিও বাতিল করে ওই প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×