ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুরে বৃষ্টিতে ৩১ কোটি টাকার ফসল নষ্ট

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ৮ মে ২০১৭

শেরপুরে বৃষ্টিতে ৩১ কোটি টাকার ফসল নষ্ট

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর, ৭ মে ॥ সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও অতিবর্ষণে শেরপুরে কৃষকের প্রায় চার হাজার ৬০ হেক্টর জমির বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে। সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার পাঁচটি ও নালিতাবাড়ী উপজেলার দুটি ইউনিয়নসহ সদরের কিছু অংশের বোরো ধান ও সবজিক্ষেত পানিতে তলিয়ে ওই ক্ষতি হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ১২ হাজার কৃষক। আর ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১ কোটি টাকা। অন্যদিকে স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ হলেও এখনও শুরু হয়নি পুনর্বাসন সহায়তা কার্যক্রম। জানা যায়, এবার চলতি বোরো মৌসুমে ঝিনাইগাতী উপজেলায় ১৪ হাজার ২শ’ ৯৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক অতিবর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে ঝিনাইগাতীর সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচটি ইউনিয়নের দুই হাজার ৯শ’ ৯০ হেক্টর জমির বোরো ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়। এর মধ্যে সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এক হাজার ৪৫ হেক্টর জমির বোরো ধান, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এক হাজার ৯শ’ ৪৫ হেক্টর জমির বোরো ধান। আর সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হয় দুই হাজার ৫৬ হেক্টর জমির বোরো ধান ও ৫০ হেক্টর জমির সবজি। এতে কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ২৬ কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। উপজেলার দরিকালিনগর গ্রামের কৃষক সিরাজুল ও উকিল মিয়া জানান, তাদের আবাদকৃত সব ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অথচ এ বোরো আবাদেই তাদের সংসার চলত। এখন কিভাবে তাদের সংসার চলবে এ নিয়ে তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। এদিকে পাহাড়ী ঢল ও টানা বর্ষণের কারণে নালিতাবাড়ীর দুটি ইউনিয়নে প্রায় তিন কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কলসপাড়া ইউনিয়নের উত্তর, দক্ষিণ, মধ্য নাকশি ও গাগলাজানি গ্রামের এক হাজার ২শ’ একর ও যোগানিয়া ইউনিয়নের ৫শ’ একর জমির ফসল ডুবে যায়। ওই সব ফসল ৮ থেকে ১০ দিন পানির নিচে ছিল। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ওই দুটি ইউনিয়নে ২শ’ ৫০ একর জমির ফসল সম্পূর্ণ ও ৭শ’ ৫০ একর জমির ফসল আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে দুই কোটি ৯৪ লাখ টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় এক হাজার ৫শ’ কৃষক। এছাড়া একই কারণে শেরপুর সদরে গাজীরখামার, ধলা ও পাকুড়িয়া ইউনিয়নের অংশবিশেষ এলাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ওই সব এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় পাঁচ শতাধিক কৃষক। এ ব্যাপারে জেলা খামারবাড়ির উপ-পরিচালক আশরাফ উদ্দিন জানান, পাহাড়ী ঢল ও অতিবর্ষণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ঝিনাইগাতী এলাকার কৃষকরা। সব মিলিয়ে তালিকা প্রস্তুত হলেও তাদের কী ধরনের সহায়তা দেয়া হবে, সে বিষয়ে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
×