ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ নেবে ভারত

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ৮ মে ২০১৭

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ নেবে ভারত

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য সবদেশের দল ঘোষণার শেষ সময় ছিল ২৫ এপ্রিল। কিন্তু নতুন আর্থিক মডেল নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল) সঙ্গে ইন্ডিয়ান বোর্ডের (বিসিসিআইর) দ্বন্দ্বের কারণে একমাত্র ভারতই সেটি করেনি। বিষয়টির সুরাহা না হলে আট জাতির ওয়ানডে শ্রেষ্ঠত্বের এ টুর্নামেন্ট বয়কটের হুমকি দিয়েছিল ক্রিকেটের অন্যতম ক্ষমতাধর দেশটি। পরিস্থিতি বেশ ঘোলাটে হয়ে উঠলে বিসিসিআইকে অবিলম্বে দল ঘোষণার নির্দেশ দেয় ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রীম কোর্ট মনোনীত অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনিক কমিটি (সিওএ)। এরপর রবিবার জরুরী সভায় সর্বসম্মতিক্রমে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিল বিসিসিআই। বিরাট কোহলির নেতৃত্বে আজ ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করা হবে। তবে আর্থিক দ্বন্দ্ব ইস্যুতে আইসিসির ওপর ভিন্ন উপায়ে চাপ অব্যাহত রাখবে ভারত। সভা শেষে বিসিসিআই বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বোর্ডের বিশেষ সাধারণ সভায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তটা হয়েছে সবার সম্মতিতেই।’ সেখানে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বোর্ড আনুষ্ঠানিকভাবে অংশগ্রহণের অনুমোদন দিয়েছে। আইনী পথে সেরা সুবিধা পেতে আইসিসির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বিসিসিআই সচিব (অন্তর্বর্তী প্রধান অমিতাভ চৌধুরী)।’ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে আসলে ভারতের দ্বন্দ্ব নেই। মূল সমস্যাটা আইসিসির সঙ্গে। ‘তিন মোড়ল’ ধারণা বিলুপ্ত করে দেয়ার পর শশাঙ্ক মনোহরের অধীনে আইসিসির নতুন আর্থিক (রাজস্ব) বণ্টনের হিসেবে ভারতের পাওয়ার কথা ২৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিসিসিআই কিছুতেই সেটি মেনে না নেয়ায় আইসিসি আরও বাড়তি ১০০ মিলিয়ন দিতে চেয়েছিল, সবমিলিয়ে অঙ্কটা প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের। এটিকেও কম মনে করছে ভারত। দ্বন্দ্বটা সেই কারণেই। বিসিসিআইর বক্তব্য, বিশ্ব ক্রিকেটে আয়ের শতকরা ৭০ শতাংশই তাদের দেশ থেকে আসে। তাই বেশিটা তাদের প্রাপ্য। ‘তিন মোড়লতত্ত্ব’ ও আর্থিক বণ্টন প্রশ্নে আইসিসির সভার ভোটাভুটিতে হেরে যায় ভারত। দুই প্রসঙ্গেই ১-৯এ পরাজয়ের ব্যবধানটা চরম বিব্রতকর। ফলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে আইসিসির সঙ্গে দরকষাকষির অস্ত্র বানাতে চেয়েছিল বিসিসিআইয়ের একাংশ। তবে বিভিন্ন পারিপার্শ্বিকতার বিচারে শেষ পর্যন্ত সে পথ থেকে সরে এলো তারা। আইসিসির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী কোন টুর্নামেন্টে অংশ না নিলে ভারতকে বড় অঙ্কের জরিমানা গুনতে হতো। তারচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বয়কট করলে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আইসিসির সকল ইভেন্টে অংশগ্রহণে ঝুঁকি তৈরি হত। যেখানে রয়েছে বিশ্বকাপ (২০১৯, ২০২৩), চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (২০১৭, ২০২১), নারী বিশ্বকাপ (২০১৭, ২০২১), ২০২০ টি২০ বিশ্বকাপ, অনুর্ধ-১৯ বিশ্বকাপ ও আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপসহ (২০২১) মোট ১৪টি বড় ইভেন্ট। রবিবারের গুরুত্বপূর্ণ এই সভায় বসার আগে বিসিসিআইকে লেখা সিওএ’র চিঠির বক্তব্য ছিল, ‘বোর্ডকর্তাদের এটা মাথায় রাখা উচিত ভারত এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা দল। সুতরাং তাদের আইসিসির কোন টুর্নামেন্ট থেকে সরে দাঁড়ানোর অর্থ হয় না। শীঘ্রই যেন দল ঘোষণা করা হয়। কারণ এর সঙ্গে ভারতের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি জড়িত।’ ইংল্যান্ডের মাটিতে ১ জুন শুরু আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অষ্টম আসর। ভারতই টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন।
×