ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস আজ

প্রকাশিত: ০৪:১২, ৮ মে ২০১৭

বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া  দিবস আজ

নিখিল মানখিন ॥ দুরারোগ্য ব্যাধি থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত তের বছরের শিশু সৌরভ। সাড়ে চার বছর বয়স থেকেই সে এ রোগে ভুগছে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা করানো হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে বোনম্যারো প্রতিস্থাপন করাতে ভারতের মাদ্রাজে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এ জন্য প্রয়োজন প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা। শিশুটির পিতা মোঃ জালাল একজন দরিদ্র কৃষক। তার পক্ষে এ ব্যয়বহুল চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সন্তানের এমন অবস্থায় সম্পূর্ণ অসহায় হয়ে পড়েছেন মোঃ জালাল। হাজার হাজার থ্যালাসেমিয়া রোগী ব্যয়বহুল চিকিৎসা করাতে না পেরে ধীরে ধীরে নিশ্চিত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। বাংলাদেশে সীমিত পরিসরে থ্যালাসেমিয়া রোগের চূড়ান্ত চিকিৎসা ‘বোনম্যারো প্রতিস্থাপন’ চলছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ জনের বোনম্যারো প্রতিস্থাপন করানো হয়েছে। বোনম্যারো প্রতিস্থাপন চালু হলেও তা দেশের রোগীর তুলনায় একেবারে অপ্রতুল। এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে সোমবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সাংবাদিকদের জানান, বোনম্যারো প্রতিস্থাপন অত্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিৎসা। বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হলো। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন ইউনিটে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলে দেশের অনেক রোগী উপকৃত হবে। ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হবে না। বাংলাদেশের চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, নার্স, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনবিষয়ক প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ্যালোজেনিক পদ্ধতিতে বোনম্যারো প্রতিস্থাপন চালু করার পরিকল্পনা করছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। এ পদ্ধতিতে কোন স্বজন কিংবা দাতার (ডোনার) শরীর থেকে সেল নিয়ে প্রতিস্থাপন করা হবে। বর্তমানে অটোলোগাস পদ্ধতিতে নিজেদের শরীর থেকে সেল নিয়ে এ চিকিৎসা করা হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, এ্যালোজেনিক পদ্ধতি চালু হলে আরও অনেক রোগী এ চিকিৎসা সুবিধা গ্রহণ করার সুযোগ পাবেন।
×